গরু ও খাসির মাংস সবার প্রিয় হলেও আকাশচুম্বী দামের কারণে নিম্নআয়ের মানুষ স্বাদ নিতে পারত না। ফলে ব্রয়লার মুরগিই ছিল তাদের ভরসা। এজন্য ব্রয়লার মুরগিকে ‘গরিবের মাংস’ হিসেবে আখ্যা দিতেন অনেকে। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকার নিছে মিলছে না। এতে পরিবারের জন্য ন্যূনতম আমিষ কিনতেও হিমশিম খাচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষ। এ ছাড়া ছোট-বড় বিভিন্ন জাতের মাছের দামও আগের মতো বাড়তি রয়েছে। বিশেষ করে একসময়ের কম দামের পাঙাশও এখন ছুঁয়েছে প্রায় আড়াই শ টাকা। গতকাল রাজধানীর খিলক্ষেত, জোয়ারসাহারা ও মহাখালী বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২২০, সোনালি ৩২০ থেকে ৩৩০, লেয়ার ২৮০ থেকে ২৯০ এবং দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি হাঁস ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির বেশি দাম নিয়ে বিক্রেতারা জানান, শীতের দিনে ঠান্ডার কারণে মুরগির বাচ্চা বেশি অসুস্থ হয়। ফলে লোকসানের সম্ভাবনায় খামারিরা বাচ্চা কম তোলেন। যার কারণে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী জোগান কম থাকে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বাড়তি দামেই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়। এর সঙ্গে অন্য মুরগির দামও বেশি থাকে। এ ছাড়া গরুর মাংস হাড়সহ ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং হাড় ছাড়া ৯০০ টাকা এবং ছাগল-খাসির মাংস ১০০০-১২০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে আগের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। তেলাপিয়া কিংবা পাঙাশ, কার্ফু কিংবা ব্রিগেড মাছের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। একটু বড় সাইজের পাঙাশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া বিক্রেতারা জানান, ৫০০ গ্রামের ইলিশ ১১০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ১৭০০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ২০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে চাষের ১ কেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে ১০০০, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০, চিংড়ি প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ১২০০, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০, বড় কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০, তেলাপিয়া ২২০, কই ২২০ থেকে ২৩০, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০, পাঁচমিশালি মাছ ২২০, রূপচাঁদা ১২০০, বড় বাইম ১২০০ থেকে ১৪০০, দেশি কই ১২০০, শোল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০, আড়ই মাছ ৬০০ থেকে ৮০০, বেলে মাছ ৮০০, কাজলি মাছ ৮০০ এবং কাইকলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে শিম ১৫ থেকে ৪০ টাকা, বড় আকারের ফুলকপি ১৫ থেকে ২০ টাকা পিস, বাঁধাকপি বড় সাইজের ২০ থেকে ৩০ টাকা পিস, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, পাকা টম্যাটো কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মুলা কেজি ২০ টাকা, খিরাই ৪০ টাকা এবং শসা ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, ঝিঙা এবং কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।