
দেশে এখন পর্যন্ত যারা আইনমন্ত্রী হয়েছিলেন তারা সকলেই আইনজীবী থেকে হয়েছিলেন কিন্তু এরপরও তারা বিচার বিভাগের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করে গেছেন। বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ মামলার শুনানিতে এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
রাষ্ট্রীয় পদমর্যাক্রম শুনানিতে যখন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানি করেন তখন আপিল বিভাগ বলেন, আইনমন্ত্রী থেকে ফিরে এসে পরদিন আবার আমাদের বলে মাই লর্ড, এটা একটু শুনে দেন।
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী বলেন, সময় এসেছে এসব চেঞ্জ করার। সরকারি আমলারা ৬০ বছর বয়সে অবসরে যান এরপর বার কাউন্সিলে পরীক্ষা দিয়ে আইনজীবী হয়ে যান। কেন এটা করতে হবে? কই আমরা তো যাই না তাদের ওখানে। যা বলি মন থেকে বলি। আপনারা এগুলো ঠিক করেন।
এর আগে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।