Image description

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এর চূড়ান্ত ভাষ্য পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। মঙ্গলবার রাতে কমিশনের পক্ষ থেকে দলগুলোর কাছে সনদের সবশেষ ভাষ্য পাঠানো হয়।

দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের ধারাবাহিক সংলাপে ঐকমত্য হওয়া ৮৪টি প্রস্তাবের এ সনদ স্বাক্ষর হবে আগামী শুক্রবার (১৭ অক্টোবর)। এজন্য দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয় কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো পৃথক চিঠিতে।

জুলাই সনদের চূড়ান্ত অঙ্গীকার নামায় যা বলা হয়েছে

রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষরের জন্য যে জুলাই সনদ ২০২৫ তৈরি করা হয়েছে তাতে দলগুলোর জন্য সাতটি অঙ্গীকারনামা প্রস্তুত করা হয়েছে।

এর (১) ধারায় বলা হয়েছে, 'জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রণীত ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে রাজনৈতিক দলগুলো।

দুই ধারায় বলা হয়েছে- আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে জনগণের অভিপ্রায়ের সুস্পষ্ট অভিব্যক্তি হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ গ্রহণ করেছি বিধায় এই সনদ পূর্ণাঙ্গভাবে সংবিধানে তফসিল হিসেবে বা যথোপযুক্ত ভাবে সংযুক্ত করা হবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে অঙ্গীকারনামার তিন ধারাটি। এই ধারায় বলা হয়েছে- জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর বৈধতা ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করবে না দলগুলো। একই সাথে এই সনদ বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।

চতুর্থ দফায়- গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের দীর্ঘ ১৬ বছরের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং বিশেষত ২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক তথা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করার কথা বলা হয়েছে।

 

পঞ্চম দফার ঘোষণায়- 'গণঅভ্যুত্থান-পূর্ব ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান-কালে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে।

 

ষষ্ঠ দফায়- জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এ বাংলাদেশের সামগ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা তথা সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থা সংস্কারের বিষয়ে যেসব সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান এবং বিদ্যমান আইনসমূহের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সহযোজন, পরিমার্জন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধনের অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে।

 

আর শেষ দফায়, জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত যে সকল সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করেই দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।