ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সংস্কার প্রশ্নে ভিন্ন চিন্তা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা। শনিবার (১১ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে জুলাই মাসের একটি অভ্যুত্থানের ভিডিও শেয়ার করে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী ও আমলারা এখনো আগের মতোই আছে। সংস্কারের বিষয়ে ঐক্যমত্য নেই। ভিন্নমতের কারণ এটা নয় যে, কী বিধান যুক্ত করলে সংস্কার আরো টেকসই হবে। বরং সংস্কার হলে ক্ষমতার ভাগাভাগিতে নিজের অবস্থান কতটা নড়বড়ে হয়ে পড়বে, সেটাই আসল চিন্তা।’
জুলাই গণভ্যুত্থানে আহতরা এখনো সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেনি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘অথচ যারা এদের হাত, পা ও চোখ কেড়ে নিয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের পথ খোঁজা হচ্ছে! যে চাঁদাবাজি, লুটপাট ও হানাহানির বিরুদ্ধে মানুষ বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই ভয়াবহ সময় ফিরে আসতে পারে এমন আশঙ্কা শুনছি অনেকের কাছ থেকে। অভ্যুত্থানের মাত্র পাঁচ মাস পরেই এই বাস্তবতা আহতদের জন্য কতটা বেদনাদায়ক, তা ওনাদের সঙ্গে কথা বললেই জানবেন বলে উল্লেখ করেন তাসনিম জারা।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিপ্লবের পরেই এমন পরীক্ষার সময় আসে। চেকোস্লোভাকিয়ার ভেলভেট রেভল্যুশনের পর প্রশাসনের পুরনো কাঠামো ধরে রাখার চেষ্টায় সংকট তৈরি হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্য অবসানের পর বিভাজনের বীজ মুছতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। হান্টিংটন দেখিয়েছেন যে বিপ্লবের প্রথম বিজয়ের পর যদি সুশাসনের শক্ত ভিত্তি তৈরি না হয়, তাহলে পুরনো স্বার্থান্বেষী মহল নতুন চেহারায় ফিরে আসে। তাই এখন সময় নিজেদেরকে সুসংগঠিত করার।’
বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তাসনিম জারা আরো বলেন, ‘যে অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও বিশ্বাসে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তা বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’
সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত না থামার আহ্বান জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা।