Image description
 
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় কাজী নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে জাল সনদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে নাজমুল কবীর নামে এক কম্পিউটার শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, এখন তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। আগের প্রধান শিক্ষক (বর্তমানে বহিষ্কৃত) তার জাল সনদে যাচাইয়ে জেলা প্রশাসকসহ শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন। অভিযোগের কারণে নানা কৌশলে প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে তিনি নিজেই বাগিয়ে নেন যান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ । এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে নাজমুল কবিরের বাবা আব্দুল কাদির বিদ্যালয়ে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ছিলেন। সেই সময় তার বাবার প্রভাব খাটিয়ে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে স্কুলে যোগ দেন। যোগদানের সময় নাজমুল কবির জাতীয় বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি (নট্রামস) নামে এক প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সনদ জমা দেন। পরে স্কুলের অডিট চলাকালীন একই তারিখের মিনা বহুভাষী সাঁটলিপি কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট নামের প্রতিষ্ঠানের অন্য একটি সনদ জমা দেন। ২০১৭ সাল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে নাজমুল কবিরের কম্পিউটার সনদ জাল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। 

Kiswan

পরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার সনদ হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু নানা টালবাহানায় সে ওই সময় সনদ আর বিদ্যালয়ে হাজির করেনি। সনদ হাজির না করায় ও বিদ্যালয় পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে গত বছরের ১৭ এপ্রিলে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। এ ঘটনায় গত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উল্লেখ করে নতুন ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করেন। আর এ সুযোগে কম্পিউটার শিক্ষক নাজমুল কবির নিজেই বনে যান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। জাল সনদের বিষয়টি অস্বীকার করে নাজমুল কবির বলেন, ‘আমার সনদ জাল না। দুইবার মিনিস্ট্রি অডিট হয়েছে, জাল হলে তো তখনই ব্যবস্থা নিত।’ কম্পিউটার সনদ বগুড়ার মিনা কম্পিউটার নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়েছেন বলেও জানান।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (বহিষ্কৃত) রিয়াজ উদ্দিন জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিটে তার সনদ জাল বলে আখ্যায়িত করলে। পরবর্তীকালে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সব মূল সনদ প্রতিষ্ঠানে জমা দেওয়ার জন্য তাগিদ দিলেও দেননি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে একাধিকবার অবহিত করেছি। জানেত চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম আযম বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের যে শিক্ষকের সনদ জালের অভিযোগ উঠেছে তাকে অফিসে ডেকে আনা হবে। সত্যতা প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।