কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বালু নিয়ে খেলা করায় চার বছরের এক শিশুকে পুকুরে ফেলে দেন মো. শাহজাহান (৫০) নামের এক শিক্ষক। শিশুর প্রতি নির্যাতনের বিষয়টি শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত শাহজাহান বুড়িচং ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলজির শিক্ষক।
জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়িতে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এই ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটির মা ওই ব্যক্তিকে বলছিলেন, ‘আপনার মধ্যে কি মনুষ্যত্ব নেই? আপনি আমার বাচ্চাকে পানিতে ফেলে দিলেন। আপনি একজন সামাজিক মানুষ হয়ে এমন কাজ কীভাবে করতে পারলেন? একটু বালু ফেলে দিয়েছে বলে আপনি এভাবে আমার বাচ্চাকে পুকুরে ফেলে দেবেন? আপনি কি এটা যুক্তিসংগত কাজ করলেন? আমার বাচ্চাকে ফেলে দেওয়ার পর না উঠিয়ে উল্টো বলছেন, বাচ্চাটা মরে যাক।’
তখন ওই ব্যক্তি পাল্টা বলেন, ‘তোমার বাচ্চা নাকি কার বাচ্চা এটা আমি দেখবো না। আমার কাছে বালুর মূল্য বেশি। আজকে ২০ দিন ধরে সবাইকে বলছিলাম, কেউ আমার কথা শোনেনি। তোমার বাচ্চা এখানে এসে বালু ধরছিল। তোমার বাচ্চা আমার এখানে আসবে কেন?’
শিশুর মা শামছুন নাহার তানিয়া বলেন, ‘আমার সন্তানকে মাস্টার শাহাজাহান হত্যার চেষ্টা করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। একজন শিক্ষক হয়ে এই ঘৃণিত কাজ কীভাবে করেন তিনি? সেদিন যদি আমার বড় মেয়ে উপস্থিত না থাকতো তাহলে আমার বাচ্চাকে হত্যা করতেন তিনি।’
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকালে বুড়িচং থানার পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নজির আহম্মেদের দুই মেয়ে মিফতাহুল মাওয়া (৪) এবং গালিবা সুলতানা (১০) বালু নিয়ে খেলা করছিল ওই এলাকার শাহজাহানের বাড়ির সামনে। এ সময় একই এলাকার বাসিন্দা ও তাদের প্রতিবেশী শাহজাহান নজির আহমেদের ছোট মেয়ে মিফতাহুল মাওয়াকে মারধর করে কোলে তুলে পুকুরে ফেলে দেন। এ সময় তার বড় বোন গালিবা চিৎকার করলে শাহজাহান তাকেও মারধর করেন। গালিবা শাহজাহানের পায়ে ধরে ছোট বোনকে পুকুর থেকে তোলার আকুতি করলেও তিনি শোনেননি।
এদিকে ঘটনাটি প্রকাশ্যে এলে গা ঢাকা দেন শাহজাহান। ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, ‘শুক্রবার সকালে শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় একটি শিশু নির্যাতন মামলা করেন। আমরা আসামিদের ধরার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’