Image description

মালদ্বীপে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তরুণ শিক্ষাবিদ ড. মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি পড়াশোনার সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কে থেকেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক এ শিক্ষার্থী তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে নিয়োগ পাওয়ায় অনেকের আগ্রহের কেন্দ্রে চলে এসেছেন। অনেকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন তাকে।

নাজমুল ইসলাম তুরস্কের আঙ্কারা ইলদিরিম বেয়াজিট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক। নোয়াখালীর বাসিন্দা নাজমুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। ২০১৪ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন ইলদিরিম বেয়াজিট বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সহপাঠী ও তুরস্কের ইস্তাম্বুল মেদেনিয়াত বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক ওয়ালি উল্লাহ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের আমাদের বন্ধুদের মধ্যে ঢাবিতে ভালো রেজাল্ট করে সবার আগেই তুরস্ক সরকারের বৃত্তি নিয়ে সবচেয়ে কম বয়সে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন নাজমুল। তুরস্কের বিখ্যাত ইলদিম বেয়াজিত বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করে। প্রথম বাংলাদেশি ও দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে তুরস্কের পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা। একইসাথে অসংখ্য ভালো মানের গবেষণা ও বই-আর্টিকেল লিখেছেন।’

নাজমুল ইসলাম তুরস্কের আঙ্কারা ইলদিরিম বেয়াজিট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক। নোয়াখালীর বাসিন্দা নাজমুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। ২০১৪ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন ইলদিরিম বেয়াজিট বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই।

তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নানাভাবে যে অবদান রেখেছে তাও নজিরবিহীন। তিনি আরও বড় কিছু ডিজার্ভ করে। আপনার ওপর আমাদের বিশ্বাস আছে, আপনি পারবেন। আপনাদের মেধা, যোগ্যতা ও প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ধন্যবাদ বাংলাদেশ সরকারকে এই তরুণ মেধাকে দেশের জন্য ব্যবহার করার জন্য।’

জানা গেছে, তুরস্কে অধ্যাপনার পাশাপাশি পার্লামেন্টের কাজের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন ড. মো. নাজমুল ইসলাম। তার জন্ম ১৯৯২ সালে, সে হিসেবে বয়স ৩৩ বছর। দেশে এত কম বয়সে রাষ্ট্রদূত পদে যাওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলমের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে নাজমুল ইসলামকে মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ২৭ জুলাই নিয়োগ পান তিনি।

গত ৩ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আবুল হাসান মৃধার সই করা অফিস আদেশে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ন্যস্ত করে মালেতে হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় বলে জানা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী ও অন্যান্য সূত্রে জানা গেছে, নাজমুল ইসলাম রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও পাবলিক প্রশাসনের সহযোগী অধ্যাপক এবং টার্কিয়ে, এশিয়া, ও ইন্দো-প্যাসিফিক স্টাডিজ (টাইআইপিএস), ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক রিসার্চ (ইউএলএসএ) এর প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আঙ্কারা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন স্টাডিজ বিভাগে স্নাতকোত্তর কোর্স করেন।

 

নাজমুল সম্প্রতি পররাষ্ট্র সম্পর্ক ও প্রটোকল বিভাগে বিশেষ উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত হন তুর্কি পার্লামেন্টে। অনেক বড় অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিতে দেখা গেছে তাকে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জাজ বিজনেস স্কুলে ব্র্যাকের সাথে একটি সহযোগী প্রকল্পে গবেষণা অ্যাসোসিয়েট হিসাবে কাজ করেছেন।

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মালদ্বীপের নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ পাওয়ায় বন্ধু, সহপাঠী, লেখক, গবেষক ও অ্যাকাডেমিশিয়ান নাজমুল ইসলাম রায়হানকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আশা করি, তার তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক জ্ঞান থাকায় পেশাদার কূটনীতিকদের তুলনায় ভালো অবদান রাখবে। অন্তত সে তোফায়েল ক্যাডার, আবেদালী ক্যাডার ও দলীয় বিসিএস ক্যাডার থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘নাজমুলের এ ধরনের দায়িত্বে আসা খুবই ভালো দিক। সে অত্যন্ত মেধাবী এবং নির্মোহ একটি ছেলে। ভালো ফলাফল করেছে। তুরস্কে অল্প বয়সে সহযোগী অধ্যাপক হয়েছে, দেশটির পার্লামেন্টে কাজ করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে তার মতো ছেলেদের এসব নেতৃত্বে আসা খুবই ভালো দিক। আমি তাকে নিয়ে আশাবাদী, সে খুব ভালো করবে।’