
যশোর সদর উপজেলায় রেজাউল ইসলাম (৪৯) নামের স্থানীয় এক যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার রাতে কাশিমপুর ইউনিয়নের দৌলতদিহি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রেজাউল ওই গ্রামের গোলাম তরফদারের ছেলে। তিনি যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
এদিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে চতুর্থ স্ত্রীকে নিয়ে তৃতীয় স্ত্রী পোশাককর্মী আসমা আক্তারকে শ্বাসরোধ হত্যা করেছেন বাসচালক আব্দুর রশিদ।
রেজাউলের স্ত্রী শিউলি বেগম বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোবাইল ফোনে একটি কল এলে আমার স্বামী বাড়ির ছাদে বসে কিছুক্ষণ কথা বলেন। এর পর দরজা খুলে বাইরে যান। কিছু সময় পর প্রতিবেশীরা ডেকে জানান, আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, একটি গাছের ওপর তাঁর রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে আছে।’
এদিকে এলাকাবাসী বলছে, রাতে এক দল লোক রেজাউলকে গ্রামের চায়ের দোকানে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে বাড়ির সামনে তাঁকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে ফেলে যায় তারা।
কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। রেজাউল যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় ৯টি মামলা রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
অটোরিকশাচালককে গুলি করে হত্যা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় পূর্বশত্রুতার জেরে মিজানুর রহমান অভি নামের এক অটোরিকশাচালককে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে এক দল লোক। বুধবার ভোরে এখলাছপুর ইউনিয়নের হাশিমপুর বকুলতলা এলাকায় লঞ্চঘাটের সড়ক থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অভি এখলাছপুর গ্রামের প্রয়াত ফজলুল হক কাজীর ছেলে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রনি গাজী নামের একজনকে থানায় নিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, অভি নারায়ণগঞ্জে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। চার-পাঁচ দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে এলাকায় আসেন তিনি। আধিপত্য নিয়ে তাঁর সঙ্গে স্থানীয় সন্ত্রাসী চক্রের সদস্য নাহিদ গাজীর বিরোধ চলছিল। গতকাল ভোরে এক ব্যক্তি এখলাছপুর লঞ্চঘাটে যাওয়ার পথে অভিকে সড়কে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসীকে খবর দেন।
অভির বন্ধু নুর আলম বেপারি বলেন, ‘রাত সোয়া ৩টার দিকে নাজমুল গাজীর ফোন থেকে আমাকে কল দিয়ে নাহিদ বলে– অভিকে খেয়ে ফেলেছি, তোকেও খেয়ে ফেলব। এ সময় ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কান্নার শব্দও শোনা যায়। নাজমুল নাহিদের ভাই।’
কেরানীগঞ্জে অটোরিকশাচালক খুন
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় রুবেল হোসেন নামের এক অটোরিকশাচালককে কুপিয়ে হত্যা করেছে ছিনতাইকারীরা। বুধবার ভোরে কালিন্দি ইউনিয়নের বালুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রুবেলের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার শুকরাতাইন গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে কেরানীগঞ্জের কালিন্দি চরাইল এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মনিরুল হক ডাবলু জানান, ছিনতাইকারীরা অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রুবেলের হাতে আঘাত করেছিল। তবে অটোরিকশা নিতে পারেনি। রুবেলের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।
চতুর্থ স্ত্রীকে নিয়ে তৃতীয় স্ত্রীকে হত্যা
তৃতীয় স্ত্রী পোশাককর্মী আসমা আক্তারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন বাসচালক আব্দুর রশিদ। এ সংসারে তাদের দুই সন্তানও রয়েছে। চতুর্থ স্ত্রীকে নিয়ে আসমার বাসায় বেড়াতে আসেন রশিদ। পরে রশিদ ও তার চতুর্থ স্ত্রী শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে দুই সন্তান নিয়ে পালিয়ে যায়।
গতকাল দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার পাঁচকাহুনিয়া গ্রামের সবুজ মিয়ার মেয়ে আসমা। রশিদের বাড়ি শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বড়নল গ্রামে। তার আরও দুই স্ত্রী রয়েছে। আসমার সঙ্গে সংসার পাতার পর আরেকটি বিয়ে করে।
শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, আসমার ছোট বোন আরিফা আক্তার রশিদ ও তার চতুর্থ স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
ছুরিকাঘাতে মাদ্রাসাশিক্ষক নিহত
সিলেট সদর উপজেলায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে জুবায়ের আহমদ নামের এক শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সকালে আখালিয়া এলাকার বড়গুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জুবায়ের স্থানীয় ডা. তানজিনা আহমদ দাখিল মাদ্রাসার প্রধান। তাঁর গ্রামের বাড়ি দক্ষিণ সুনামগঞ্জের গুড়াডুম্বুরে।
স্থানীয়রা জানান, জুবায়ের আত্মীয় নয়ন মিয়া ও জিহাদকে মাদ্রাসার ছাদে বসে ধূমপান করতে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে রাস্তার পানি পা দিয়ে জুবায়েরের দিকে ছুড়ে মারে তারা। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে নয়ন ছুরি দিয়ে তাঁর পেটে আঘাত করে। স্থানীয়রা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জুবায়েরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মুক্তাগাছায় সংঘর্ষে নিহত ১
ফাহিম হোসেনের কাছে ২০০ টাকা পাওনা ছিল দোকানি রাসেল মিয়ার। এই টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহতের পরদিন মারা গেছেন ফাহিম। গত সোমবার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফাহিমের মৃত্যু হয়। তিনি মুক্তাগাছার মানকোন ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেনের ছেলে। তার মা ১২ জনের নামে মুক্তাগাছা থানায় মামলা করেছেন।
(নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্যুরো, অফিস ও প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য)