
দুদকের করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামিন মেলেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবুল বারকাতের। বুধবার সকালে তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত।
আবুল বারকাত জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের একটি মামলার আসামি তিনি। এ মামলায় জামিন শুনানির জন্য সকালে তাঁকে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে হাজির করা হয়।
সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে আবুল বারকাতকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বেলা ১১টা ৭ মিনিটে আদালতে তোলা হয় তাঁকে। আদালতের কাঠগড়ায় একটি বেঞ্চে বসেন তিনি। কাঠগড়ায় তাঁকে বেশ চিন্তিত দেখা যায়।
আদালতে আবুল বারকাতের পক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহিনুর ইসলাম। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে ঋণ আবেদন করে এননটেক্স গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সুপ্রভা স্পিনিং মিলস। পরে তাদের আবেদনটি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জনতা ব্যাংকের বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন মেনে সুপ্রভা স্পিনিং মিলসকে ঋণ মঞ্জুর করা হয়। এখানে আবুল বারকাত দায়িত্বে অবহেলা করেননি। তিনি কোনো নীতিমালাও ভঙ্গ করেননি।
শাহিনুর ইসলাম আরও বলেন, এর আগে একই বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করে কোনো দুর্নীতি হয়নি মর্মে ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে। এখন একই বিষয়ে নতুন করে মামলা করার বিষয়টি দ্বিচারিতা ছাড়া কিছুই না। তাই দুদক আবুল বারকাতের বিরুদ্ধে যেসব এলিগেশন (অভিযোগ) এনেছে, সেগুলোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।
জামিনের বিরোধিতা করে দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ওনার (বারকাত) কর্মচারীরা কোনো অপরাধ বা অনিয়ম করলে সে দায় তাকেই (বারকাত) নিতে হবে। অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরকেও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাই এ মামলায় আবুল বারকাতকে জামিন দেওয়ার ঘোর বিরোধিতা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আবুল বারকাতের জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত। একই সঙ্গে তিনদিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য মামলাটি সিএমএম আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারিতে আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এতে অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত পরস্পর যোগসাজশে জালজালিয়াতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছিলেন। আতিউর রহমান, তাঁর সহযোগী অন্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন অনৈতিক কৌশলে এই অর্থ আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ করা হয়।
গত ১০ জুলাই রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসা থেকে আবুল বারকাতকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।