Image description
দেরিতে হাসপাতালে ভর্তি

প্রতিদিনই দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর তালিকা লম্বা হচ্ছে। চলতি বছরে এই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু রোগীরা দেরিতে হাসপাতালে আসায় মৃত্যু বেশি হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিরা মনে করছেন। চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মারা গেছেন। রোগীরা অনেক সময় দেরিতে হাসপাতালে আসায় চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ কমে যাচ্ছে।

এদিকে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ জনের প্রাণহানি হয়েছে ডেঙ্গুতে। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮১ জনে। একদিনে ডেঙ্গুতে ৬৭৮ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরে শনাক্ত রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৫০৯  জনে। বর্তমানে সারা দেশের  প্রায় ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগী। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম  সূত্র বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৪৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯০ জন, ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলায় ১১৩ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৬ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৭৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৩ জন, রংপুর বিভাগে ১০ জন, সিলেট বিভাগে ৩ জন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫৫ ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪০ হাজার ১৮৬ জন। গত ১লা জানুয়ারি থেকে ২২শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত ৪২ হাজার ৫০৯ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ডেঙ্গুতে যারা মারা গেছেন, তাদের অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি বলেন, রোগীরা খারাপ অবস্থায় ভর্তি হচ্ছেন। ফলে চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ কমে যাচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সবার সচেতন হওয়া জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে বাড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর ঝুঁকি। ডা. আবু জাফর বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পরপরই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হলে কমতে পারে মৃত্যুর হার। মহাপরিচালক বলেন, গত কয়েকদিনে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা বেড়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এমনটা দেখা যায়। পরিসংখ্যান দেখে বলা যায়, সেপ্টেম্বরেই সবচেয়ে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যুও ঘটেছে বেশি। তিনি বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে এবং আমরা যে ব্যবস্থাপনা নিচ্ছি, সেটি আপনাদের সামনে তুলে ধরার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, জনগণকে সচেতন এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করা।