Image description
 

উপদেষ্টা পরিষদে শ্রম আইন ও অ্যামেন্ডমেন্ট অর্ডার এবং আরপিও— এ দুইটি আইন চূড়ান্তভাবে অনুমোদন ও আরও তিনটি আইন নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। আরপিওতে যোগ করা হয়েছে পলাতক আসামিদের প্রার্থী না হওয়ার বিধান।

 

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে এক বিফ্রিংয়ে এ কথা জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল । তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমের উপস্থিতির বিধান করা হয়েছে।

 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার তেজগাঁও কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

 

আইন উপদেষ্টা জানান, শ্রম আইন অ্যামেন্ডমেন্ট ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আরপিও আইন চূড়ান্তভাবে পাস হয়েছে। আর দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, জুলাই স্মৃতি জাদুঘর আইন ও সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইনের ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুইটা আইন পাস হয়েছে। আর তিনটা আইনের নীতিগত অনুমোদন হয়েছে। যে আইনগুলো পাস হয়েছে চূড়ান্তভাবে, একটা হচ্ছে— বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ। আরেকটা হচ্ছে আরপিও (জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ), এটা নির্বাচন-সংক্রান্ত। এই দুইটা আইন পাস হয়েছে। আর তিনটা আইন নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর আইন। এই তিনটা আইন নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়েছে। আরেকটু আমাদের আলোচনা করতে হতে পারে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হবে।

ড. আসিফ নজরুল আরও বলেছেন, চূড়ান্তভাবে যে আইনটা অনুমোদন হয়েছে, এটা খুবই যুগান্তকারী একটা আইন। আমি বলব— বাংলাদেশ শ্রম আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, এখানে আমাদের শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য, তাদের কল্যাণের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ৯০টি সেকশনে সংশোধনী আনা হয়েছে। তিনটা শিডিউলে ৯০টি সেকশনে সংশোধনী আনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শ্রম আইন এখন থেকে নন-প্রফিট যে অর্গানাইজেশন আছে সেটার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। শ্রমিকের ডেফিনেশনকে বিস্তৃত করা হয়েছে। গৃহপরিচারক যারা আছেন, নাবিক যারা আছেন, তারাও এখন শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইনের সুরক্ষা পাবেন। ব্ল্যাকলিস্টিং একটা প্রথা ছিল যে, শ্রমিক যাদের বিরুদ্ধে মালিকদের অভিযোগ থাকত, তারা ব্ল্যাকলিস্ট করত। তারা অন্য কোথাও চাকরি পেত না। ব্ল্যাকলিস্টিংকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিধান করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রসূতি যারা থাকবেন, তাদের কল্যাণমূলক সুবিধা অনেক বাড়ানো হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং রেজিস্ট্রেশন অনেক সহজ করা হয়েছে। শ্রমিকদের মধ্যে বৈষম্য (ডিসক্রিমিনেশন), আপনারা জানেন, একই কাজ ছেলে এবং মেয়েরা করলে মেয়েদেরকে কম বেতন দেওয়া হত। সেই বৈষম্যকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, দুর্ঘটনা ক্ষতিপূরণ তহবিল, দুর্ঘটনা যদি হয় কর্মস্থলে, সেটার জন্য একটা ফান্ড গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যারা দুর্ঘটনার শিকার হবেন তাদের পুনর্বাসনের জন্য বা চিকিৎসার জন্য আরও অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।