কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে মারামারির ঘটনায় অভিযুক্ত দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা হালিমা পারভীন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নির্দেশনায় উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের চান্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান জুনায়েদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
একই বিদ্যালয়ের অপর সহকারী শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে দুই শিক্ষকের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় ৩৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। যদিও ঘটনাটি ঘটেছিল এর কয়েক দিন আগে, অর্থাৎ ৮ ডিসেম্বর দুপুরে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, এক শিক্ষক অপর শিক্ষককে চেয়ারের সঙ্গে চেপে ধরে রেখেছেন।
এ সময় আতঙ্কিত কণ্ঠে এক নারীকে বলতে শোনা যায়, “আল্লাহ রহম করো, আল্লাহ রহম করো। জুনায়েদ সাহেব, আপনারা এডি কাজ করতাছেন-মারামারি করণ লাগে?”
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান জুনায়েদ ও সহকারী শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ চলছিল।
এর ধারাবাহিকতায় ৮ ডিসেম্বর দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়, যা একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
অভিযোগ রয়েছে, উত্তেজিত হয়ে মাহমুদুল হাসান জুনায়েদ অফিসে থাকা একটি ধারালো বঁটি (দা) হাতে নিয়ে মো. মহিউদ্দিনের ওপর হামলার চেষ্টা করেন।
তখন উপস্থিত সহকারী শিক্ষিকা ঝর্না আক্তার দ্রুত এগিয়ে এসে তার হাত থেকে বঁটিটি কেড়ে নেন। এরপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এসে দুজনের মধ্যে মারামারি শুরু হয়।
একপর্যায়ে জুনায়েদ তার সহকর্মী মহিউদ্দিনকে ধাক্কা দিয়ে চেয়ারে ফেলে গলা চেপে ধরেন। পরে অন্যান্য শিক্ষক ও স্থানীয় লোকজন এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বিষয়টি তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা হালিমা পারভীন বলেন, “দুই শিক্ষকের মারামারির ঘটনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত শেষে একজনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং অন্যজনকে শোকজ নোটিশ দিয়েছেন।”