
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে অনিয়ম এবং অসংগতির বিষয়ে ১২টি অভিযোগ তুলে ধরেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগগুলো পড়ে শোনান ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী ও জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী। তারা দাবি করেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ছিল জবরদস্তি, কারচুপি, সমন্বয়হীনতা, মিথ্যা তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রবণতা। সর্বোপরি একটি নির্দিষ্ট প্যানেল ও প্রার্থীকে বিজয়ী করার উদ্দেশ্যে পুরো নির্বাচনের নকশা করা হয়েছিল। ফলে নির্বাচনী উৎসবের পরিবর্তে এটি প্রহসনে পরিণত হয়।
নির্বাচন নিয়ে অনিয়ম ও অসংগতির বিষয়ে ছাত্রদলের অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো–স্বল্পসংখ্যক ভোটারের একটি নির্বাচনেও ছবিসহ ভোটার তালিকা ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স সরবরাহ না করা। অমোচনীয় কালির ব্যবস্থা না করার মাধ্যমেও নির্বাচনকে অবিশ্বাসযোগ্য ও প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। ব্যালট বাক্স কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল নির্বাচনের আগের রাতে। কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের সংখ্যার চাইতে অতিরিক্ত ব্যালট পেপারও পাঠানো হয়। একটি নির্দিষ্ট দলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তির অখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যালট পেপার এবং ওএমআর মেশিন কেনা হয়। নির্বাচনে অতিরিক্ত তিন হাজার ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। ফজিলাতুন্নেছা হল, জাহানারা ইমাম হল, তাজউদ্দীন হলসহ কয়েকটি হলে জালভোটের অভিযোগ ওঠে। জাহানারা ইমাম হলে বুথের মধ্যে দুটি প্যানেলের লিফলেট সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়। ফজিলাতুন্নেছা হলে ব্যালট পেপার ফ্লোরে পড়ে ছিল। এই হলের প্রভোস্ট খুবই আগ্রাসীভাবে একটি প্যানেলের পক্ষে ভোট কারচুপিতে ভূমিকা রেখেছেন। কারচুপির অভিযোগে এই হলে অনেকটা সময় ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। অধিকাংশ পোলিং কর্মকর্তা আচরণবিধি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। তাদের প্রয়োজনীয় ব্রিফ করা হয়নি।
এছাড়াও ছাত্রদল অভিযোগ করে, প্রার্থীদের এজেন্টের বিষয়ে নানান টালবাহানা করা হয়। প্রথমে বলা হয় কোনো এজেন্ট রাখা হবে না। পরে নির্বাচনের আগের রাতে এজেন্ট রাখার সিদ্ধান্ত হলেও সকালে তাদের কেন্দ্রে ঢোকা নিয়ে হয়রানি করা হয়। রফিক জব্বার হলে মোট ভোট পড়েছে ৪৭০টি। কিন্তু ডাইনিং ও ক্যান্টিনবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিজন প্রার্থীর ভোটের যে সংখ্যা ঘোষণা করা হয়, তার যোগফল ছিল ৫১৩টি। এই অতিরিক্ত ভোটার কোথা থেকে এলো কেউ জানে না। নির্বাচন শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও উপাচার্য বরাবর আমরা লিখিত আবেদনে সব কেন্দ্রের ভোট প্রদানকারীদের তালিকা ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চাইলেও আমাদের তা এখনও দেওয়া হয়নি।