Image description

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে দলগুলোকে পাঠানো জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় মতামত দেয়ার শেষ দিন আজ। চূড়ান্ত পর্যায়ে মতামত দেয়ার পর শেষ ধাপের  আলোচনায় বসবে কমিশন। এ ধাপের আলোচনায় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও সময় নিয়ে আলোচনা হবে। মতামত দিতে দলগুলো গত কয়েকদিন নিজেরা আলোচনা করেছে। সনদের যেসব বিষয়ে বিভ্রান্তি ও আপত্তি আছে তা চিহ্নিত করেছে। আজ এসব বিষয় কমিশনকে অবহিত করবে দলগুলো। কমিশনের আলোচনায় অংশ নেয়া অধিকাংশ দল মতামত দেবে। কয়েকটি দলের নেতারা জানিয়েছেন, কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে তাদের আর কোনো আপত্তি বা মতামত নেই। 
১৬ই আগস্ট সন্ধ্যায় কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। দলগুলোকে বলা হয়েছে ২০শে আগস্টের মধ্যে মতামত জমা দিতে। এরপরই কমিশন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনায় বসবে। 

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কোনো ডকুমেন্টই সংবিধানের ঊর্ধ্বে হতে পারে না। যদি সেটি করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য খারাপ নজির তৈরি হবে।

তিনি জানান, আগের খসড়ায় সংসদ নির্বাচনের পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে সনদ বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু নতুন খসড়ায় সেটি বাদ গেছে। পাশাপাশি সনদ নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না- এটিও অগ্রহণযোগ্য। বিএনপি বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মতামত দেবে এবং ২৫শে আগস্ট থেকে কমিশনের আলোচনায় অংশ নেবে।

অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী বলছে, জুলাই সনদের ভিত্তিতেই হবে আগামী জাতীয় নির্বাচন। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন দ্রুত সম্পন্ন করে অধ্যাদেশ, এলএফও বা গণভোটের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি প্রদান করা না হলে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম বিফলে যাবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন মানবজমিনকে বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং নারী আসনের বিষয়গুলো নিয়েই কমিশনে মতামত জানানো হবে। আমরা চাই অন্তর্বর্তী সরকারের সময় থেকেই সনদ বাস্তবায়ন শুরু হোক।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মানবজমিনকে বলেন, কিছু বাক্য-শব্দগত বিষয় সংশোধন করতে হবে। সূচনা বক্তব্যে সংশোধন জরুরি। এ ছাড়াও এতগুলো অঙ্গীকারনামা রাখার দরকার নেই। 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি দিতে হবে। সংস্কার না করে পূর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পারে না।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি ও পূর্ববর্তী ঐতিহাসিক অনেক ঘটনাই বাদ পড়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী আন্দোলন-সংগ্রাম স্থান পায়নি এই সনদে। জাতি সত্তা ও বর্তমান মূলনীতি যুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। 

তিনি বলেন, জুলাই সনদকে সংবিধানের উপরে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। যা কোনোক্রমেই হতে পারে না। সংস্কারকে আমরা সমর্থন করি। যে বিষয়গুলো নিয়ে ঐকমত্য হয়েছে। আগামী নির্বাচিত সরকার এগুলোর বাস্তবায়ন করবে। এ বিষয়ে আমরা অঙ্গীকার করতে পারি। মোটাদাগে এই বিষয়গুলো আগামীকাল কমিশনকে জানাবো।