Image description
‘আওয়ামী লীগ আসছে’ ১০-১২ ফেব্রুয়ারি ভোটের লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার

দেশের ১২ কোটি ভোটার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রমজানের আগে নির্বাচনের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। জানা গেছে, আগামী বছরের ১০-১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট করার লক্ষ্য নিয়েই এগুচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নানা মহলে আলোচনা আগামী ৫ আগস্ট নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন ইসি প্রস্তুত, নির্দেশনা পেলেই নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

নির্বাচন কমিশন যেমন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোটের টার্গেট করে প্রস্তুতি নিচ্ছে; তেমনি ভোট গ্রহণ নির্বিঘœ করতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করছে। নির্বাচনে দায়িত্বপালনে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় করা হচ্ছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে দেয়া হবে নির্বাচন বিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন নির্বাচনী হাওয়া বইছে; তখন সুকৌশলে নির্বাচন ঠেকিয়ে রাখতে নানামুখি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একদিকে ‘দেশে নির্বাচনের পবিবেশ নেই’ এমন দাবিকে যৌক্তিক করতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে ‘পতিত আওয়ামী লীগ ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ৫ আগস্ট তারা মাঠে নামবে’ এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাড়াটে ব্লগার, ইউটিউবার, কন্টেইন ক্রিয়েটারদের ‘আওয়ামী লীগ প্রতিশোধ নিতে মাঠে নামবে’, ‘শেখ হাসিনা আসছেন’ এমন ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রচারণার আগুনে ঘি ঢালছে। এমনকি কিছু ধর্মবর্ণহীন বুদ্ধিজীবী এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সুবিধাভোগী গণমাধ্যমে এসব প্রচারণা চালানো হচ্ছে। হঠাৎ করে তথাকথিত মৌলবাদ উত্থান শব্দের ব্যবহার এবং আওয়ামী লীগের দালাল বুদ্ধিজীবীদের ভারতকে খুশি করতে করা তথাকথিত মৌলবাদী পরিসংখ্যান সুকৌশলে প্রচার করা হচ্ছে। ইঙ্গো মার্কিন শক্তি মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গি ইত্যাদি শব্দ ব্যবহারে অভ্যস্ত।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুটি বৃহৎ সমাবেশের পর ভারত বাংলাদেশে ‘মৌলবাদ উত্থান’ প্রচার করে ব্যান্ডিংয়ের কৌশল নিয়েছে। কিন্তু সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই। এখানো কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে কার্যক্রম চালাতে দেব না। সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার জিরো টলারেন্স’।

সূত্রের দাবি যারা পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে মাঠ গরম করছে। বিশাল সমাবেশ করে বিশ্বাবাসীকে ‘ইসলামী শক্তির উত্থান’ দেখানোর অজুহাতে যাতে পশ্চিমাদেশ ও ভারত ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী’ তকমা প্রচারের সুযোগ পায় তারাই কার্যত ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে থাকা মানুষকে ভয় দেখানোর লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের গুন্ডাবাহিনী মাঠে নামবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয় অন্তর্বর্তী সরকারের ভিতরের কিছু ব্যক্তি যেমন ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে নির্বাচন পেছানোর ফন্দিফিকির করছেন; তেমন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এমন ব্যক্তিদের পরিবারের কর্তা বুদ্ধিজীবীও এ সরকারের নির্বাচন করার মুরোদ নেই’ ‘নির্বাচন হতে পারে না’ এমন অপপ্রচার চালাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের গত ২৮ জুলাই এক বিবৃতিতে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠজনরাই এখন এই সরকারের অধীন নির্বাচন দেয়ার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সরকারের ঘনিষ্ঠরাই বলছেন, এই সরকারের মধ্যেই আরেকটা সরকার আছে। সরকার ঘনিষ্ঠরাই বলছেন, এই সরকারের নির্বাচন দেয়ার সক্ষমতা নেই। তারাই বলছেন বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম শুরুর পর হঠাৎ করে প্রচলিত পদ্ধতির নির্বাচনের বিরোধিতা করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (পিআর) নির্বাচনে দাবি তোলা হয়। জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি এই দাবিতে সোচ্চার হয়। বিএনপিসহ কিছু দল এই দাবির বিরোধিতা করে সরাসরি জনগণের ভোটে এমপি নির্বাচনের দাবিতে অটল থাকে। কিন্তু পতিত আওয়ামী লীগকে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে কেন সংসদে ফিরে আনতে চায় এ নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। কারণ নানাপন্থায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা এবং অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করে ব্যর্থ ভারত এখন নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে আগামী সংসদে নিতে চায়। কারণ হাসিনা এবং তার মন্ত্রী-এমপিরা দেশ থেকে পালালেও সারাদেশে দলটি কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ভোটার রয়ে গেছে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন হলে দলটির কর্মী সমর্থকদের ভোটে প্রায় অর্ধশত জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। তাছাড়া বিগত বিগত নব্বই দশকে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের একসঙ্গে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আবার হাসিনার আওয়ামী লীগ বিগত ১৫ বছর বিএনপিসহ কোনো দলকে মাঠে নামতে দেয়নি এবং ২০১৮ সালে বিএনপিসহ সব দল নির্বাচনে অংশ নিলেও ইসলামী আন্দোলন ছাড়া কোনো দলের প্রার্থীকে প্রচারণায় নামতে দেয়নি। দু’-তিন বছর আগেও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বরিশাল সিটির কর্পোরেশনের ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী হাতপাখা পোস্টারে ‘আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী’ লিখে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা কার্যকর করা গেলে আওয়ামী লীগ পর্দার আড়াল থেকে নির্বাচনে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনকে সমর্থন করলে বিএনপিকে ঠেকানো সম্ভব। দিল্লির এমন নীল নকশায় পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি উঠে এবং নির্বাচনের আগে সময় পেতে নির্বাচন পেছানোর জোড়ালো দাবি তোলে। ‘নির্বাচনের পরিবেশ নেই’ এমন ধোঁয়া তোলা হয়। এমনকি মুখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেও ভিতরে ভিতরে এমন নীল নকশায় মিশে যায় এনসিপি। ফলে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবণতি করতে ‘মব জাস্টিস কালচার’ শুরু করা হয়। উপদেষ্টা পরিষদের একাধিক সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন এমন কর্মকর্তারা নির্বাচন পেছানোর কৌশল করেন। এই দলগুলোর পক্ষ্যে অবস্থান নিয়ে কিছু গণমাধ্যম আওয়ামী লীগ ফিরে এসে বিশৃংখলা সৃষ্টি করবে এমন গুজব তুলে ‘শিয়াল এলো রে শিয়াল এলো রে’ প্রচার করছে। তারা পলাতক আওয়ামী লীগের নেতারা সংগঠিত হচ্ছে, ট্রেনিং নিচ্ছে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমন্বয়কদের প্রয়োজনে তাদের কাছে টাকা পাঠানো হচ্ছে। হুন্ডির মাধ্যমে ভারত থেকে অর্থ আসছে। দেশে অবস্থান করা তুলনামূলক কম বিতর্কিত নেতাদের মাধ্যমে টাকা সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রচার করা হচ্ছে। বাস্তবে আওয়ামী লীগ ইচ্ছা করলেই কি দেশে ফিরে আসাতে পারবে? গতকালও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাসহ জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতাদের বড় অংশের বিচার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, আমার মনে হয় ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীও এত জঘন্য অপরাধ করেনি। জুলাই হত্যাযজ্ঞে লাশ পুড়িয়ে ফেলা, আহতদের গুলি করে মেরে ফেলা, নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা ’৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে এমন হয়নি। এদের বিচার হচ্ছে। এই যখন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের অবস্থা তখন আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে? এমন প্রচারণায় অনেকটা ত্যাক্ত-বিরক্ত হয়ে গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘পতিত শক্তি গ-গোল লাগিয়ে নির্বাচনের আয়োজনকে ভ-ুল করারা চেষ্টা করছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে কোনো ষড়যন্ত্র করেই গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। এই অপচেষ্টাকে প্রতিহত করতে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অভ্যুত্থানের সব শক্তি মিলে একটি সুন্দর নির্বাচন করতে না পারলে এই মস্তবড় সুযোগ আমাদের হাতছাড়া হয়ে যাবে।’

পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে পর্দার আড়ালে নির্বাচন পেছানোর এনসিপির দাবির সঙ্গে সুর মেলালেও জামায়াত প্রায় ৩শ’ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের গত সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার পর বলেছেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে কোনো আপত্তি নেই। নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতি আমাদের আছে। কিন্তু নানা ষড়যন্ত্র দেখছি। কারণ এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ব্যাপারে সরকার তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’ জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গত সোমবার জামালপুরে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘অনেকেই বলেন এবং প্রপাগা-া ছাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এনসিপি নাকি নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। তাদের বলছি আপনাদের চেয়ে আমরাই বেশি নির্বাচন দাবি করি। অথচ গণঅভ্যুত্থান না হলে আপনারা নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না।’

নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই নির্বাচন বিরোধী অপপ্রচার বাড়ছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিজের জীবন রক্ষা করতে শেখ হাসিনা গোষ্ঠীসহ পালিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা, সাবেক মন্ত্রী-এমপি এমনকি তৃতীয়-চতুর্থ সারির নেতারা ভারতে পালিয়েছে। তারা এখন দেশে ফিরে এসে রাজপথ দখল করবে? সে শক্তি এবং সাহস তাদের নেই। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা দিল্লি পালানোর পর ভারত কয়েকবার বাংলাদেশে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। সেনা অভ্যুত্থান, জুডিশিয়াল ক্যু, সচিবালয় ঘেড়াও, সংখ্যালঘু নির্যাতন, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা, পাহাড়ে অশান্তিসহ অনেক অপকা- করেছে এবং শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে একের পর এক হুংকার দিচ্ছে। কিন্তু প্রতিটি অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে দেশের ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোরকে সঙ্গে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার। আসন্ন নির্বাচন বানচালে ৫ আগস্ট কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সারাদেশে মাঠে নামবে আর বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী আঙ্গুল চুষবে? আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনা সেনা-পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবি এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হাতে অন্ত্র তুলে দিয়ে মাফিয়া শাসন কায়েম করেছিল। তখন পুলিশ-ছাত্রলীগের যৌথ আক্রমণ মোকাবিলা করেছে বিএনপিসহ আন্দোলনরত দলগুলো। তখন বিএনপির নেতারা আওয়ামী লীগের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছিল, পুলিশ রেখে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ রাস্তায় নামুকÑ বিএনপির কাছে একদিনও টিকতে পারবে না। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তখন পুলিশ ছাড়া বিএনপির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে পারেনি। বিএনপির উপর জুলুম-নির্যাতন যা কিছু করেছে পুলিশ-ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ যৌথ ভাবে। এখন পুলিশ ওদের সঙ্গে নেই। আবার বিএনপির নেতাকর্মীদের পুলিশভীতি নেই। এখন আইন-শৃংখলা বাহিনী ছাড়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ রাজপথে নেমে বিশৃংখলা সৃষ্টি করবে এমন প্রচারণা অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়। শুধু কি বিএনপি; অন্যান্য দলগুলো আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।

সূত্রের দাবি বাংলাদেশে বিশৃংখলা ঠেকানোর স্বক্ষমতা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নেই। তারা নিজেরাই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলছেন। নেতাকর্মী ও সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের বিপদে ফেলে ছেলে-মেয়ে- বোনসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশে পালানোয় হাসিনার উপর বিক্ষুব্ধ তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতারা। তারা হাসিনার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছেন। পাশাপাশি বেশির ভাগ নেতাই আওয়ামী লীগ থেকে দূরে সরে গেছেন। তারপরও ‘মরা লাশ টেনে তোলার মতো’ আওয়ামী লীগ আসছে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত দিল্লির এজেন্ডা পিআর পদ্ধতির নির্বাচন দাবি জিইয়ে রাখতে নির্বাচনে পেছানো জন্য এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে দেশের রাজনীতিতে ‘মরালাশ’ আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী এমপি দূরের কথা জামায়াতের মীর কাশেম আলীর মতো ফাঁসির রশি গলায় ঝুলতে শেখ হাসিনাও ফিরে আসবে না। নিরাপদ দূরত্বে থেকে হম্বিতম্বি কার্যত লোক দেখানো। আর সেটাকে পুঁজি করে ভারতের এজেন্ডা আওয়ামী লীগকে সংসদে ফিরে আনতে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনকারীরা প্রচারণা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ নাশকতা করতে ফিরে আসবে।

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আগামী রমজানের আগে নির্বাচনের আয়োজনের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। সেনাবাহিনীও চায় ওই সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে ব্যারাকে ফিরে যেতে। সেনাপ্রধান একাধিকবার এ নিয়ে বক্তব্য দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন। নির্বাচন বিলম্বিত করতে নানামুখি প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, নির্বাচন কেন্দ্রিক অপতথ্য-অপপ্রচার রোধে ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠন করা হবে। এখানে দ্রুততার সঙ্গে অপতথ্যগুলো তুলে ধরা হবে। কয়েক দিন আগে পুলিশের যে কমান্ড সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছেÑ প্রধান উপদেষ্টা সেখানে একটি মিডিয়া সেন্টার বসাবেন। এ ছাড়াও নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রায় ৬০ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।