Image description
 

রাজধানির বাড্ডায় বাংলা এডিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মৃদুল ইসলাম এবং ক্যামেরাম্যান দেলোয়ারের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। শনিবার সাতারকুলের মগরাদিয়া মাকান হাউজিংয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দখলবাজি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন তারা।

 

ওই এলাকার ভিডিও ফুটেজ এবং তথ্য সংগ্রহের সময় বাংলা এডিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মৃদুল ইসলামের ওপার চড়াও হয়েছে সন্ত্রাসীরা। তাঁকে চরমভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। একপর্যায়ে, চিত্র সাংবাদিক দেলোয়ার হোসনকে বেধড়ক মারপিট, বুকে লাথি এবং কিল ঘুষি দিয়েছে সংবদ্ধ চক্র। এতে মারাত্মাকভাবে আহত হয়েছেন তিনি। দেলোয়ার হৃদরোগের জটিলতায় ভুগছেন। তাই, উপর্যপুরি আঘাতে সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরইমধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাকে নেয়া হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে। হামলার সময় বাংলা এডিশনের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা।

অভিযোগ আছে, মাকান হাউজিংয়ে ‘রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসা’ প্রতিষ্ঠা করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ- আইডিআরএ’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের। মূলত ফ্যাসিস্ট হাসিনার এই দোসর মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সেখানে অন্তত ৪০টি প্লট দখল করে রেখেছেন। এনিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে রয়েছে চরম ক্ষোভ। এনিয়ে কেউ কিছু বললে, তাদেরকে প্রশাসনের ভয় এবং পলিত সন্ত্রাসী দিয়ে তটস্থ করে রেখেছেন মোশাররফ। এবিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান নামে টিম বাংলা এডিশন।

 

এদিন অনুসন্ধানের অংশ হিসাবে বাংলা এডিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মৃদুলকে সেখানকার ভুক্তভোগীরা মোশাররফের জবরদখল এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বর্ণনা দিচ্ছিলো। ঠিক ওই সময় মাদ্রাসার আড়ালে ছাত্র পরিচয়ে তাঁর পালিত সন্ত্রাসীরা উপর্যপুরি হামলা চালায় আমাদের টিমের ওপার। মূলত মোশাররফের দুই ছোট ভাইয়ের ইন্ধনে এই হামলা চালিয়েছে তারা। এরমধ্যে তাঁর এক ছোট ভাই ওই প্রকল্পের মধ্যেই গেড়েছেন আস্তানা। তিনি সেখানকার সন্ত্রাসীদের লালপালন করে থাকেন বলে জানা গেছে। হামলার সময় সাথে ছিলো মোশাররফের গাড়ি চালকও। তিনি সরাসরি আঘাত করেন আমাদের বিশেষ প্রতিনিধি মৃদুল এবং ক্যামেরাম্যান দেলোয়ারকে। বিষয়টি এরইমধ্যে বাড্ডা থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এর আগে, হাসিনার আমলে আইডিআরএ’র পদের দাপটচ দেখিয়ে মাত্র ছয় মাসে শত কোটি টাকার দূর্নীতি করেছেন এই মোশাররফ।

মোশাররফ হোসেনের যত সম্পদ:

 

রাজধানীর কাফরুল, শেওড়াপাড়া, ধানমন্ডি এলাকায় বিলাসবহুল ৩ টি বাড়ির সন্ধান মিলেছে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে। রাজধানীর সাতারকুলে মাকাম হাউজিং নামে বিশাল এলাকা জুড়ে হাউজিং কোম্পানী রয়েছে। এ প্রকল্পে কোয়ান্টাম প্লাস ফাউন্ডেশনের নামে ৮৬ টি প্লটের মালিক মোশাররফ হোসেন। কোয়ন্টাম প্লাস ফ্উান্ডেশনের আওতায় কোয়ান্টাম প্লাস স্কুল এন্ড কলেজ, কোয়ান্টাম দুগ্ধ খামার, কোয়ন্টাম বৃত্তি প্রকল্প, ফ্যামিলি বাজার নামে বিশাল এক মার্কেট রয়েছে।

দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে মোশাররফ হোসেনের নিয়ন্ত্রণাধীন। এ দুটি প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট স্টক থেকে লাইলেন্স নেওয়া। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করেছেন মোশাররফ হোসেন। মাকাম হাউজিং এর ভিতরে কোয়ন্টাম স্কুল এন্ড কলেজ নামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ৫০ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, শুধু মাত্র অনলাইন থেকে নামের ছাড়পত্র নিয়ে রেখেছে কোয়ন্টাম প্লাস ফাউন্ডেশন। যা নিবন্ধনের কোন বৈধতা হিসাবে গৃহীত হয় না। তার হাতে গড়া এই কথিত ফাউন্ডেশনের নামে তৈরি করা বিভিন্ন প্রকল্প দেখা শুনার দায়িত্ব পালন করেন নিজ এলাকার কতিপয় লোকজন। যারা নিজেদেরকে মোশাররফ হোসেনের আত্নীয় বলে দাবি করেন।