
জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “‘তোকে জুলাই ভরে দেওয়া হবে’ বলে নুরের ওপর হামলা করা হয়েছে। কারা জুলাইকে সহ্য করতে পারে না আপনারা জানেন না? যারা জুলাইকে সহ্য করতে পারে না, তারা-ই এই নৃশংস হামলা চালিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই জাতীয় পার্টি (জাপা) ফ্যাসিবাদের দোসর, এতে কারো দ্বিমত নেই। যেভাবে আজকে নুরকে লাঠি ও বুট দিয়ে মারা হয়েছে, তা থেকে স্পষ্ট—এটা একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা। নুর ভাইয়ের মতো একজন মানুষের যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাকিদের কী হবে?”
স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক ও ডাকসু ভিপি প্রার্থী জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ বলেন, “নুর বাংলাদেশের একজন সাহসের প্রতীক। আগেও আমরা দেখেছি, ফ্যাসিস্ট শাসনামলে তিনি বারবার হামলার শিকার হয়েছেন। এমনকি ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পরও তাকে প্রতিনিয়ত হামলার শিকার হতে হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম ফ্যাসিস্টের পতনের মধ্য দিয়ে এই জুলুমের অবসান ঘটবে। কিন্তু আজ আমরা দেখলাম, পুলিশ বাহিনী ও সেনাবাহিনী নুরকে লক্ষ্য করে আগের মতো একই কায়দায় হামলা চালিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা আজ হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের অতি দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি জাতীয় পার্টিকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত বলেন, “আজকের এই ঘটনার পর জাপাকে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে। এই জাপাকে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া যাবে না। এ ঘটনার পর যদি জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করা না হয়, তবে ছাত্ররা আবার জুলাই ঘটাবে।”
ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, “পুলিশ এখনো তাদের আচরণ বদলায়নি, তারা আগের মতোই হামলা চালাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের এই দোসররা (পুলিশ) আজ নুর ভাইয়ের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছে। এরাই গত কয়েকদিনে বুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছিল।”
ছাত্রনেতা মাহিন সরকার বলেন, “আমরা যখন ছাত্রলীগের গেস্টরুম-গণরুম কালচারে অতিষ্ঠ ছিলাম, তখন যে গুটিকয়েক মানুষ এই রাজুতে এসে দাঁড়াতেন, তাদের নেতৃত্ব দিতেন নুর ভাই। আগামীতে আর কোনো জুলাই যোদ্ধার ওপর যেন আঘাত না আসে, সাবধান হয়ে যান। না হলে কিন্তু গদি কেঁপে উঠবে।”
বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল থেকে স্লোগান দেন: ‘জাতীয় পার্টির ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ফ্যাসিবাদের চামড়া, তুলে নিবো আমরা’, ‘জিএম কাদেরের চামড়া, তুলে নিবো আমরা’,‘আপা গেছে যেই পথে, জাপা গেছে সেই পথে’ ইত্যাদি।