Image description

সব ঠিকঠাক থাকলে ঢাকায় ভারতের পরবর্তী হাই কমিশনার বা রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসের ১৯৯৪ ব্যাচের কূটনীতিবিদ শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথন। ঢাকাতে বর্তমান রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মার তিন বছরের মেয়াদ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রে বাংলা ট্রিবিউন প্রতিনিধি আভাস পেয়েছেন, মিজ রঙ্গনাথন তারই স্থলাভিষিক্ত হবেন।

বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। অতি গুরুত্বপূর্ণ ওই নির্বাচনের বাকি আছে আর বড়জোর আড়াই মাসের মতো। ভারত চাইছে নির্বাচনের আগেই শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথন ঢাকায় রাষ্ট্রদূতের পদে যোগ দিন। কিন্তু সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ও বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে সেটা সম্ভব হবে কি না, এখনই বলা যাচ্ছে না।

অভিজ্ঞ কূটনীতিবিদ মিজ রঙ্গনাথন এই মুহূর্তে দিল্লিতে (প্রধান কার্যালয়) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদে আছেন।

মাত্র অল্প কিছুদিন আগেও ওয়াশিংটন ডিসির ভারতীয় দূতাবাসে ডেপুটি চিফ অব মিশন (উপপ্রধান) পদে দায়িত্ব পালন করেছেন রঙ্গনাথন। এর আগে তিনি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘ চার বছর (২০১৮ – ২০২২) ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের পদে ছিলেন, তার আগে দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘বিএম ডিভিশনে’র (বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বিভাগ) দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘদিন।

বাংলা ট্রিবিউন কিছুদিন আগে জানিয়েছিল, বাংলাদেশে ভারতের যতগুলো কূটনৈতিক মিশন আছে – ঢাকায় হাই কমিশন এবং সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে সহকারী হাই কমিশন – তার সবগুলোতেই প্রধানের পদে বদল আনছে ভারত।

বস্তুত এই সবগুলো নিয়োগই হয়েছিল বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে। এখন পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সেই সবগুলো পদেই বদল আনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই কূটনীতিবিদদের কারও পোস্টিংয়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে, কারও বা অবসরে যাওয়ারও সময় হয়ে গেছে।

এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবেই প্রথমে নতুন চারজন সহকারী হাই কমিশনার দায়িত্ব নিতে চলেছেন, এরপরই নতুন ভারতীয় হাই কমিশনার দায়িত্ব নেবেন। তবে সম্প্রতি এই কূটনীতিবিদদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্য দেশের অনুমোদন আসার বিষয়টি বেশ সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়েছে। ফলে শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথন শেষ পর্যন্ত কবে ঢাকায় দায়িত্ব গ্রহণ করবেন, তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।

শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসের স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। দিল্লিতে কর্মরত অবস্থায় তিনি শুধু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েই নয়, কাজ করেছেন সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হয়েও।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার ডিভিশনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাড়াও তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্ক বিভাগ ও পলিসি প্ল্যানিং বিভাগেরও দায়িত্ব সামলেছেন। তামিল তার মাতৃভাষা, এবং ইংরেজি-হিন্দি ছাড়াও তিনি অল্পস্বল্প তুর্কি ভাষাও জানেন।

মিজ রঙ্গনাথন এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। ঘটনাচক্রে, ঢাকাতে হাই কমিশনার পদে তার একজন পূর্বসূরি, বিক্রম দোরাইস্বামীও ঢাকাতে আসার আগে দক্ষিণ কোরিয়াতে ঠিক একই ভূমিকায় ছিলেন। এমন কী, শ্রীপ্রিয়ার মতো দোরাইস্বামীও এর আগে দিল্লিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার ডিভিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।