
নিজেই সড়কে নামলেন সিলেটের পুলিশ কমিশনার আব্দুছ কুদ্দুছ চৌধুরী। আলটিমেটাম ছিল রোববার রাত পর্যন্ত। এরপর থেকে সড়কে অবৈধ গাড়ি না নামানোর নির্দেশ ছিল পুলিশের। সেটি পুলিশ কমিশনার পরিবহন সেক্টরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিলেন। তার এই স্পষ্ট নির্দেশনা অনেকেই মানেননি। নগরে যানবাহন চলছে আগের মতোই। স্ট্যান্ডেও অব্যবস্থাপনা। পুলিশের নির্দেশনা ছিল- ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ভুয়া নম্বর প্লেটযুক্ত যানবাহন নিষিদ্ধ, অনুমোদিত স্ট্যান্ড ছাড়া পার্কিং না করা, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীর হেলমেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই অবস্থায় ঘোষণা দিয়ে গতকাল সকাল থেকে সড়কে ধরপাড়ক শুরু করেছে পুলিশ। সকাল থেকে নগরীর মেন্দিবাগ, নাইওরপুল, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, রিকাবীবাজার এবং পাঠানটুলায় একযোগে অভিযানে নামে পুলিশ। তবে প্রথম দিনের অভিযানে যে সুফল মিলেনি তা নয়। বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল অনেকটা কমে এসেছে। তবে সিএনজি অটোরিকশা চলছিলো আগের মতোই। শুধু পুলিশ কমিশনার নয়, সিলেটের যান বাহন অব্যবস্থাপনায় কঠোর নির্দেশনা দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলমও। তিনি কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শন শেষে অবৈধ সিএনজি অটোরিশা নগরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে নগরে অভিযানও চালানো হয়েছিলো।
নগর পুলিশ জানিয়েছে; কোনো অবৈধ যানবাহনকেই তারা নগরে চলাচল করতে দেবেন না। এতে করে নগরের ট্রাফিকে নানা অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়। পাশাপাশি অপরাধও সংঘটিত হয়। এজন্য তারা অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছেন। ধীরে ধীরে তারা সব কার্যক্রমই চালাবেন। তবে এখন চলছে ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অ্যাকশন। গতকালের অভিযান সম্পর্কে নগর পুলিশ জানিয়েছে- সকাল থেকে নগরীর মেন্দিবাগ, নাইওরপুল, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, রিকাবীবাজার এবং পাঠানটুলায় এলাকায় পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়ে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন। এ সময় সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের কাগজপত্র চেক করা হয়। অভিযানের অংশ হিসেবে সকাল ১১টা পর্যন্ত অন্তত ২০টি অবৈধ অটোরিকশা আটক করে ডাম্পিংয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানান- এসএমপি’র কর্মকর্তারা। অভিযানে অংশ নেন এসএমপি কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী পিপিএম। নগরের রিকাবীবাজার পয়েন্টে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রেস ব্রিফিং করেন পুলিশ কমিশনার। এ সময় তিনি বলেন- নগরবাসীর ভোগান্তি কমানো, যানজট নিরসন এবং দুর্ঘটনা রোধই এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য। অবৈধ যানবাহন সরাতে আমরা আগে সময় দিয়েছি, মাইকিংও করেছি। এরপরও যারা নির্দেশনা মানছে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি জানান- নগরীতে আর কোনো অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা বা ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেয়া হবে না। পাশাপাশি নগরীর অনুমোদনহীন সিএনজি স্ট্যান্ডগুলো সরিয়ে সুনির্দিষ্ট পার্কিংয়ের জায়গা নির্ধারণের পরিকল্পনাও রয়েছে পুলিশের। এর আগে সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় এসএমপি আট দফা নির্দেশনা জারি করে।
পর্যায়ক্রমে তাদের অভিযান জোরদার করা হবে বলে জানান তিনি। এদিকে- সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন- অভিযান চলমান থাকবে এবং আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা মাঠে উপস্থিত থেকে এই অভিযান তদারকি করছেন বলে জানান তিনি। এদিকে- সিলেটের শৃঙ্খলা ফেরাতে যানবাহন নিয়ন্ত্রনের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তরফ থেকে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। নগরের বিভিন্ন স্থানে পার্কিং না করে টার্মিনালে ট্রাক পার্কিং করতে মালিক ও শ্রমিকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের ভেতরে যানবাহনের পার্কিং করতে জেলা প্রশাসকের তরফ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়। এজন্য টার্মিনালের ভেতরের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।