দেশের শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারসহ সুশীল সংবাদমাধ্যমকে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) ভিপি ও শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ।
এর আগে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিলপরবর্তী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ভিডিওতে রাকসু ভিপিকে বলতে শোনা যায়, আমরা আজকের এ প্রোগ্রাম থেকে ঘোষণা দিচ্ছি- প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ এসব সুশীল সংবাদ পত্রিকাকে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আমরা মনে করি, এই প্রোগ্রামে যদি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার পত্রিকার কোনো সাংবাদিক আসেন, তাহলে এখনই এখান থেকে চলে যাবেন।
রাজশাহীতে ভারতীয় হাইকমিশন উচ্ছেদ করে দিতে হবে উল্লেখ করে মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশে মাত্র দুইটা। তার মধ্যে একটা রাজশাহীতে। আমরা বলব- রাজশাহীতে ভারতীয় হাইকমিশন উচ্ছেদ করে দিতে হবে।
তিনি ঘোষণা দেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শিক্ষক ক্লাশে আসতে পারবে না। হাদি ভাইয়ের রক্ত থেকে লাখো হাদি জন্ম নিবে ইনশাআল্লাহ।
রাকসু ভিপির এ বক্তব্যর সমালোচনা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর লোটাস তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন- তিনি কি রাকসুর ভিপি, নাকি শিবিরের সভাপতি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্তত এইটুকু বুঝুক তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধির অবস্থা! যাই হোক, রাকসু, জাকসুর ভিপিরা যা বক্তব্য দিচ্ছে সেটা কি মবের উসকানি না?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন- রাকসুর শিবির বলবে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার বন্ধ করে দিতে হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির বলবে বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচী সব তছনছ করে দিতে হবে। উল্টোদিকে নায়েবে আমির এসব কর্মকাণ্ডে ব্যথিত হবেন। সাদিক কায়েম বলবে একটি উসকানিদাতা গ্রুপ এগুলি করছে। ডাকসুর প্যাডে বিবৃতি দিয়ে এসবের নিন্দা জানাবে। এই খেলাটা বারবার রিপিট হবে। আর আমরা ধইঞ্চার মতো দেখব।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামেন। বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে জড়ো হয়। পরে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক হয়ে মিছিলটি নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। একপর্যায়ে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভেঙে সেখানে পাবলিক টয়লেট স্থাপনের ঘোষণা দেন। পরে বুলডোজার দিয়ে কার্যালয়টি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।