Image description
 

সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—মোটাদাগে এই তিন দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে দেশের শাসনভার গ্রহণ করেছিল নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এক বছরের মাথায় এসে সরকারের ওই তিন কাজেরই দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচার কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। সংস্কার সম্পর্কিত ‘জুলাই সনদ’ শিগগিরই সই হতে যাচ্ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে প্রধান উপদেষ্টা রোজার আগে ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের কথা জানিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত চিঠি নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়েছে।

 

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, এবার আমাদের সর্বশেষ দায়িত্ব পালনের পালা—নির্বাচন অনুষ্ঠান। আমরা সর্বশেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রবেশ করব এবং একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করব।এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোও প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনি ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। তারাও নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করেছে।এক বছর ধরেই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নানা চড়াই-উতরাই পার করতে হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে। এ সময়ে দৃশ্যমানের পাশাপাশি অদৃশ্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়েছে। সরকারকে অস্থিতিশীল করতে প্রকাশ্যে ব্যাপক আন্দোলন, একাধিকবার ক্যু করে সরকার উৎখাতেরও অপচেষ্টা হয়েছে। সর্বশেষ শেখ হাসিনার পতন দিবস ঘিরেও একটি ষড়যন্ত্র করার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। সরকারের এক উপদেষ্টার ফেসবুক স্ট্যাটাসেও তার ইঙ্গিত ছিল। তবে সরকারের কাছে আগাম তথ্য থাকায় বিগত দিনগুলোর মতো সেবারও ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হয়।

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের হাত ধরে দায়িত্ব নেওয়ার সময় সরকারের প্রতি রাজনৈতিক দলসহ জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন তৈরি হয়েছিল। তবে বছর পার হওয়ার আগেই সরকারের সঙ্গে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বেশকিছু দূরত্ব তৈরি হয়। জুলাই আন্দোলনের সপক্ষের দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সেখানে বড় ধরনের চিড় ধরেছে। দলগুলো প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে নানা বিষোদ্গার শুরু করেছে।ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর তিন দিন পর দায়িত্ব নেয় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। দেশের সেক্টরভিত্তিক অভিজ্ঞদের পাশাপাশি এ সরকারে ছাত্রদের তিন প্রতিনিধি যুক্ত হন। পরে অবশ্য উপদেষ্টা পরিষদে একাধিক দফায় রদবদল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্রপ্রতিনিধিদের মধ্য থেকেও পদত্যাগ করে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন একজন।

 

এক বছরে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের রেখে যাওয়া বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, দলদাস প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো, ছাত্র-জনতার বিপ্লবে পুলিশ বাহিনীর ভেঙে পড়া মনোবল পুনরুদ্ধার, দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণসহ নানা ইস্যুতে বেগ পেতে হয়েছে ড. ইউনূস সরকারকে। ‘রাষ্ট্র মেরামতের’ দায়িত্ব পাওয়া এই সরকারের প্রতি বিপুল প্রত্যাশা থাকলেও প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব পুরোপুরি মিলছে না। মানুষের নিত্যচাহিদা পূরণে সরকারের ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করে সংস্কার সম্পর্কিত ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রকাশ, মূল্যস্ফীতি এক ডিজিটে নামিয়ে আনা, বৈদেশিক দায় পরিশোধ, রিজার্ভ বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি, রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া সরকারের বড় অর্জন হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

 

দায়িত্ব নেওয়ার পর ড. ইউনূস সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও সেক্টরভিত্তিক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। রাষ্ট্র সংস্কারে সংবিধানসহ ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এর সবগুলোই ইতোমধ্যে সুপারিশসহ তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে দীর্ঘ ছয় মাস আলোচনা করে একটি ঐকমত্যে পৌঁছেছে সরকার। ঐক্যের বিষয়গুলোকে সমন্বিত করে শিগগিরই জুলাই সনদ সই হবে। এই সনদের সবগুলো বিষয় নির্বাচন-পরবর্তী সরকারের দুবছরের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি থাকবে। প্রতিশ্রুত এই সংস্কারের বাইরেও গত এক বছরে সরকার তার নিয়মতান্ত্রিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে বেশকিছু খাতের সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। বেশকিছু আইন ও বিধিও প্রণয়ন করেছে।

 

সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন প্রশ্নে গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ১১ সংস্কার কমিশন যে ১২১টি আশু বাস্তবায়নযোগ্যে সুপারিশ করেছিল, এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৬টি বাস্তবায়ন হয়েছে। ১০টি আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে এবং ৮৫টি আশু বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন। আর ১০টি বাস্তবায়ন করা যাবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

 

সংস্কার কমিশন ছাড়াও দেশের সার্বিক অর্থনীতির চিত্র জানতে অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন গঠিত কমিটি দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে। গুম কমিশনও ধারাবাহিকভাবে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ অব্যাহত রেখেছে। শেখ হাসিনার আমলে সংঘটিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনও কাজ করছে।

 

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে সরকারের এক বছরের কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন। তার আগামী দিনগুলোর কাজের কথাও জানিয়েছেন সেদিন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে ওইদিন তিনি ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করেন। ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, একটি ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে তারা দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। গত ১২ মাস ধরে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জুলাইয়ের দাবি পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। জুলাই অভ্যুত্থানের ফোকাস ছিল রাষ্ট্রব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক সংস্কার। সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্যে আশু বাস্তবায়নযোগ্য বহু সংস্কার তারা সম্পন্ন করেছেন। জুলাই সনদ চূড়ান্ত হওয়ার পর্যায়ে এসেছে। অচিরেই রাজনৈতিক দলগুলো এই সনদে সই করবে।

 

জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকাজ এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, বিচারের আনুষ্ঠানিক শুনানি পর্বও শুরু হয়েছে। স্বচ্ছ ও দৃশ্যমান প্রক্রিয়ায় ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞে যারা জড়িত, তাদের বিচার এ দেশের মাটিতে হবে।

 

বর্ষপূর্তির আগের দিন গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ৫ আগস্ট তাদের সরকারের প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজা শুরুর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে বুধবার নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (গতকাল) থেকে সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হলো। তবে একই সময়ে সংস্কার ও বিচারকাজ চলবে।

 

গত এক বছরে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা ক্ষেত্রে প্রশংসা অর্জন করেছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণ দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। বিশ্বনেতারা তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতিকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে কিছুটা শীতল সম্পর্ক তৈরি হলেও বাংলাদেশ তাদের এক বিন্দুও ছাড় দিচ্ছে না। বরং অতীতের নতজানু অবস্থান থেকে সরে এসে ভারত ইস্যুতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে।

 

আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক মন্ত্রী-এমপিসহ প্রভাবশালী নেতাদের গ্রেপ্তার করে আইনের মুখোমুখি করা হয়েছে। পতিত সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আনুমানিক ৮৭ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় চলমান এই বিচারে বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

 

ছাত্র-জনতার দাবির মুখে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে। দলটির ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। হাসিনার শাসনামলে তাকে ও তার পরিবারকে তুষ্ট করতে সরকার ঘোষিত নানা দিবস ও স্থাপনার নামকরণে পারিবারিকীকরণ করা হয়েছিল। বর্তমান সরকার জাতীয় শোক দিবসসহ সেই দিবসগুলো বাতিল করেছে। এসব দিবসের সরকারি ছুটিও বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ নিরাপত্তা দিতে শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের জন্য করা আইন বাতিল করা হয়েছে। শেখ পরিবারের নামে যেসব সরকারি স্থাপনা ছিল, সেগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

 

সরকারের এক বছরের কার্যক্রমের ওপর পরিচালিত গবেষণা পর্যবেক্ষণে টিআইবি বলেছে—বিচার, নির্বাচন, রাষ্ট্র সংস্কারসহ নানা ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেওয়া হলেও অন্তর্বর্তী সরকার বিগত এক বছরে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বিচার ও প্রশাসনসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে বেশকিছু ঘাটতি দেখা গেছে। কিন্তু এতকিছুতেও দুর্নীতিমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

 

পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। অনেক জায়গায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার কোনো স্পষ্ট রোডম্যাপ বা পরিকল্পনা প্রকাশ না করায় বিভিন্ন সময় জনগণ ও অংশীজনদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।

 

নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সরকার ইতিবাচক—এটাই বড় আশার জায়গা বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, এই সরকারকে অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। একটি ফ্যাসিবাদী সমাজব্যবস্থা ভেঙে গণতন্ত্রের প্রতি আগ্রহী একটি সরকার গঠিত হয়েছে। কর্তৃত্ববাদ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গিয়েছিল, সেখান থেকে কর্তৃত্ববাদমুক্ত হয়ে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা খুব সহজ কাজ নয়। তবে অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এই সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক আরো বলেন, সরকারের একটি দুর্বলতা হচ্ছে সরকার কাঠামোতে তারা কর্তৃত্ববাদবিরোধীদের কম স্পেস দিয়েছে। তারা হয়তো না চিনেই কর্তৃত্ববাদী অংশকেই সরকারে বেছে নিয়েছে। এরাই সরকারকে পেছনের দিকে টেনে ধরতে চেয়েছে।

 

সরকারের সফলতা প্রশ্নে এই গবেষক বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যবদ্ধ জায়গায় আসাটা সরকারের বড় সাফল্য। নির্বাচনি ট্রেন সবেমাত্র চলা শুরু করেছে; আশা করছি সফল হবে। আর বিচার ইস্যুতে যতটা প্রত্যাশা জনগণের ছিল, সে অনুযায়ী দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, সরকারকে মূল্যায়ন করতে হলে আরো অপেক্ষা করতে হবে, দেখতে হবে। এখনো বহু সময় আছে। বাংলাদেশে অনেক সময় অপ্রত্যাশিত অনেক ঘটনা ঘটে থাকে। সেদিকে নজর রাখতে হবে।

 

এ ধরনের সরকার বাংলাদেশে নতুন অভিজ্ঞতা—এমনটি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এই সরকার তত্ত্বাবধায়ক বা ওয়ান-ইলেভেনের মতো নয়। এটা ছিল বিপ্লবোত্তর সরকার। নিরপেক্ষ সরকার হলেও এর একটি পলিটিক্যাল কালার আছে। স্বৈরাচারকে সরিয়ে এই সরকার এসেছে।

 

এক্সপেরিমেন্টের দিক থেকে সরকারের এক বছর ভালোই কেটেছে দাবি করে শফিকুল বলেন, গত এক বছরে যে অর্জন, তা ছিল এমিজিং। অর্থনীতি বিধ্বস্ত। রাজনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। সে পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। এখন অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে। রিজার্ভ পরিস্থিতি ভালো। রপ্তানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর শফিকুল আলম বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন তাদের কাজ শুরু করেছে। প্রশাসন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সরকারের চেষ্টা থাকবে সবচেয়ে ভালো একটি নির্বাচন উপহার দেওয়া।