
কোনো ধরনের বিজ্ঞপ্তি, যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষা ছাড়াই ৬৫ জন চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছিল রাজধানীর শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালনা বোর্ড। নিয়োগের সেই তালিকায় ছিল বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের বর্তমান ও সাবেক অন্তত ১২ জন নেতা, বর্তমান ও সাবেক দুই ছাত্রদল নেতার দুই স্ত্রী, বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) তিন নেতার তিন মেয়ে এবং ড্যাব নেতাদের অনুসারীরা।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি শুরু হলে তদন্ত শুরু করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শিশু হাসপাতালে অভিযান চালায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সমালোচনার মুখে অবশেষে রোববার (২০ জুলাই) সেই ৬৫ জন চিকিৎসকের নিয়োগ বাতিল করেছে শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখন সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে আবার চিকিৎসক নিয়োগ দেবে তারা।
তবে নিয়োগ বাতিল করলেও পার পাচ্ছে না শিশু হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ড। অনিয়মের ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছে তারা।
নিয়োগ বাতিল করা প্রসঙ্গে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুল হক জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতালের স্বার্থে অ্যাডহকে ছয় মাসের জন্য ৬৫ জনকে নিয়েছিলাম। এরপর পেপারে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কথা উঠেছে পেপারে না দিয়ে আগে কেন নিলাম। তাই বাতিল করে দিলাম। পেপারে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে দ্রুত নিয়ে নেব।
এর আগে গত ২৯ জুন শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ গোপনে ৬৫ চিকিৎসক নিয়োগ দেয়। বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে চিকিৎসক ও ছাত্রদের একটি পক্ষ মানববন্ধন করে। তাদের দাবি, এসব নিয়োগ বাতিল করে স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগ দিতে হবে।
সমালোচনার মুখে সংশ্লিষ্টদের কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছে তারা।
নিয়োগ নিয়ে বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন
কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, শিশু হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ড গত তিন মাসে তিনবারের বৈঠকে একই বিষয়ে বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। তারা গত ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ২২তম বোর্ড সভায় ৪৫ জন চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। এক মাস পর ১২ মে ২৩তম সভায় ফের সিদ্ধান্ত নেয়, যেহেতু সব আনুষ্ঠানিকতা মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অর্থাৎ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রদান, দরখাস্ত বাছাই, নির্বাচনী পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ সময়ের ব্যাপার তাই ‘অ্যাডহক’ ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। অর্থাৎ কোনো নিয়ম না মেনেই নিয়োগ হবে। তার পরের মাসে ২৮ জুন ফের একই বিষয়ে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয় ৪৫ জনের পরিবর্তে ৬৫ জন নিয়োগ দেওয়া হবে।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিশু হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ডসহ সবকিছুতেই ড্যাবের একচেটিয়া আধিপত্য। এমনকি পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. একেএম আজিজুল হকও ড্যাবের সাবেক সভাপতি। পরিচালক-উপপরিচালকসহ হাসপাতালটির নেতৃত্বস্থানীয় বেশিরভাগ পদেই আছেন ড্যাবের নেতারা।
ভাগবাটোয়ারার নিয়োগ
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, এই ৬৫ জন চিকিৎসকের নিয়োগটি ছিল ভাগবাটোয়ারার নিয়োগ। ড্যাবের নেতারা কারো সন্তান, কারো স্ত্রী বা কারো অনুসারীকে নিয়োগের জন্য এই ভাগবাটোয়ারায় লিপ্ত হন। সবাইকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে তালিকা ৪৫ জন থেকে বাড়িয়ে ৬৫ জন করেন।
নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের পুরো তালিকা নিয়ে অনুসন্ধান করেছে জাগো নিউজ। এতে দেখা গেছে, শিশু হাসপাতালের পরিচালকের বন্ধু ও ড্যাব নেতাদের মেয়ে, ছাত্রদলের নেতা ও তাদের স্ত্রীরা চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
নিয়োগ পেয়েছিলেন তিন ড্যাব নেতার মেয়ে
নিয়োগ তালিকার ১০ নম্বরে ছিল ডা. মাশকারা আক্তার পন্নির নাম। তিনি শিশু হাসপাতালের উপপরিচালক ও শাখা ড্যাবের সভাপতি ডা. আজহারুল ইসলামের মেয়ে। ৭ নম্বরে ছিলেন ডা. তুবা তুনাজ্জিনা। তিনি শিশু হাসপাতাল ড্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ডা. এমদাদুল হক শিমুলের মেয়ে। ১৮ নম্বরে ছিলেন ডা. রুবাইত মারজান। তিনি শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুল হকের বন্ধু ড্যাব নেতা ডা. মো. আব্দুর রউফের মেয়ে।
নিয়োগ পেয়েছিলেন ছাত্রদলের ১২ নেতা
নিয়োগ তালিকার ২ নম্বরে ছিল ডা. আসিফ হান্নানের নাম। তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের হোস্টেল কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। তালিকার ৩ নম্বরে নাম থাকা ডা. আতিকুর রহমান শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছেন। তিনি বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ইউনিট ছাত্রদলের সহ-সভাপতি। ১৭ নম্বরে নাম থাকা ডা. গোলাম রব্বানী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। ২৪ নম্বরে থাকা ডা. লাবিদ রহমান বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ইউনিট ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা।
তালিকার ২৫ নম্বরে নাম ছিল ডা. তৌফিক ইলাহী আহাদের। তিনি বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি। ২৬ নম্বরে নাম থাকা ডা. ওমর খৈয়াম আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছেন। তিনি বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ইউনিট ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ৩২ নম্বরে থাকা ডা. শাহেদুর রহমান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। ৪২ নম্বরে থাকা ডা. রেদওয়ান ফেরদৌস বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ইউনিট ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক এবং কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক।
নিয়োগ তালিকার ৪৩ নম্বরে নাম থাকা ডা. নাজমুল হাসান খান বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ইউনিট ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক এবং উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক। ৪৫ নম্বরে থাকা ডা. মো. মাহবুব শেখ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-স্বাস্থ্য সম্পাদক এবং বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক। তালিকার ৫৮ নম্বরে ছিল ডা. আবু শাহাদাত মোহাম্মদ নাজিমের নাম। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক। ৬১ নম্বরে নাম থাকা ডা. মোস্তাফিজুর কবির মমি বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক।
ছাত্রদল ও ড্যাব নেতাদের সঙ্গে কথা বলে নিয়োগপ্রাপ্তদের দলীয় পদ-পদবি জানা গেছে। নিয়োগ তালিকার ৩৭ নম্বরে নাম ছিল ডা. মো. ফিরোজ আলমের। তিনি ছয়-সাত আগে ছাত্রদলে কিছুদিন সক্রিয় ছিলেন। তারপর থেকে নিষ্ক্রিয় এবং কোনো পদ-পদবি নেই।
২৮ নম্বরে নাম থাকা ডা. ফয়সাল রায়হান ৫ আগস্টের আগে কখনো ছাত্রদল ও ড্যাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তবে ৫ আগস্টের পরে শিশু হাসপাতালে ড্যাবের কিছু কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়।
তিনজনের স্ত্রী, একজনের বোন নিয়োগ পেয়েছেন
শিশু হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে ছাত্রদলের ১২ নেতার পাশাপাশি দুই নেতার স্ত্রীও নিয়োগ পেয়েছিলেন। তারা হলেন তালিকার ৩৮ নম্বরে থাকা ডা. উম্মে বেনারজী সুলতানা লাকী ও ৪৭ নম্বরে থাকা ডা. শায়লা ইয়াসমীন তুনকা। এর মধ্যে লাকী পাশেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইমরানের স্ত্রী। শায়লা ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান ফারুকের স্ত্রী।
তালিকার ১৬ নম্বরে নাম ছিল ডা. শায়ন্তী রহমানের। তিনি আল্ট্রাসাউন্ড একাডেমি অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (ইউরাইব) মালিক নাজমুল হকের স্ত্রী।
তালিকার ১ নম্বরে ছিল ডা. তামান্না রহমান ইতির নাম। তিনি শিশু হাসপাতালের পাশেই থাকা জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনের বোন।
নিয়োগ পাওয়া বাকিদের কোনো দলীয় পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তাদের বেশিরভাগই ড্যাবের যুগ্ম মহাসচিব ডা. হারুনর রশীদ রাকিব, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা ড্যাবের সাবেক সভাপতি ডা. খাইরুল ইসলাম, শিশু হাসপাতাল শাখা ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. এম এ কামাল এবং বিএনপির স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামের অনুসারী।
ড্যাব নেতা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ডের সদস্য ডা. এম এ কামাল সম্প্রতি ড্যাবের এক সভায় প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সবাই ড্যাবের লোক।’
‘রাজনীতি করে কী পেলাম?’
শিশু হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ড্যাবের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একজনের জবাব দিয়ে হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হক চৌধুরী রানা লেখেন, ‘তোমাদের গ্রুপের তিনজন সিনিয়র লিডার ও সম্মানিত একজন প্রফেসরের মেয়ে ও আরেকজন সম্মানিত প্রফেসরের সুপারিশে মোট ৫ জন নারী চিকিৎসককে শিশু হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ড নিয়োগ দিয়েছিলো। যা কিনা টোটাল ১৯ জন নারী চিকিৎসক এর মধ্যে এই ৫ জন নারী চিকিৎসক তোমাদেরই কারো সুপারিশকৃত এবং কারো মেয়ে। আর আমাদের শিশু হাসপাতাল ড্যাব প্রেসিডেন্ট এবং ডেপুটি ডিরেক্টর আজহার ভাই এর মেয়ে, ২ ভাইস প্রেসিডেন্ট শিমুল ভাই ও রউফ ভাই এর মেয়ে (এই রউফ ভাই ময়মনসিংহ মেডিকেলে আমাদের ডিরেক্টর মাহবুবুল হক স্যার-ডোনার স্যার-রফিকুল ইসলাম বাচ্চু স্যার এর ব্যাচমেট)। এই ৩ জন মেয়ে আমাদেরই সন্তান, তাদেরকে চাকুরী দেয়া কি আমাদের পরিচালনা বোর্ডের ভুল হয়েছে? আমাদের সন্তানদের চাকরি যদি নাই হয় শিশু হাসপাতালে, তাহলে সারাজীবন আমরা রাজনীতি করে কী পেলাম?’
‘কোথায় লেখা আছে সন্তানাদি নেওয়া যাবে না?’
নিয়োগ বাতিলের আগে চিকিৎসক নিয়োগের বিষয়ে শিশু হাসপাতালের উপপরিচালক ও শাখা ড্যাবের সভাপতি ডা. আজহারুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জাগো নিউজ। তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটি তদন্ত করে গেছে। বিষয়টি এখন মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।’
নিজের সন্তান নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘সমস্যা কী? সে তো ডাক্তার। কোথায় লেখা আছে সন্তানাদি নেওয়া যাবে না?’
নিয়ম না মানার কারণে যদি নিয়োগ বাতিল হয়, তাতে আপনার সন্তানসহ ৬৫ চিকিৎসক বিব্রত হবেন না? এটার জন্য দায়ী কে? নিয়ম মেনে দিলে নিয়োগ দিলে ভালো হতো না?
জবাবে ডা. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ত্রুটি পাইলে বাতিল করবে। আমরা সংশোধন করে আবার নিবো। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমরা নিছি। আমাদের কোনো ত্রুটি নেই। এখানে দলীয় পরিচয় দেখা হয়নি। শিশু হাসপাতালে ট্রেনিং করেছে, মেধাসম্পন্ন, তাদের আমরা নিয়েছি। বাইরের কাউকে নেওয়া হয়নি। এটা শিশু হাসপাতালের নিয়ম।’
কাউকে ফেভার করলেও নিয়মসিদ্ধ হতে হবে: ড্যাব সভাপতি
ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই নিয়োগে আমি কোনো সুপারিশ করিনি। আমরা চাই, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে আমাদের সঙ্গে ছিল, তাদের চাকরি হোক। কিন্তু এটা একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে না দিলে তো পরের সরকার এসে বের করে দিবে। আমি যদি ফেভারও করি, সেটা হতে হবে নিয়মসিদ্ধ। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে, নিয়োগ পরীক্ষা এবং ভাইভার মাধ্যমে যদি হতো, ভালো হতো। আমি যদি চাই কাউকে ফেভার করবো, এরমধ্যেও তো করা যায়।’
ডা. হারুন আল রশীদ বলেন, ‘আমার কাছে খুব খারাপ লাগছে নিয়োগপ্রাপ্ত এই ছেলে-মেয়েগুলোর জন্য। ওরা তো আমার সন্তানের চাইতেও ছোটো। তারা একটা অনিশ্চয়তায় পড়ে গেলো। কবে চাকরি হবে, কী হবে? আদৌ চাকরিটা পাবে কিনা?’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, ‘শিশু হাসপাতালে নিয়োগ তো বাতিল হবেই। মূল দোষী পরিচালনা বোর্ড। তারা সন্তান, স্বজন ও দলীয় কর্মী নিয়োগ দিতে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ভাগাভাগিতে গেছেন। ইচ্ছে মতো নিয়ম করে এবং দফায় দফায় গঠনতন্ত্র পরিবর্তন ও প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র দিয়েই চালানোর দায়ে ভেঙ্গে যেতে পারে শিশু হাসপাতালের পরিচালনা বোর্ড।’
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’