Image description

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই বিপ্লবে চিকিৎসকদের একটি পক্ষ চিকিৎসা প্রদান থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি বাধা দিলেও বড় অংশই জীবন ও চাকরি হারানোর ঝুঁকি নিয়েই আহতদের চিকিৎসা দিয়েছেন। এজন্য জুলাই সনদে চিকিৎসকদের অবদানের স্বীকৃতি দাবি জানিয়েছেন তিনি।

 

সোমবার (৪ জুলাই) রাজধানীর পরীবাগে শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন হলে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) কর্তৃক আয়োজিত “জুলাই বিপ্লবে চিকিৎসকদের ভূমিকা” শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

এনডিএফ’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা.সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো.তাহের।

 

জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠতে শুরু করে। চারদিকে যখন আহত, নিহতের খবর আসছে, দলের সভায় আমরা মেডিকেল টিম গঠন করি। এর মধ্যেই আমাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শুরু থেকেই এনডিএফ নেতাকর্মীরা আহতদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়েছে। নিঃস্বার্থভাবে তারা নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা মনে করি, এনডিএফসহ বিপ্লবে অবদান রাখা সাহসী সব চিকিৎসকের কথা জুলাই সনদে থাকতে হবে।

 

তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেক সময় চিকিৎসকেরা আক্রান্ত হয়েছেন। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শহীদ হয়েছেন। কাজেই তাদের ভূমিকাল মূল্যায়ন করতে হবে।

 

বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া থেকে বিরত থাকা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ যারা চিকিৎসক হয়েও চরম ক্রান্তিকালে আহতদের চিকিৎসা সেবা না দিয়ে উল্টো বাধা দিয়েছেন, তারাও ফ্যাসিবাদের দোসর। এদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা না হলে নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্ন আমরা দেখছি তা পূরণ হবেনা। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, তবে তাদের সুযোগ দেওয়া হবেনা। এ সময় এনডিএফকে ডাক্তারদের প্রকৃত প্রতিনিধি হওয়ার আহ্বান জানান এই জামায়াত নেতা।’

 

এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চিকিৎসকদের একটি পক্ষ জীবন ও চাকরির ঝুঁকি নিয়ে যেমন আহতদের চিকিৎসা দিয়েছে, অন্যদিকে আরেকটি পক্ষ স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। তারা মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এগুলো ডকুমেন্টস আকারে থাকতে হবে। বিপ্লবে শুধু চিকিৎসা দেওয়ার জন্যই চিকিৎসকেরা এগিয়ে আসেননি, বিবেকের তাড়নায়, জাতির ক্রান্তির কথা মাথায় রেখে ভূমিকা রেখেছেন।’

 

তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো কোনো রাজনৈতিক দল জুলাইকে খাটো করে দেখতে চান। জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের অস্তিত্ব, এটি আমাদের টিকে থাকার লড়াই। তাই জুলাই সনদকে আইনী ভিত্তি দিতে হবে। সে অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে, কেউ যাতে এটি পরিবর্তন করতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। জুল্ই যোদ্ধাদের জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করেই রাজনীতি করা উচিত বলেও মন্তব্য করেন দলটির এই নেতা।