রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য পরিচয় দিয়ে ‘ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সি’ খুলে বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রসেস করে দেওয়া হতো বিদেশে পাঠানোর আশ্বাস। আর এভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতেন রিয়াদ খান (৪৮) নামে এক প্রতারক। অবশেষে যৌথবাহিনীর হাতে আটক হয়েছে সে।
মঙ্গলবার বিকালে অভিযান চালিয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সংলগ্ন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে হানিফ আলী বিশ্বাসের বাড়িতে ভাড়া নেওয়া অফিস থেকে তাকে আটক করা হয়।
অভিযুক্ত প্রতারকের নাম রিয়াদ খান মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের মনিমন্ডল গ্রামের গোলাম নবী হোসেন খানের ছেলে।
জানা গেছে, গোয়ালন্দ পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সংলগ্ন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে ভাড়া বাড়ির একটি রুম নিয়ে রিয়াদ খান ‘এরাবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া অ্যান্ড জব প্রসেসিং’ নামে একটি ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সি খোলেন। মহাসড়কের পাশেই বড় করে প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড টানিয়ে রাখেন তিনি। সাইনবোর্ডে লেখা আছে, ‘বিদেশগামী যাত্রীদের ভিসার ওপর লোন প্রসেসিং করাসহ বিভিন্ন দেশের ভিসা প্রসেসিং করা হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানটি অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য দ্বারা পরিচালিত।
আটক রিয়াদ খান জানান, তিনি প্রতারণার উদ্দেশ্যে তিন মাস আগে ওই বাড়ি ভাড়া নিয়ে ‘ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সি খুলে বসেন। মানুষ যাতে তাকে সহজে বিশ্বাস করে এ জন্য তিনি নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিতেন। তার এই এজেন্সির বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই। এছাড়াও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত নয় বলেও জানান তিনি।
ভুক্তভোগী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাড়াইজুরি গ্রামের মো. শকিল শেখ বলেন, আমি সৌদি আরব যাওয়ার জন্য এই অফিসে আসি। দেলোয়ার হোসেন নামে ওই ব্যক্তি নিজেকে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য পরিচয় দিয়ে আমাকে বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এছাড়া মেডিকেল করার জন্য তিনি আমার কাছ থেকে ১৩ হাজার ২০০ টাকা নেন। এখন দেখছি তিনি প্রতারক। আমার সৌদি আরব যাওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গেল। আমি প্রতারকের শাস্তি চাই।
কয়েকজন ভুক্তভোগীরা বলেন, একজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি রিয়াদ খানের অফিসে কয়েকদিন আগে এসে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে ভিসাসহ মেডিকেল করে দুবাই পাঠানোর কথা বলেন। পরে তিনি ১৫ হাজার টাকা নেন আমার থেকে।
গোয়ালন্দঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াদ খান তার প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। কাউকে বিদেশে পাঠানোর তার কোনো বৈধতা নেই। তিনি বিদেশে পাঠানোর কথা বলে দেড় শতাধিক বিদেশগামীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অন্তত ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন