বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের আগে ঢাকা সফর শুরু করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) রিভিউ মিশন।
এক্ষেত্রে গত জুনে হস্তান্তর করা ঋণের দুই কিস্তির টাকা ঠিকঠাক ব্যবহার হয়েছে কিনা, তা মূল্যায়ন করে দেখবেন মিশনের সদস্যরা।
এবারের মিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন আইএমএফের বাংলাদেশ মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জি, যিনি আগের বারও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
বুধবার থেকে শুরু হওয়া রিভিউ মিশন কাজ করবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
সচিবালয়ে অর্থসচিবের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিনিধি দলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
এদিন দুপুর ১২টায় প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকটি বিভাগের সঙ্গে বৈঠক শুরু করে।
সফরসূচি অনুযায়ী, অর্থ বিভাগের সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জ্বালানি মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করে গত জুনে। ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের নির্ধারিত সময় আগামী ডিসেম্বর।
কিন্তু সামনে জাতীয় নির্বাচন থাকায় এই সময়ের মধ্যে ষষ্ঠ কিস্তি ছাড় নাও হতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ঋণের শর্ত হিসেবে যেসব সংস্কার কর্মসূচি রয়েছে, সেগুলো নির্বাচিত সরকারের সময়ও অব্যাহত থাকবে কিনা, তা নিশ্চিত হতে চাইছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নিবার্হী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘‘তারা (আইএমএফ) কেবল এসেছে। আলোচনা চলবে; তারা আমাদের অগ্রগতি জানবে; দেখবে। শেষ পর্যায়ে বোঝা যাবে, তারা কী বলে। আমরা আশাবাদী, পরের কিস্তি পেতেও সমস্যা হবে না।’’
ডিসেম্বরের বদলে আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে পরের কিস্তি ছাড় হতে পারে বলে সংবাদমাধ্যমে আভাস দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরে ষষ্ঠ কিস্তি ছাড় না হলে পরে সপ্তমসহ দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় হওয়ার আলোচনাও আছে।
এর আগে বিনিময় হার ইস্যুতে সমঝোতায় দেরি হওয়ায় চতুর্থ কিস্তির অর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে পায় বাংলাদেশ।
আর্থিক সংকট সামাল দিতে ২০২২ সাল থেকে কয়েক দফা আলোচনা শেষে পরের বছরের প্রথম দিকে আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি করে বাংলাদেশ।
সবশেষ গত জুনে অর্থ ছাড়ের সময়ে ঋণের আকার বাড়িয়ে করা হয় ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। সে বছর ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে পাওয়া যায় দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার।
তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার আসে ২০২৪ সালের জুনে। আর চলতি বছরের জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে মিলিয়ে ১৩৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার হাতে পায় বাংলাদেশ।