
রাজধানীর গুলিস্তানে সুইমিংপুল স্টেডিয়াম মার্কেটের পেছনের অংশে এবি ইলেকট্রনিকস নামে ছোট্ট একটি দোকান। সেখানে ইলেকট্রনিক পণ্য সারাইয়ের কাজ হয়। কাছেই সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা। এই শাখায় খোলা দোকানটির হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৬৫৬ কোটি টাকা।
হাতিরপুলে মোতালিব টাওয়ারের পঞ্চম তলায় আনিরা ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি দোকান আছে। এরাও ইলেকট্রনিকস পণ্য সারাই করে। হাঁটা দূরত্বে সাউথইস্ট ব্যাংকের বাংলামটর শাখা। তাতে আনিরা ইন্টারন্যাশনালের নামে খোলা হিসাবে লেনদেন হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা।
এ দুটি দোকানের অ্যাকাউন্টে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার লেনদেনকে হুন্ডি ব্যবসার অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই লেনদেনের তথ্য পেয়েছে তারা। ওই সময় সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন এম কামাল হোসেন।
কামাল হোসেন ২০২২ সালে এমডির পদ ছেড়েছেন। বিএফআইইউ তদন্তে দেখতে পেয়েছে, এর পর থেকে আনিরা ইন্টারন্যাশনালের ব্যাংক হিসাবে কোনো লেনদেন হয়নি। ফলে হিসাবটি সাময়িক স্থগিত (ডরমেন্ট) হয়ে গেছে। এবি ইলেকট্রনিকসের হিসাবে সামান্য অর্থ লেনদেন হয়েছে। এমডি হওয়ার আগ পর্যন্ত কামাল হোসেন ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন।
বিএফআইইউ তদন্তের আলো ফেলেছে কামাল হোসেনের ওপর। তাতে তাঁর বিপুল সম্পদের তথ্য উঠে এসেছে। আয়কর নথিতে কামাল হোসেন ২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন। কিন্তু তদন্তে দেশে তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের নামে প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। দুই স্ত্রী, তিন সন্তান এবং তাঁর নিজের নামে ৩৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকার সঞ্চয় পাওয়া গেছে।
কামাল হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রীর দুই সন্তান যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তাদের সম্পদের তথ্য এ তদন্তে আসেনি। বিএফআইইউ কামাল হোসেনসহ স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদের তথ্য চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পর্তুগালের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটকে (এফআইইউ) চিঠি দিয়েছে। পাশাপাশি কামাল হোসেনের ব্যাংক হিসাবসহ সব সঞ্চয় জব্দ করা হয়েছে। মামলা করার ক্ষমতা না থাকায় তাঁর বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত ২১ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিবেদন দিয়েছে বিএফআইইউ। দুদক ইতোমধ্যে একটি টিমও গঠন করেছে।
বিভিন্ন ব্যাংকে কামাল হোসেন, তাঁর দুই স্ত্রী ও তিন সন্তানের নামে ৩৬৩টি অ্যাকাউন্টে কয়েক বছরে ৯০২ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। যোগাযোগ করা হলে কামাল হোসেন সমকালের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
হুন্ডি ব্যবসায় সম্পৃক্ততা
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাউথইস্ট ব্যাংকের শীর্ষ পদে থাকা অবস্থায় কামাল হোসেন অবৈধ হুন্ডি কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারে যুক্ত ছিলেন। ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি ও হুন্ডি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে অবৈধভাবে বিপুল সম্পদও অর্জন করেছেন তিনি। ওই অর্থে দেশে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ গড়েছেন। ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে হিসাব খোলার সময় অর্থের উৎস সম্পর্কে অসত্য তথ্য দিয়েছেন। এটি মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধ হিসেবে গণ্য।
কামাল হোসেনের হুন্ডি ব্যবসা সম্পর্কে জানেন, সাউথইস্ট ব্যাংকের এমন এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, বিভিন্ন দেশের হুন্ডি নেটওয়ার্কের সঙ্গে তাঁর (কামাল হোসেন) যোগাযোগ আছে। কেউ হয়তো অবৈধভাবে অন্য কোনো দেশে টাকা পাঠাতে চাচ্ছেন কিংবা অন্য দেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে বাংলাদেশে টাকা আনতে চাচ্ছেন– কামাল হোসেনকে বললে তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। এ জন্য তিনি কমিশন পান। তবে বড় অঙ্কের টাকা ব্যাংক ছাড়া লেনদেন করা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এবি ইলেকট্রনিকস, আনিরা ইন্টারন্যাশনালের মতো ব্যবসায়ীদের হিসাব ব্যবহার করেন তিনি। সাধারণত ব্যবসায়িক হিসাবে বড় লেনদেন হলেও তৎক্ষণাৎ সন্দেহ করা হয় না।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকটির প্রিন্সিপাল শাখার সাবেক এক কর্মকর্তা বিএফআইইউর তদন্ত দলকে জানিয়েছেন, কামাল হোসেন এমডি থাকা অবস্থায় এবি ইলেকট্রনিকসের হিসাব ব্যবহার করে সারাদেশে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।
ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালের মার্চে কামাল হোসেন সাউথইস্ট ব্যাংকের এমডি হওয়ার মাস দুয়েক পর বাংলামটর শাখায় আনিরা ইন্টারন্যাশনালের ঠিকানা ব্যবহার করে হিসাব খোলা হয়। কামাল হোসেনের চাকরি শেষ হয় ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর। এর পর থেকে আনিরা ইন্টারন্যাশনালের অ্যাকাউন্টে আর কোনো লেনদেন হয়নি।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়, আনিরা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. আশরাফ উদ্দীন পরীবাগে যে ভবনে থাকেন, একই ভবনে থাকেন কামাল হোসেন।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে ৩/এ, পরীবাগের বাড়িতে গেলে দায়িত্বরত প্রহরী মুরাদ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘কামাল স্যার আপনাকে সময় দিয়েছেন কিনা?’ না-সূচক জবাব দিলে তিনি বলেন, ‘তাহলে আমি স্যারকে ফোন করতে পারব না।’ আশরাফ উদ্দীনের বিষয়ে জানতে চাইলে মুরাদ বলেন, ‘এখন বাসায় নেই।’
গতকাল টেলিফোনে আনিরা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আশরাফ উদ্দীনকে পাওয়া যায়। কথার শুরুতে তিনি সমকালকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁকে আমি চিনিও না।’ পরীবাগে একই ভবনে তাদের বাসা– এই তথ্য দেওয়ার পর আশরাফ বলেন, ‘এসব তথ্য আপনাকে কে দিয়েছে?’ আনিরার হিসাবে হুন্ডি লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ভাই এসব জানি না। আপনি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিলে আমি চেক করব।’
কামাল হোসেনের সঙ্গে কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে কিনা প্রশ্ন করা হলে আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘এমডির সঙ্গে কি কোনো গ্রাহকের ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকে? তিনি (কামাল হোসেন) হুন্ডি ব্যবসা করতেন। আমি এসব বাজে কাজে কখনও জড়িত ছিলাম না।’ এরপর কামাল হোসেনের বিভিন্ন সম্পদের তথ্য দিয়ে বলেন, ‘পরীবাগে দিগন্ততে তাঁর চারটি অ্যাপার্টমেন্ট, শান্তা গার্ডেনে ১০টি অ্যাপার্টমেন্ট, নোয়াখালী যাওয়ার পথে দেড়শ বিঘা জমি এবং বসুন্ধরা আবাসিকে ৬৪ কাঠা জমি আছে।’ তাঁকে চেনেন না, তাহলে এত তথ্য কীভাবে জানেন– এই প্রশ্নের পর বলেন, ‘আমি এসব শুনেছি।’
গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর সুইমিংপুল স্টেডিয়াম মার্কেটে এবি ইলেকট্রনিকসে গিয়ে দেখা যায়, ছোট দোকানে তিনজন বসে আছেন। তবে মালিক আবু বকর সিদ্দিক নেই। দোকানের ভেতরে পুরোনো ইলেকট্রনিক পণ্য। একজন কর্মী এ প্রতিবেদককে জানান, এটি সার্ভিসিং সেন্টার। মালিকদের সঙ্গে কথা বলতে হলে পুরানা পল্টনে সোবহান ম্যানশনের সপ্তম তলায় এবি ইলেকট্রনিকসের অফিসে যেতে হবে। সোবহান ম্যানশনের ঠিকানায় গিয়ে বড়সড় একটি অফিস পাওয়া গেল। মনির নামে প্রতিষ্ঠানটির রিসেপশনিস্ট জানান, আবু বকর অফিসে আসেননি।
গতকাল টেলিফোনে আবু বকর সিদ্দিককে সুইমিংপুল মার্কেটের ঠিকানায় খোলা অ্যাকাউন্টের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আপনি সাংবাদিক; অ্যাকাউন্টের বিষয়ে কেন জানতে চান?’ এ রকম একটি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে এত টাকা কীভাবে লেনদেন হয়েছে– এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এবি ইলেকট্রনিকসের ব্যবসা আছে না?’ এ রকম একটি দোকান থেকে এত আয় হয়– এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এটা সার্ভিস সেন্টার’ বলেই ফোন কেটে দেন। এর পর কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি আর ধরেননি।
কামাল হোসেনের যত সম্পদ
বিএফআইইউর তদন্তে কামাল হোসেনের প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। পরীবাগ ও ইস্কাটনে ১৫ হাজার ৯৮ বর্গফুটের পাঁচটি ফ্ল্যাট আছে তাঁর। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ‘আই’ এবং ‘জে’ ব্লকে তাঁর ১৯ কাঠার তিনটি প্লট আছে। ‘আই’ ব্লকের দুটি বাণিজ্যিক প্লট।
সাউথইস্ট ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমডি হিসেবে কামাল হোসেন বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা মিলিয়ে মোট ৬ কোটি ২ লাখ ৬১ হাজার টাকা পেয়েছেন। ২০২২ সালে তাঁর ট্যাক্স রিটার্নে নিট সম্পদ উল্লেখ করেন ২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
বিএফআইইউ কামাল হোসেনের নামে ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকার সঞ্চয়ের তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে ট্রেজারি বন্ডে ৫ কোটি ২৮ লাখ, শেয়ারবাজারে ২ কোটি ২ লাখ এবং সঞ্চয়পত্রে ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। তাঁর নামে থাকা ৪৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কয়েক বছরে ১২৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা জমা হয়। বিভিন্ন সময় বেশির ভাগ টাকা উত্তোলন করা হয়। এখন রয়েছে মাত্র ৭৫ লাখ টাকা।
কামাল হোসেনের প্রথম স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের সাতটি ব্যাংক হিসাবে দুই কোটি ৭৩ লাখ টাকা জমা হয়েছে। বিভিন্ন সময় তোলার পর এখন জমা আছে ৭১ লাখ ৩১ হাজার টাকা। শেয়ারবাজারে এক কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং সঞ্চয়পত্রে ৪৫ লাখ টাকার বিনিয়োগ রয়েছে মনোয়ারা বেগমের নামে।
দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিহা আক্তারের ৪১টি অ্যাকাউন্টে ৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকা জমা হয় বিভিন্ন সময়। বেশির ভাগ অর্থ উত্তোলন করার পর এখন জমা আছে ৭০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। শেয়ারবাজারে তাঁর নামে দুই কোটি তিন লাখ, ট্রেজারি বন্ডে তিন কোটি তিন লাখ এবং সঞ্চয়পত্রে ৪৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে।
প্রথম স্ত্রীর তিন সন্তানের মধ্যে সাফায়েত হোসেনের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১৯২টি হিসাব খোলা আছে। এসব হিসাবে কয়েক বছরে ৫৩ কোটি আট লাখ টাকা জমা হয়। বেশির ভাগ অর্থ তুলে নেওয়ার পর এখন আছে এক কোটি ২০ লাখ টাকা। শেয়ারবাজারে পাঁচ কোটি ৪৫ লাখ, ট্রেজারি বন্ডে তিন কোটি ২৮ লাখ এবং সঞ্চয়পত্রে ৪৮ লাখ টাকার বিনিয়োগ রয়েছে তাঁর নামে। সাফায়েত হোসেন সাউথইস্ট ব্যাংকে চাকরি করছেন।
আরেক ছেলে রুবায়েত হোসেনের বয়স ৩০ বছর। তিনি সম্প্রতি একটি মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছেন। তাঁর নামে ২১টি অ্যাকাউন্টে ৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা জমা হয় বিভিন্ন সময়। এখন জমা আছে ৭৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। শেয়ারবাজারে তাঁর নামে দুই কোটি ১৩ লাখ এবং সঞ্চয়পত্রে ৫০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে।
মেয়ে সানজানা কামাল বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে সদ্য পাস করেছেন। তাঁর নামে ১০টি অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় জমা হয়েছে ২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এখন স্থিতি আছে ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া তাঁর নামে এক কোটি ১৪ লাখ টাকা শেয়ারবাজারে এবং এক কোটি তিন লাখ টাকার বিনিয়োগ রয়েছে ট্রেজারি বন্ডে।
গতকাল মঙ্গলবার কামাল হোসেনকে টেলিফোন করা হয়। প্রতিবেদক পরিচয় জানানোর পর তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ’। প্রতিবেদনের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে আবারও ‘অসুস্থ’ বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কামাল হোসেনের নিজের বা সন্তানদের নামে রেজিস্ট্রি করা সম্পত্তির মূল্য পরিশোধ করেছে ব্যাংকের কোনো না কোনো ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান। ইস্কাটনে একসঙ্গে চারটি দামি ফ্ল্যাট কেনার বিষয়টি স্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণের নামে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ হিসেবে ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এই ফ্ল্যাট কেনার সঙ্গে দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি, কর ফাঁকি, অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার মতো অপরাধ হয়েছে।
ব্যবস্থা নিতে দুদকে প্রতিবেদন
ব্যাংকের এই শীর্ষ কর্মকর্তার নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নামে এত সংখ্যক হিসাব পরিচালিত হওয়া সন্দেহজনক। তাঁর বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত ২১ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে বিএফআইইউ।
তাতে বলা হয়, এবি ইলেকট্রনিকস ও আনিরা ইন্টারন্যাশনালের হিসাবে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা লেনদেনের বিষয়টি গভীর পর্যালোচনার মাধ্যমে হুন্ডি নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। দুদক ইতোমধ্যে উপপরিচালক আজিজুল হকের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করেছে বলে সমকাল জানতে পেরেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, কোনো ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে হুন্ডি ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠলে তা খুবই হতাশাজনক। ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে ঋণ অনুমোদনের জন্য পরিচালনা পর্ষদে প্রস্তাব উত্থাপন করা ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব। এখন তাঁর বিরুদ্ধেই যদি উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে, তা অবশ্যই গুরুতর অপরাধ।