
ভারতের মেঘালয় রাজ্যে অনুপ্রবেশের অভিযোগে স্থানীয়দের পিটুনিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। গত সোমবার বিকেলে সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার মহেশখোলা সীমান্তের ওপারে মেঘালয়ের খনজয় কৈথাকোণা গ্রামের একটি বনে স্থানীয়রা তাকে আটক করে আবারও গণপিটুনি দেয়। পরে সেখানকার হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) পর্যন্ত তার মরদেহ পায়নি পরিবার।
নিহত যুবকের নাম আকরাম হোসেন (৩০)। তিনি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের বাঁকাকুড়া গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে।
ভারতীয় গণমাধ্যম ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে আকরামসহ মোট আট বাংলাদেশি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি হিলস জেলার রোংদাংগাই গ্রামে প্রবেশ করেন। ওই গ্রামে এক বাসিন্দাকে অপহরণের চেষ্টা ও বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ করা হয় তাদের বিরুদ্ধে। এর ওপর ভিত্তি করে স্থানীয়রা পাঁচজনকে আটক করে পিটুনি দেয় এবং পরে তাদের ভারতীয় পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এর প্রায় দুদিন পর সোমবার আকরাম হোসেনকে পেটানো হয়।
আটকরা হলেন- জামালপুরের মারুফুর রহমান (৩২), জামালপুর সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর আলম (২৫), নারায়ণগঞ্জের সায়েম হোসেন (৩০), কুমিল্লার মেহফুজ রহমান (৩৫) ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মোবারক হোসেন (৩২)।
ভারতের খাসি হিলস জেলার পুলিশ সুপার বানরাপলাং জিরওয়া স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানায়, আটক বাংলাদেশিদের কাছ থেকে একটি রিভলভার, তিনটি ওয়্যারলেস সেট, একটি ম্যাগাজিন ও পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আহত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আদালতে পাঠানো হয় এবং দুজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত আকরামের বড় ভাই শেখ ফরিদ জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা আকরামের মৃত্যুর খবর পান, তবে কীভাবে তিনি ভারতে গিয়েছিলেন, তা পরিবারের কেউ জানেন না।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মুসা মিয়া জানান, আকরাম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ছিলেন না।
আকরামের লাশ ফেরত আনার জন্য তার স্বজনরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন-৩৯ বিজিবির আওতাধীন নকশী বিওপির সুবেদার আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আল-আমীন কালবেলাকে বলেন, নিহত আকরামের বিরুদ্ধে থানায় একটি অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।