কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ একটি উন্মুক্ত, নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সিনেট কমিটি অন ফরেন রিলেশন্সের সামনে তিনি তার বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার ফরেন সার্ভিস ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন নীতি নিয়ে কাজ করার বিশ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা, এর আগে ঢাকা সফরের কারণে আমি এর গুরুত্ব এবং সেখানে মার্কিন স্বার্থের গুরুত্ব ভালোভাবে বুঝতে পারি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থী ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, ‘বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ বাংলাদেশ প্রায়শই তার প্রাপ্য মনোযোগ পায় না, কারণ এটি তার আরও বড় প্রতিবেশীদের ছায়ায় ছাপিয়ে যায়।’ ‘বাংলাদেশও একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রয়েছে। গত বছরের আগস্টে ছাত্রনেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা একটি সরকারকে পতন করেছিল। আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশের জনগণ নতুন সরকার ও নতুন পথ বেছে নিতে নির্বাচন আয়োজন করবে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের অগ্রযাত্রায় সমর্থন করে।’
ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেন, ‘যদি নিশ্চিত হয় (রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ), আমি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং এর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত উত্তরসূরি উভয়ের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে দূতাবাসের ঢাকা টিমকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রত্যাশায় রয়েছি। প্রায়শই নতুন এশিয়ান টাইগারদের মধ্যে একটি হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনা প্রত্যক্ষ করে। প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণের দ্বারপ্রান্তে, বাংলাদেশের জনগণের স্থিতিস্থাপকতা ও এই অধ্যবসায়ের প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধা জানাতে হয়।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দায়িত্ব নিশ্চিত হলে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসার সুযোগ বাড়াতে, বাণিজ্য বাধা ও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে কাজ করব।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনের নাম মনোনয়ন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সেপ্টেম্বরে হোয়াইট হাউস এ তথ্য জানায়। হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেনের নাম মনোনয়ন দিয়ে তা অনুমোদনের জন্য মার্কিন সিনেটে পাঠানো হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে কাউকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মনোনয়ন অনুমোদনের জন্য সিনেটে পাঠানো হয়। সিনেটে শুনানি হয়। শুনানি শেষে সিনেট অনুমোদন দিলে নতুন রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। ট্রাম্পের এই মনোনয়ন সিনেটে অনুমোদন পেলে ঢাকায় নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হবেন ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে আগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার। পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।