কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই এখন আর শুধু অলাভজনক সংস্থা নয়—এবার তারা আনুষ্ঠানিকভাবে লাভজনক পাবলিক বেনিফিট করপোরেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) মাইক্রোসফটের সঙ্গে নতুন অংশীদারিত্ব চুক্তির মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এই রূপান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ওপেনএআইয়ের বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ বিলিয়ন ডলার। এই চুক্তির অংশ হিসেবে মাইক্রোসফট এখন কোম্পানিটির ২৭ শতাংশ শেয়ারের মালিক, যার আনুমানিক মূল্য ১৩৫ বিলিয়ন ডলার।
এতে করে ওপেনএআই এখন নিজের উদ্ভাবন ও গবেষণার জন্য সরাসরি বিনিয়োগ ও মূলধন সংগ্রহের সুযোগ পাচ্ছে—যা এতদিন তাদের জন্য অসম্ভব ছিল।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অলাভজনক সংস্থা হিসেবে কাজ করায় ওপেনএআই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করতে পারত না। ২০১৯ সাল থেকে মাইক্রোসফটের সঙ্গে একচেটিয়া অংশীদারিত্বের কারণে নিজস্ব মূলধন সংগ্রহেও বাধা তৈরি হয়েছিল।
এই নতুন চুক্তির ফলে সেই সীমাবদ্ধতা দূর হবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। বিনিয়োগ সংস্থা ডিএ ডেভিডসন-এর প্রযুক্তি গবেষণাপ্রধান গিল লুরিয়া বলেন, ‘এই চুক্তি ওপেনএআইয়ের অলাভজনক কাঠামো থেকে উদ্ভূত জটিলতার সমাধান করবে। মাইক্রোসফটের সঙ্গে প্রযুক্তিগত মালিকানা ও অধিকার নিয়ে যে অস্পষ্টতা ছিল, সেটাও দূর হবে।’
চুক্তি অনুযায়ী, ওপেনএআই তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় মাইক্রোসফটের অ্যাজউর ক্লাউড সেবা ব্যবহার করবে, যার মূল্য প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া ওপেনএআই যদি ভবিষ্যতে আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স (এজিআই) পর্যায়ে পৌঁছায়, তবুও মাইক্রোসফট তাদের কিছু প্রযুক্তিগত অধিকার ও পণ্য নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে।
ওপেনএআইয়ের অলাভজনক অংশ এখন নতুন নামে ওপেন এআই ফাউন্ডেশন নামে কাজ করবে। প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড চেয়ারম্যান ব্রেট টেলর এক ব্লগ বার্তায় বলেন, ‘আমরা আমাদের করপোরেট কাঠামো সরল করেছি ও মূলধন পুনর্গঠন সম্পন্ন করেছি। এখন এজিআই আসার আগেই বড় আকারে বিনিয়োগ সংগ্রহের সরাসরি পথ তৈরি হয়েছে।’
বর্তমানে ওপেনএআইয়ের প্রধান পণ্য চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারী ৭০ কোটিরও বেশি। বিশ্বজুড়ে এআই প্রযুক্তির বিকাশে ওপেনএআই যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, এই সংখ্যাই তার প্রমাণ।
সূত্র: ওপেনএআই ব্লগ, রয়টার্স