বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির যে শক্তি, তার বড় অংশই চীনের পণ্য, কাঁচামাল আর যন্ত্রপাতির অবদান। প্রাথমিক ও মধ্যবর্তী কাঁচামাল তৈরি হয় চীনে। আর তা শিল্পের চাকা ঘোরায় বাংলাদেশে। একদিকে দেশটির কাঁচামালে উৎপাদিত পণ্য স্থানীয় বাজার ও সরবরাহ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ করেছে; অন্যদিকে কাঁচামাল থেকে উৎপাদিত রপ্তানিমুখী পণ্য রপ্তানিতে সহায়তা করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ‘পাওয়ার হাউস’ হিসেবে কাজ করছে।
সহজলভ্য, সুলভে ‘সোর্সিং’ করতে পারার কারণে বলা যায় বাংলাদেশের অর্থনীতি, ব্যবসা ও বিনিয়োগে রীতিমতো রূপান্তর ঘটিয়ে চলেছে। সুই-সুতা থেকে এখন যুদ্ধবিমান পর্যন্ত আসছে চীন থেকে। সাবমেরিন থেকে মোবাইল ফোনের স্ক্রিন প্রোটেক্টর—কী নেই দেশটির পণ্যতালিকায়! এত বিশাল পণ্যসম্ভারে ভর করে বাংলাদেশের একজন স্বল্প পুঁজির সম্ভাবনাময় তরুণও উদ্যোক্তা হতে পারছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সর্বশেষ তথ্য বলছে, আগের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে চীন থেকে পণ্যের আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৪ লাখ ৩২ হাজার টন।
আর এর পেছনে খরচ বেড়েছে ৪৫ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কাঁচামাল আমদানির দিক দিয়ে চীনের অবস্থান শীর্ষে। তাদের কাছ থেকে আনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাঁচামাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুবই লাভজনক। পণ্যের দাম প্রতিযোগিতাপূর্ণ।
পণ্যেরও বৈচিত্র্য রয়েছে। ক্রেতার যেকোনো চাহিদা তারা পূরণ করতে পারে। আর মার্কেটিং কৌশলও অ্যাগ্রেসিভ। এতে করে তারা বায়ারের জন্য ক্রেডিটসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। ওই সব কারণেই চীন থেকে আমাদের বেশি পণ্য আসে।
একসময় ফ্রিজ বলতেই ছিল কোটিপতির ঘরের অলংকার। কারণ বিদেশ থেকে আমদানি করায় অনেক দামে তা কিনতে হতো। ফলে সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে ছিল ফ্রিজ। তবে এখন সময় পাল্টেছে। ঘরে ঘরে টিভি, এসি, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ ওভেনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের সমাহার। তা সম্ভব হয়েছে দেশীয় উৎপাদনের কারণে। চীন থেকে বিভিন্ন কাঁচামাল ও প্রযুক্তি পেয়ে এখন নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে রপ্তানির পথে বাংলাদেশ।
মিনিস্টার ফ্রিজের হেড অব প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল হাসান স্বপন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা ফ্রিজের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মূলত আগে চীন থেকেই আমদানি করি। মোট আমদানির ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই আসে চীন থেকে। ফ্রিজের কেমিক্যাল জার্মানি থেকে নিয়ে আসতাম। কিন্তু এখন এই খাতেও চীন এগিয়ে যাওয়ায় সেখান থেকেই কেমিক্যাল আমদানি হচ্ছে। বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এখন দক্ষিণ কোরিয়া ও থাইল্যান্ডও তাদের কাঁচামালের দাম কমিয়েছে। এটিও চীনা পণ্যের সহজলভ্যতার ফল।’
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশ থেকে ৬৭ কোটি ডলারের চামড়ার জুতা রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি তার আগের বছরের তুলনায় সাড়ে ২৩ শতাংশ বেশি। এই জুতা রপ্তানি করতে তুলনামূলক কম দামে ভালো কাঁচামাল পাওয়ায় চীনের ওপর অনেকটাই নির্ভর করতে হয়।
চামড়ার জুতা রপ্তানি করে জিহান ফুটওয়্যার প্রাইভেট লিমিটেড। জুতার মূল উপকরণ দেশেই পাওয়া যায়। তবে রপ্তানি করতে কিছু কাঁচামালও আমদানি করতে হয়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাদা আহমেদ রনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের দেশের চামড়ার ওপরই মূলত এই শিল্প দাঁড়িয়ে আছে। তবে এর বাইরেও কিছু কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। বিদেশি ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সে যে মানের পণ্য চায় সেই হিসাবে আমদানি করতে হয়। মূলত চীন ও তাইওয়ান (যা মূলত চীনেরই ভূখণ্ড) থেকেই কাঁচামাল আসে।’
এনবিআরের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় আরো জানা যায়, সর্বশেষ অর্থবছরে কয়েক হাজার পণ্য আমদানি হয়েছে। উল্লেখযোগ্য পণ্যের মধ্যে সুতা আসে ৯ হাজার ৩০৭ কোটি টাকার, কৃত্রিম সুতা ছয় হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা, রঙিন জিন্সের কাপড় ছয় হাজার ১৯০ কোটি টাকা, সিনথেটিক ফাইবার পাঁচ হাজার ১৩০ কোটি টাকা, পলিস্টার সুতা চার হাজার ৪০৭ কোটি টাকা, ইলেকট্রনিক সার্কিট তিন হাজার ৭৯১ কোটি টাকা, পলিপ্রোপাইলিন তিন হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা, ওভেন ফ্যাব্রিকস তিন হাজার ১৪২ কোটি টাকা, রসুন দুই হাজার ৪০২ কোটি টাকার। এ ছাড়া খনিজ জ্বালানি দুই হাজার ২২৭ কোটি টাকা, লোহা ও স্টিল উৎপাদনের উপকরণ দুই হাজার ৮০ কোটি টাকা, প্রাথমিক পলিপ্রোপাইলিন দুই হাজার ৬০ কোটি টাকা, ডিসপ্লে মডিউলস ও টাচ সেনসিটিভ স্ক্রিন এক হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা, পেপার ও পেপারবোর্ড এক হাজার ৭৬৮ কোটি টাকার আমদানি হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে চীনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জে-১০সি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার আলোচনা করেছিল সরকার। পরে ২২০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭ হাজার ৬০ কোটি টাকা) ব্যয়ে চীনের তৈরি ২০টি জে-১০সি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই ব্যয়ের মধ্যে এয়ারক্রাফট কেনা, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। এই বিমান দেশের বিমানবাহিনীর বহরে যুক্ত হলে দেশের আকাশে প্রবেশ করা শত্রুর জন্য বিপজ্জনক হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি দেশের সামরিক খাতেও সহায়তা করছে চীন।
স্থানীয় উৎপাদন ও রপ্তানির ভিত্তি : ‘মেড ইন বাংলাদেশ’-এর নেপথ্যে ‘মেড ইন চায়না’
চীনের পণ্য কিভাবে স্থানীয় উৎপাদন বাড়াচ্ছে, তার একটি সহজ সমীকরণ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যখন বাংলাদেশের একজন উদ্যোক্তা সুলভ মূল্যে চীনের সেরা মানের যন্ত্রপাতি বা টেক্সটাইল কাঁচামাল আমদানি করতে পারেন, তখন তাঁর উৎপাদন খরচ কমে আসে। এই কম উৎপাদন খরচ দেশীয় পণ্যের দাম বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে। চীন বাংলাদেশের পোশাক খাতের জন্য কাঁচামাল ও মধ্যবর্তী পণ্যের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী। এর মধ্যে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সুতা, ফ্যাব্রিকস। ওভেন কাপড়ের প্রায় ৮০ শতাংশ এবং নিট কাপড়ের ১৫-২০ শতাংশ, রং, ডাইস, কেমিক্যাল এবং বিভিন্ন অ্যাকসেসরিজ।
শুধু পোশাকশিল্প নয়, প্লাস্টিক, চামড়া, ইলেকট্রনিকস এবং হালকা প্রকৌশল খাতেও চীনের প্রযুক্তিনির্ভর কাঁচামাল ব্যবহার করে স্থানীয় উদ্যোক্তারা সফলভাবে দেশীয় পণ্য উৎপাদন করছেন। এটি শিল্পের বৈচিত্র্য বাড়াতে সাহায্য করছে।
চীন থেকে আমদানি করা কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির সাহায্যে উৎপাদিত পণ্যই মূলত বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের মূল ভিত্তি। অর্থাৎ চীনের কাঁচামালে তৈরি পণ্যই ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ নিয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় যাচ্ছে। তথ্য-উপাত্ত সুস্পষ্টভাবে দেখায়, যখন চীন থেকে আমদানির পরিমাণ বাড়ে, তার কিছুদিন পরই দেশের মোট রপ্তানির পরিমাণও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানির বিপুল বৃদ্ধি (এক কোটি ৪৮ লাখ ১৯ হাজার টনেরও বেশি) ইঙ্গিত দেয় যে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত আরো বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটাতে প্রস্তুত। স্থানীয় উৎপাদন বাড়ার অর্থ হলো কর্মসংস্থান বৃদ্ধি। চীনা কাঁচামাল ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পগুলো লাখো মানুষের জীবিকার সংস্থান করছে।
রূপান্তরের প্রক্রিয়া : ভ্যালু চেইনে সহায়তা
এই রূপান্তরটি আমদানির ঝুড়ির দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়, যেখানে এখন মূলধনী যন্ত্রপাতি, মধ্যবর্তী পণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের প্রাধান্য পাচ্ছে। চীন থেকে আসা পণ্য তৈরি পোশাক শিল্প, পোশাকের বাইরের শিল্পায়ন, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ খাতকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করছে।
তৈরি পোশাক শিল্পের মেরুদণ্ড : বস্ত্র ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি
তৈরি পোশাক বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন। যদিও বাংলাদেশ তার অভ্যন্তরীণ স্পিনিং ও উইভিং সক্ষমতা বাড়িয়েছে, তবু সিনথেটিক ও মানবসৃষ্ট ফাইবার, উচ্চমানের বিশেষায়িত রং (ডাই) ও রাসায়নিকের জন্য একে চীনের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করতে হয়। এই কাঁচামালগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে আমদানি করার মাধ্যমে স্থানীয় কারখানাগুলো উচ্চমানের এবং ফ্যাশন ফরোয়ার্ড পোশাক তৈরি করতে পারছে, যা তাদের সাধারণ সুতির পণ্য ছাপিয়ে আরো উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদনে সাহায্য করছে।
মূলধনী যন্ত্রপাতি
ছোট থেকে বড় সব ধরনের কারখানায় প্রধানত চীনের নির্মিত কাটিং, সুইং ও ফিনিশিং মেশিনারি ব্যবহৃত হচ্ছে। এই মেশিনগুলো তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী, আধুনিক; এবং এদের খুচরা যন্ত্রাংশের সরবরাহ ব্যবস্থাও সুদৃঢ়। এই সহজলভ্যতা বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতা দ্রুত বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সহায়তা করছে, যা বৈশ্বিক কমপ্লায়েন্স ও উৎপাদন চাহিদা মেটাতে অপরিহার্য।
পোশাকের বাইরে শিল্পায়ন ও রপ্তানি বৈচিত্র্য
পোশাকের বাইরেও বাংলাদেশের রপ্তানি ভিত্তি বৈচিত্র্যময় করার প্রচেষ্টায় চীনা সাপ্লাই চেইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে স্থানীয় ইলেকট্রনিকস জায়ান্টরা রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনার ও স্মার্টফোন তৈরি বা অ্যাসেম্বল করার জন্য প্রায় একচেটিয়াভাবে চীনা উপাদান, মাইক্রোচিপ ও প্লাস্টিক ছাঁচের ওপর নির্ভর করে। এটি দেশে একটি বড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও অ্যাসেম্বলি শিল্প তৈরি করেছে, যা হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছে।
অবকাঠামো ও নির্মাণ
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, মেট্রো রেল এবং অসংখ্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বড় জাতীয় প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রী, ভারী সরঞ্জাম এবং বিশেষ ইস্পাতের প্রাথমিক উৎস হলো চীন। এই আমদানি দেশের ভৌত অবকাঠামোর দ্রুত সম্প্রসারণে সরাসরি সহায়তা করছে।
হালকা প্রকৌশল শিল্প
এই খাতটি প্রায় সব শিল্পকে ‘ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ’ বা পেছনের দিকের সংযোগ সুবিধা প্রদান করে, আর এর ভিত্তিই হলো চীনা যন্ত্রপাতি। হালকা প্রকৌশল শিল্প মূলত বিভিন্ন শিল্প-কারখানার ছোট ছোট যন্ত্রাংশ, মেরামত সরঞ্জাম, ঢালাই পণ্য, ছাঁচ, ডাইস এবং ছোট মেশিন তৈরি করে। এই শিল্পের কাঁচামাল, বিশেষত আধুনিক যন্ত্রপাতি ও স্পেয়ার পার্টসের জন্য বড় অংশেই চীনের ওপর নির্ভরশীল।
জীবন রক্ষাকারী খাত : ফার্মাসিউটিক্যালস
বাংলাদেশ জেনেরিক ফার্মাসিউটিক্যালস উৎপাদনে ৯০ শতাংশের বেশি সক্রিয় ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান এবং মূল রাসায়নিক উপাদান আমদানি করতে হয়। চীন এ ক্ষেত্রে বৃহত্তম সরবরাহকারী। এই সাশ্রয়ী উৎসর কারণে বাংলাদেশ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় বাজারে ওষুধের প্রতিযোগিতামূলক মূল্য বজায় রাখতে সক্ষম হচ্ছে।
এ রকম আরো অসংখ্য খাতের জন্য পণ্য ও কাঁচামাল অবিরত আসছে।
নারায়ণগঞ্জে ট্রানশান হোল্ডিংসের আই স্মার্ট ইউ ফ্যাক্টরি অবস্থিত, যেখানে টেকনো, ইনফিনিক্স ও আইটেল ব্র্যান্ডের মতো চীনা কম্পানি নিজস্ব উৎপাদন করছে। এ ছাড়া কম দামে চীনা ফোন আমদানি করতে পারায় দেশের বাজারে মোবাইল ফোন সহজলভ্য হয়েছে।
মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এডিসন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া শাহীন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মোবাইল উৎপাদনের অনেক কম্পোনেন্ট এখন দেশেই উৎপাদন হচ্ছে, আগে যার বড় অংশই চীন ও তাইওয়ান থেকে আমদানি করতে হতো। আমাদের দেশের অনেক দক্ষ জনবল মোবাইল খাতে যুক্ত হওয়ায় শিক্ষিত বেকার ধীরে ধীরে কমছে। প্রযুক্তি হস্তান্তর একটা বড় ব্যাপার। অনেক দেশ মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেও পারে না। আমাদের এখানে প্রযুক্তি হস্তান্তর হচ্ছে। আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সরকারের নীতি সহায়তা পেলে দেশে বড় অঙ্কের বিদেশি বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা আছে। সেখানে বড় আকারে ম্যানুফ্যাকচারিং তাতে আরএনডি সেন্টার আসার সম্ভাবনা আছে।’
বাংলাদেশের অর্থনীতির এই সফল রূপান্তরের পাণ্ডুলিপিতে চীন এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। চীনের পণ্যের সহজলভ্যতা ও বিপুলতা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ভিত্তি মজবুত করেছে। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এই বাস্তবতা অনস্বীকার্য : বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্থান ‘মেড ইন চায়না’র কাঁচামাল ও প্রযুক্তির ওপর ভর করে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পণ্যের বিশ্বজয়ের গল্প।