Image description

বকেয়া বিলের বিড়ম্বনায় পড়েছে বিদুৎ বিভাগ। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার কাছে বকেয়া পড়েছে ২৬১২ কোটি টাকা। বিশাল সেই বিল না আসায় আর্থিক টানাপোড়েনে পড়েছে বিদুৎ বিভাগ। খোদ বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বকেয়াও আছে ১২ কোটি টাকার মতো।

সূত্রে জানা গেছে, এই বকেয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯৯৫ কোটি টাকা হচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিডি)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৯৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ সংস্থাগুলোর। এছাড়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২৩৯ কোটি টাকা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগের ১৩৩ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৮০ কোটি টাকা, জননিরাপত্তা বিভাগ ৭৮ কোটি টাকা, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৭২ কোটি টাকা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ৭০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া আদায় না হওয়ায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে উৎপাদন ও সরবরাহের প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। বিতরণ ব্যবস্থায় এক ধরনের ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। এদিকে টাকার সংকট কাটাতে সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টার কাছে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ চেয়ে আধা সরকারি পত্র (ডিও) দিয়েছেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির জানান, ‘বিপুল পরিমাণ বিল অনাদায়ী থাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা বা কোম্পানিগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া তাদের বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও ব্যাহত হচ্ছে। এজন্য অর্থ বিভাগকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিতে বলা হয়েছে।

সূত্রমতে, ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সরকারের ৫৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে ‘ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি)’ বকেয়া পাওনা দাঁড়িয়েছে ৭৭৩ কোটি টাকা। বকেয়ার দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ‘ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লি. (ডেসকো)’। এ সংস্থার বকেয়া বিলের পরিমাণ ৫৫৪ কোটি টাকা এবং তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বাবিউবো)। এ প্রতিষ্ঠানের মোট বকেয়া বিলের অঙ্ক ৪৫৬ কোটি টাকা। এছাড়া নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লি. (নেসকো) বকেয়া পাওনা ৩৭১ কোটি টাকা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (বাপবিবো) পাওনা ২৪৫ কোটি টাকা এবং ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. (ওজোপাডিকো) বকেয়া ২১১ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, কয়েক বছর ধরে মিটিং করে, চিঠি দিয়ে, এমনকি আইনি পদক্ষেপ নিয়েও এই বকেয়া বিল আদায় করতে পারছে না বিতরণ কোম্পানিগুলো।