প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘হাসিনা-রেহানাদের ৪ বাগানবাড়ি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, সারি সারি গাছের ভেতর দিয়ে রাস্তা। গ্রামীণ পরিবেশ। তার ভেতরে বিশাল এক বাগানবাড়ি। বাড়ির ভেতরে রয়েছে ডুপ্লেক্স বা দ্বিতল ভবন, শানবাঁধানো ঘাট ও পুকুর।
বাগানবাড়িটির নাম টিউলিপ’স টেরিটরি। অবস্থান গাজীপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কানাইয়া এলাকায়। টিউলিপ’স টেরিটরি নামকরণ হয়েছে সম্প্রতি পদত্যাগ করা ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের নামে। নথিপত্রে বাড়িটির মালিক শফিক আহমেদ সিদ্দিক, যিনি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার স্বামী ও টিউলিপের বাবা।
টিউলিপ’স টেরিটরিসহ গাজীপুরে চারটি বাগানবাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে, যেগুলোর মালিক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা। বাগানবাড়িগুলোর আশপাশের বাসিন্দারা বলছেন, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, স্বজন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রায়ই বাগানবাড়িগুলোতে বেড়াতে যেতেন। বিশেষ করে শীত মৌসুমে তাঁদের যাতায়াত বেশি ছিল। মাঝেমধ্যে রাতে জাতীয় পতাকা লাগানো গাড়ি প্রবেশ করত। তখন বাংলোর চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকত। কখনো কখনো ভোরেই গাড়িগুলো চলে যেত। কখনো কখনো দু-এক দিন থাকত।
চারটি বাগানবাড়ির মধ্যে একটির মালিক শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং শেখ রেহানা, তাঁর ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী। একটির মালিক শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিক। বাকি দুটির মালিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ও শেখ রেহানার দেবর মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
স্থানীয়ভাবে বাড়িগুলো শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের বলে প্রচলিত ছিল। স্থানীয় ভূমি কার্যালয় থেকে যতটুকু নথিপত্র পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায়, চারটি বাগানবাড়ির দলিলাধীন জমির পরিমাণ ৮১৬ শতক বা ২৫ বিঘা। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, জমির পরিমাণ এর অনেক বেশি। গড় মৌজা মূল্য বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, ২৫ বিঘা জমির দাম প্রায় ৪৯ কোটি টাকা। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বর্তমান বাজার মূল্যে এই জমির দাম ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। সে সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন শেখ রেহানা। এই দুই বোনের পরিবারের সদস্যরা বিদেশে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের কী কী সম্পদ আছে, তা খোঁজ করছে। সংস্থাটি তথ্য চেয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসনকে চিঠিও দিয়েছে।
জানতে চাইলে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ও এলএ) মোহাম্মদ কায়সার খসরু গত রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুদক থেকে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জমির তথ্য চেয়েছে। আমরা এরই মধ্যে জেলার সবগুলো ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে জমির তথ্য চেয়েছি। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে তাঁদের নামে কী পরিমাণ জমি রয়েছে।’
যুগান্তর
‘রপ্তানিতে বাংলাদেশের নতুন দুয়ার খোলার সম্ভাবনা’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
অবশ্য রপ্তানিমুখী শিল্পে উপযুক্ত নীতিসহায়তা না দেওয়া হলে রপ্তানি সম্ভাবনার পুরোটাই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দখলে চলে যেতে পারে। এর কারণ, ভারত সরকার ইতোমধ্যে রাজ্যভেদে বস্ত্র খাতে বড় অঙ্কের কর রেয়াত, নগদ সহায়তাসহ নীতিসহায়তার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।
অর্থনীতিবিদ এবং এ খাতের কয়েকজন ব্যবসায়ী যুগান্তরের কাছে এমন মন্তব্য করেছেন।
শনিবার পৃথক ৩টি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের পণ্যে বর্তমান হারের অতিরিক্ত আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। আজ থেকে এ আদেশ কার্যকর করার কথা রয়েছে। এতদিন বাণিজ্যচুক্তির আওতায় কানাডা ও মেক্সিকো আমেরিকায় বিনা শুল্কে বা কম শুল্কে পণ্য রপ্তানি করতে পারত। এর আগে প্রথম মেয়াদেও ট্রাম্প চীনের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করে।
বাংলাদেশ নিট পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে আছে। ট্রাম্প প্রশাসন কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়ানোয় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচন হয়েছে। এ সুযোগ নিতে এখনই সরকারকে সময়োপযোগী নীতি গ্রহণ করা উচিত। দেরি করলে বিনিয়োগ-ব্যবসা সবই পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যাবে।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর ‘প্রশাসনে সমতা আনতে নতুন সার্ভিসের প্রস্তাব’। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রশাসন ক্যাডারের ক্ষমতা কমাতে ও আন্ত ক্যাডার বৈষম্য দূর করতে ‘সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস (এসইএস)’ নামে নতুন একটি সার্ভিস গঠনের প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। সরকারের উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত কর্মকর্তারা এই সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। এই সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমেই পূরণ করা হবে প্রশাসনের শীর্ষ পদ মন্ত্রিপরিষদসচিব, মুখ্যসচিবসহ সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের পদ।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের জন্য আলাদা সার্ভিস কমিশন গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব সার্ভিস ও অন্য ক্যাডার কর্মকর্তারাও ‘সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে’ অন্তর্ভুক্তির জন্য পরীক্ষা দিতে পারবেন। উত্তীর্ণ কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ এবং অন্যান্য ক্যাডার বা সার্ভিস থেকে ৫০ শতাংশ পদ পুরণ করা হবে। উল্লিখিত বিষয়সহ দেড় শতাধিক সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও কমিশন সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনারকে প্রশাসন ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। সমবায় ও খাদ্য ক্যাডারকে প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে একত্রকরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া টেকনিক্যাল ক্যাডারগুলোর সমন্বয়ে প্রকৌশল সার্ভিস, কৃষি, বাণিজ্যসহ এ জাতীয় ক্যাডারগুলোর সমন্বয়ে কৃষি সার্ভিস এবং রাজস্ব সার্ভিস, তথ্য সার্ভিস নামে ১১ থেকে ১২টি সার্ভিস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
দেশের পুরনো চারটি বিভাগকে চারটি প্রদেশ করার সুপারিশ করার পাশাপাশি বিদ্যমান আটটি প্রশাসনিক বিভাগের বাইরেও কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে নতুন বিভাগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সমকাল
‘সচিবরাও গাড়িবিলাসী’-এটি দৈনিক সমকালের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি গাড়ি ব্যবহারে আমলারাও কম যাচ্ছেন না। মন্ত্রী কিংবা উপদেষ্টার গাড়ি ব্যবহারের নিয়ম-নীতি থাকলেও সচিবের বেলায় আইনই নেই। এ সুযোগে একজন সচিব তিন থেকে চারটি গাড়ি হাতে রাখছেন। ২০১৪ সালে সুদমুক্ত গাড়ির ঋণ সুবিধা চালুর পর সচিবদের সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের (পরিবহন পুল) গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তবু সচিবরা সুদমুক্ত টাকায় কেনা গাড়ি বাসায় রেখে সার্বক্ষণিক সরকারি গাড়ি হাঁকাচ্ছে।
এ কারণে প্রত্যেক সচিবের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি জিপও কেনা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্প ও দপ্তর থেকে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি বরাদ্দ নিয়েছেন সচিবরা। এসব গাড়ি তাদের পরিবারের সদস্য, সচিবদের পিএস ব্যবহার করছেন। এমনকি কয়েকজন সচিবের ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও সার্বক্ষণিক গাড়ি সঙ্গে রাখছেন। ফলে ঋণের টাকায় আমলারা ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার পরও সরকারের যাতায়াত খাতে খরচ দাঁড়িয়েছে কয়েক গুণ।
জানা যায়, সুদমুক্ত গাড়ির ঋণ চালু হওয়ার আগে সচিবরা পরিবহন পুলের একটি গাড়ি ব্যবহার করতেন। তবে খরচ সাশ্রয়ের যুক্তি দেখিয়ে যুগ্ম সচিব থেকে ওপরের পদের কর্মকর্তাদের প্রাধিকারপ্রাপ্ত হিসেবে গাড়ি ঋণ সুবিধা চালু করে আওয়ামী লীগ সরকার। এর পর সচিবের ক্ষেত্রে পুলের গাড়ি ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বৈঠকে মৌখিক নির্দেশনা দেন– ঢাকার বাইরে নির্ধারিত কোনো দাপ্তরিক সফর বা প্রকল্প পরিদর্শনে গেলে অতিরিক্ত একটি জিপ গাড়ি তারা ব্যবহার করতে পারবেন।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ‘নৈরাজ্য সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না, যুদ্ধ পরিস্থিতির মতো সতর্ক থাকতে হবে’। খবরে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই বছরটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করছে এবং মিথ্যা ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে। দেশবাসীকে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি’র মতো সতর্ক থাকার জন্য তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের নির্দেশ দেন। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পর্যালোচনাসভায় তিনি এই নির্দেশ দেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ডিএমপি, কোস্ট গার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য একটি ‘কমান্ড সেন্টার’ গঠনের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। আমাদের অবশ্যই একটি কমান্ড সেন্টার বা কমান্ড সদরদপ্তর স্থাপন করতে হবে, যা পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে। নতুন কমান্ড কাঠামো দক্ষতা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেশের সব বাহিনী ও থানা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে।’
নয়া দিগন্ত
‘শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করছে’-এটি দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করছে এবং মিথ্যা ও অপতথ্য ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দেশবাসীকে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইকে এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।’
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির পর্যালোচনা সভায় প্রধান উপদেষ্টা এই নির্দেশনা দেন।
সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ডিএমপি, কোস্ট গার্ড ও বিশেষ শাখার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মতো আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। এই বছরটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা সৃষ্টির সুযোগ দেয়া যাবে না।’ পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমান্ড সেন্টার গঠনের নির্দেশও দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সর্বোচ্চ আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তারা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে। আমাদের অবশ্যই একটি কমান্ড সেন্টার বা কমান্ড সদর দফতর স্থাপন করতে হবে, যা পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে।’
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘সিনিয়র সচিব পদটি ছিল শেখ হাসিনার উপহার’। খবরে বলা হয়, জনপ্রশাসনের মৌলিক কাঠামোয় প্রকৃতপক্ষে সিনিয়র সচিবের কোনো পদ নেই। এ পদ সৃষ্টি হয় ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি শেখ হাসিনা সরকারের এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে। সে সময়কার জনপ্রশাসন-সংশ্লিষ্ট ও বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, মূলত অনুগত আমলাদের দল তৈরি ও তাদের পুরস্কৃত করতেই এ পদ সৃজন করা হয়েছিল। আর এ পদ সৃজনের ক্ষেত্রে মাস্টারমাইন্ডের ভূমিকাটি পালন করেছিলেন প্রয়াত এইচ টি ইমাম।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অনুগত আমলাদের সুযোগ-সুবিধা অনেক বাড়ানো হয়। সে সময় যেসব আমলা তৎকালীন সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলে ভূমিকা রেখেছিলেন, তাদের নানা পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। আর আমলাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য অনানুষ্ঠানিক দায়িত্ব দেয়া হয় এইচ টি ইমামকে।
সে সময় সিনিয়র সচিব পদ সৃষ্টিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে সরকারকে প্রভাবিত করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা সাবেক সিএসপি কর্মকর্তা এইচ টি ইমাম।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম ‘Administration reforms: Zila parishad’s abolition may be proposed’ অর্থাৎ ‘জনপ্রশাসন সংস্কার: জেলা পরিষদ বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হতে পারে।’
জেলা পরিষদ বিলুপ্ত করে উপজেলা পরিষদকে শক্তিশালী করার সুপারিশের প্রস্তাব দিতে পারে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা পরিষদ তাদের কাজে সহযোগিতা ও সমন্বয় না করায় কমিশন এ সুপারিশ করতে পারে বলে সংস্কার কমিশনের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এর ফলে জেলা পরিষদ যেসব কাজ করে তা জেলা প্রশাসক ও অন্যান্যদের কার্যালয় থেকে করা যাবে।
উপজেলা পরিষদকে ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সংসদ সদস্যরা উপদেষ্টা হিসেবে উপজেলা পরিষদে ‘হস্তক্ষেপ’ করার আইনি বিধান বাতিলের প্রস্তাব করতে পারে সংস্কার কমিশন।
আজকের পত্রিকা
‘এসপিদের নিয়ন্ত্রণ চান ডিসিরা’-এটি আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রমে হাত দিয়েছে। এই সুযোগে জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে চাইছেন মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ৪৮ বছর আগে স্থগিত হওয়া একটি বিধান কার্যকর করে জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) এসিআর লেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের হাতে এবং থানার ওসির এসিআর লেখার কাজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হাতে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আন্তক্যাডার দ্বন্দ্বে প্রশাসনের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যে ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ডিসি সম্মেলন সামনে রেখে বিভাগীয় কমিশনার এবং ডিসিরা এসব প্রস্তাব পাঠিয়েছেন।
মন্ত্রিপরিষদের সচিব প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে দেওয়ার পর ডিসি সম্মেলনে আলোচনার জন্য কার্যপত্র তৈরি করা হবে। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনের ডিসি সম্মেলন আয়োজনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখার যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডিসিদের কাছ থেকে এখনো প্রস্তাব আসছে। নিজেদের নিয়মিত কাজের আলোকে প্রস্তাব করেছেন তাঁরা। এর পাশাপাশি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতির আলোকেও বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘কৌশল পাল্টে সাদা পোশাকে পুলিশ!’। খবরে বলা হয়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলেও সাদা পোশাকে (ইউনিফর্ম ছাড়া) পুলিশের তৎপরতা কমছে না। শীর্ষ পর্যায় থেকে নিষেধ থাকার পরও সাদা পোশাকে চলছে পুলিশের অভিযান। আসামি ধরার নামে পুলিশের কিছু সদস্য রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই অভিযান চালাচ্ছে। বিনা ওয়ারেন্টে (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই) বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হানা দিচ্ছে পুলিশ। সাদা পোশাকে অভিযানে নিষেধ থাকা সত্ত্বেও থানা পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা কৌশলে অহরহ এমন অভিযানে নামছে বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।
দুদিন আগে কুমিল্লায় যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সাদা পোশাকে কয়েকজন থাকার বিষয়ে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। এ ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন তৈরির পর পুলিশও বিষয়টি আমলে নিয়েছে। এ ছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধির বিতর্কিত ও সমালোচিত ৫৪ ধারায় বিনা ওয়ারেন্টে আটকের ঘটনাও ঘটছে। এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছর ধরে পুলিশের বিরুদ্ধে সাদা পোশাকে ও ৫৪ ধারায় আটকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ থাকলেও কোনো প্রতিকার হয়নি।
উচ্চতর আদালতের নির্দেশনা ও কর্র্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করে একইভাবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও সাদা পোশাকে পুলিশি অভিযান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির ক্ষেত্রে ব্যক্তির মর্যাদা এবং সম্মানরক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে হয়রানি, শারীরিক ও মানসিকভাবে নিগ্রহের ঘটনাও আছে।