Image description

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ২৭ নভেম্বর। সোমবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ দিন ধার্য করেন।

এর আগে আবু সাঈদ হত্যায় মামলায় ২০ নম্বর সাক্ষ্য দেন সাজু রায় নামে এক শিক্ষার্থী। সাজুর বাড়ি রংপুর শহরে। ২৬ বছরের এই তরুণ ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে এখন চাকরিপ্রত্যাশী।

রোববার (২৩ নভেম্বর) সাজু রায় জবানবন্দিতে বলেন, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে রংপুর প্রেস ক্লাবে যান তিনি। ওই সময় জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে মিছিল নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে আসেন। তখন শামিল হয়ে মিছিলের সঙ্গে নিজেও রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রওনা হন।

সাজু বলেন, ঐদিন দুপুর দেড়টায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে পৌঁছাই। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ। আমি মিছিলের পেছনে ছিলাম। ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের কথাবার্তা হচ্ছিল। হঠাৎ আমাদের ওপর আক্রমণ চালান তারা। আমরা ছোটাছুটি শুরু করি। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ লাঠিচার্জ করতে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। আমাদের মধ্যে একজন ছাত্র আহত হন। তার নাম মুন। আমি তখন পার্কের মোড়ে ছিলাম। কিছু শিক্ষার্থী সরদারপাড়ার দিকে ছিলেন। শিক্ষার্থী আহত হওয়ায় আমরা সবাই বিক্ষুব্ধ হই। আমরা আবার সবাই গেটে অবস্থান নিই। তখন বিশ্ববিদ্যালয় গেটের ভেতর থেকে পুলিশ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমাদের দিকে তেড়ে আসেন।

এ তরুণ বলেন, ওই সময় পুলিশ আমাদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলি ছুড়তে থাকলে ফের পালানো শুরু করি। কিন্তু একটি ছেলে, (যার নাম আবু সাঈদ) ওই স্থানে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকেন। তখন গুলি করে পুলিশ। আবু সাঈদ নিজের হাতে থাকা লাঠি নাড়িয়ে রক্ষার চেষ্টা করেন। পরে রোড ডিভাইডার পার হয়ে পড়ে যান তিনি। সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে তাকে তুলে পার্কের মোড়ের দিকে নিয়ে আসেন। আমিও তাদের সঙ্গে যুক্ত হই। আমরা তিনজন মিলে তাকে একটি রিকশায় তুলি। তার শরীর রক্তাক্ত ছিল। তার মাথা আমার বুকের ডান দিকে ছিল। আমরা তাকে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই।