Image description

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার গত সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসনে দেশের সর্বত্র হত্যা, খুন, জুলুম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ ছিল দেশের মানুষ। তার থেকে ব্যতিক্রম ছিল না গাইবান্ধা জেলা। ফ্যাসিবাদী শাসনে একদিকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, চাঁদাবাজি, লুটতরাজ, গুন্ডামি, দখলবাজি, নৈরাজ্য; অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় গুলি, হত্যা যেন ‘ডালভাতে’ পরিণত হয়েছিল।

বিরোধীদের দমনে দেওয়া হতো মিথ্যা ও ‘গায়েবি মামলা’। তাদের ছিল না ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার। উপেক্ষিত ছিল মানবাধিকার। বানোয়াট মামলার ঘানি টেনে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার।

স্থানীয় রাজনৈতিক শিষ্টাচারেরও বালাই ছিল না আওয়ামী লীগ শাসনামলে। উল্টো আওয়ামী লীগের অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিরোধীদের অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসনে আওয়ামী লীগের দলীয় ক্যাডার ও তাদের দোসর-প্রশাসনের হাতে জেলায় অন্তত ৩২ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন অগণিত মানুষ। এর মধ্যে অনেকেই পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

জেলা প্রশাসন অফিস সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের পতনের পর জেলায় বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে ২৭৩টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন পায় প্রশাসন। যাচাই-বাছাই শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় ২২৮টি এবং প্রত্যাহার হয় ১৪৪টি।

জনতার বিক্ষোভে পুলিশের নির্বিচার গুলি, নিহত ৮

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ‘বিচারিক প্রহসনে’ মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর ধর্মপ্রাণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এর থেকে ব্যতিক্রম ছিল না গাইবান্ধাও। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশের নির্বিচার গুলি ও এলাকাবাসীর প্রতিরোধে বিপুল হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ সময় মোট আটজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হন। পুলিশ অসংখ্য রাইফেল ও শটগানের গুলি এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের গুলি শেষ হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতার পিটুনিতে তিন পুলিশ সদস্য নিহত ও দুজন গুরুতর আহত হন। এ সময় জনতার সঙ্গে থাকা তিন জামায়াতকর্মী নিহত এবং ১৩ জন আহত হন।

এ ঘটনায় পুলিশ দ্রুত বিচার আইনে সাতটিসহ মোট ২৮টি মামলা দায়ের করে। এসব মামলায় আসামি করা হয় প্রায় ৩০ হাজার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে। অনেক গ্রাম গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে।

জামায়াত-শিবিরের আট নেতাকর্মী খুন

২০২০ সালের অক্টোবরে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের শহীদদের হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী, ২০১৩ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে তাদের আট নেতাকর্মীকে হত্যা করে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ১৯ জানুয়ারি রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গুলি করে হত্যা করে সোহানুর রহমান