রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদক বিক্রিতে জড়িত থাকার অভিযোগে রুস্তম নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর সাত থেকে আট বছর বয়সী মেয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। তখন ভিড়ের মধ্যে কেউ একজন মেয়েটিকে চড় মারেন। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
এতে সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ দাবি করেছে, তাদের কোনো সদস্য শিশুটিকে চড় মারেননি। ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে তারা।
মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে গত বৃহস্পতিবার ভোরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত দুই পক্ষের মারামারির সময় ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে মো. জাহিদ (২০) নামের এক তরুণ নিহত হন। সেদিন সন্ধ্যায়ই সেখানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। তখন রুস্তমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, রুস্তমকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর মেয়ে তাঁকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে। এ সময় ভিড়ের মধ্যে থাকা কেউ একজন শিশুটিকে চড় মারেন। পরে শিশুটিকে বাবার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেন। কয়েকজন লেখেন, একজন মানুষ অপরাধ করলে তাঁকে পুলিশ ধরে নিয়ে যেতেই পারে। কিন্তু বাচ্চা মেয়েটাকে এভাবে মারা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। কেউ কেউ লেখেন, ছোট্ট বাচ্চার সঙ্গে এমন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। কেউ কেউ আবার রুস্তমকে আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) কর্মী দাবি করে তারও সমালোচনা করেন।
অভিযানের সময় সেখানে ছিলেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি (অপারেশনস) মফিজ উদ্দিন। তিনি আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি রুস্তুমের পেছন ছিলাম। পরে তাকে টান দিয়ে সামনে নিয়ে আসছিলাম। ওখানে পুলিশের পাশাপাশি অনেক সাধারণ মানুষও ছিল। টানাহেঁচড়ার মধ্যে কে চড় মেরেছে, সেটি দেখিনি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। পুলিশ চড় মারেনি। ইয়াবাসহ রুস্তম গ্রেপ্তার হওয়ার পর মেয়েটি ওর বাবার কাছে এসে কান্না করতে থাকে। তখন স্থানীয় লোকজনের মধ্যে কেউ একজন শিশুটিকে চড় মারেন। কাজটি ঠিক হয়নি। আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
রুস্তমের বিষয়ে জুয়েল রানা জানান, তিনি (রুস্তম) শুধু মাদকের সঙ্গে জড়িত নন, জাহিদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিও।