Image description
চট্টগ্রাম বন্দর

চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল আলোচিত নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন পর পরিবর্তন এসেছে। গতকাল থেকে ছয় মাসের জন্য দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনী পরিচালিত চিটাগং ড্রাই ডক লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে বিদায় নিল প্রায় দেড় দশক ধরে পরিচালনার দায়িত্বে থাকা দেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বন্দর সূত্র জানায়, গত ৬ জুলাই সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তাদের সঙ্গে চুক্তি আর নবায়ন করা হবে না। নৌবাহিনীর মাধ্যমে ছয় মাস টার্মিনালটির কাজ চালানো হবে। সেই অনুযায়ী, চিটাগং ড্রাই ডক গতকাল থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। তারা ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথডে কাজ চালিয়ে যাবে। ড্রাই ডক মূলত জাহাজ মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। এনসিটিতে পাঁচটি জেটি রয়েছে। এর মধ্যে চারটিতে সমুদ্রগ্রামী জাহাজ এবং একটিতে অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী জাহাজ ভিড়তে পারে। এখানে রয়েছে অত্যাধুনিক গ্যান্ট্রি ক্রেন, যা দিয়ে কম সময়ে অনেক বেশি কনটেইনার জাহাজে ওঠানো-নামানো যায়। চট্টগ্রাম বন্দর প্রতি বছর ৩০-৩২ লাখ টিইইউএস (২০ ফুট সমমান) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে থাকে। এর প্রায় ৪০-৪৪ শতাংশই হয় এনসিটিতে। ২০২৪ সালে এ টার্মিনালে হ্যান্ডলিং হয়েছে ১২ লাখ ৮১ হাজার টিইইউএস।

সূত্রমতে, বন্দরের অন্যতম বৃহৎ এ টার্মিনালে বিদেশি অপারেটর নিয়োগে আগ্রহী সরকার। এ ক্ষেত্রে দুবাইভিত্তিক বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডের নাম আলোচিত হচ্ছে। তবে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। তাদের দাবি, এনসিটি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ টার্মিনাল। এর জন্য বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই। বন্দরের নিজেরই সক্ষমতা রয়েছে এটি পরিচালনার। বিদেশি প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় থাকলে দেশের অর্থ বিদেশে চলে যাবে। আন্দোলনকারীরা বেসরকারি অপারেটরের পরিবর্তে বন্দরের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার দাবি জানান। সর্বশেষ গত ২৮ জুন বামপন্থি দল ও সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে লংমার্চ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বক্তারা বলেন, বন্দর ইজারা প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে ৫ আগস্টের পর কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।