Image description

মৃত্যু জীবনের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। জন্ম নিলে একদিন মারা যেতে হবে। মায়াঘেরা দুনিয়ার রূপ-রঙ ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমাতে হবে— যেখানে কেউ কারও বন্ধু হবে না, হবে না শত্রুও। নিজের দায়িত্ব নিজেই নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে রাব্বুল আলামিন মহাগ্রন্থ আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং তোমরা নিজ নিজ কাজের প্রতিফল সম্পূর্ণভাবেই কিয়ামতের দিন পাবে।’(সুরা আলে ইমরান : ১৮৫, সুরা আনকাবুত : ৫৭)

সুরা নাহলে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না।’ (আয়াত : ৬১)

 

কাজেই মৃত্যু যে নিশ্চিত, এই কথাতে কোনো ধর্মের মানুষেরই দ্বিমত নেই। সম্প্রতি বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ভয়াবহ হারে বেড়েছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান। বিশেষ করে, গত ৬ আগস্ট (বুধবার) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের সাতজন নিহত হন। কিন্তু কোনো মানুষই এমন মর্মান্তিক মৃত্যু আশা করেন না। প্রত্যেক মুসলিমই চান, তার মৃত্যু যেন সুন্দর ও স্বাভাবিক হয়।

 
 

তাই প্রশ্ন উঠছে, ‘ড্রাইভারের ভুলে কেউ মারা গেলে ইসলামের আলোকে ওই ড্রাইভারের শাস্তি কী?’

 

এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ড্রাইভারের ত্রুটির কারণে যদি এক্সিডেন্ট হয়ে থাকে, যেমন তিনি অসতর্ক অবস্থায় ড্রাইভিং করেন, নির্ধারিত গতিসীমার চেয়ে বেশি চালান, নেশা করে ঘুমের ভাব নিয়ে গাড়ি চালান কিংবা নেশা ছাড়াই ঘুমের ভাব নিয়ে গাড়ি চালান— এরকম যদি হয় তাহলে সেটা কাতল বিস-সবব বা এমন হত্যার আওয়তায় পড়বে, যেটা আসলে কোনো ব্যক্তি কোনো হত্যার জন্য কারণ হলো।

 

আহমাদুল্লাহ বলেন, এ অবস্থায় ড্রাইভারের ওপরে রক্তপণ (কাফফারা) ওয়াজিব হবে, অর্থাৎ প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির বিপরীতে তাকে ১০০ উঠের মূল্য দিতে হবে। তার দেওয়ার ক্ষমতা না থাকলে সে জেলে থাকবে। তবে যদি তার অ্যাসোসিয়েশন বা পরিবার তার পক্ষ থেকে দিয়ে দেয়, তাহলে হয়ে যাবে। আর যদি এটাও সম্ভব না হয়, তবে সে কারাভোগ করবে।

অন্যদিকে, যদি ড্রাইভারের কোনো ত্রুটি না থাকে, তাহলে এটাকে সাধারণ বিপদ হিসেবে ধরা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ড্রাইভারের পক্ষ থেকে কোনো কাফফারা দিতে হবে না।