
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিবের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন এক নারী। চিঠিতে ওই নারী উল্লেখ করেন, দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে তাঁর স্বামীকে মিথ্যা মামলায় পুলিশে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগরের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন।
আজ শনিবার নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বরাবর চিঠি দেন রিয়াজুল জান্নাত নামের ওই নারী। তিনি জামায়াতে ইসলামীর বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি নওশেদ জামালের স্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার নওশেদ জামালকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি থানা–পুলিশ। পুলিশ বলছে, নওশেদ জাতীয় শ্রমিক লীগ মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
চিঠিতে রিয়াজুল জান্নাত উল্লেখ করেন, নওশেদ জামাল চট্টগ্রামে মেঘনা পেট্রোলিয়াম এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি জামায়াতে ইসলামীর রুকন পাশাপাশি বাগমনিরাম দক্ষিণ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি।
চিঠিতে রিয়াজুল জান্নাত আরও উল্লেখ করেন, কিছুদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা পরিচয় দিয়ে নেজাম (নিজাম) উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তাঁর স্বামীর কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না পেয়ে তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হয়।
রিয়াজুল জান্নাত চিঠিতে একটি ভিডিওর কথা উল্লেখ করেন। ৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নিজাম উদ্দিনকে একটি কক্ষে বসে মুঠোফোনে কথা বলতে দেখা যায়। সেখানে একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই শোনেন, পুলিশ পারে না যে এমন কিছু নাই...। আমি বলতে চাচ্ছি, আপনার যার প্রতি ক্ষোভ, যাদের প্রতি ক্ষোভ, ওই তিনজনকে হলেই তো হইছে...আপনি যদি চান ওই তিনজনকে...করে দিতে পারবে ...দেশে থাকতে হবে, এটা মাথায় রাইখেন।’
এদিকে ফেসবুকে পোস্ট করে নিজাম উদ্দিন দাবি করেছেন তিনি চাঁদা চাননি। এ ছাড়া ওই নারীর উল্লিখিত ভিডিওটি পুরোনো। পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ভিডিওটি পতেঙ্গা থানা এলাকার, তা–ও চার থেকে পাঁচ মাস আগের। অথচ ওই ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন মাত্র দুই দিন আগে কোতোয়ালি থানার একটি মামলায়। ভিডিওতে কোথাও “টাকা দাবির” তথ্য না থাকার পরও এটিকে “চাঁদাবাজির” তকমার ঢাল হিসেবেই ব্যবহার করছে একটি চক্র।’
নিজাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি একটি ষড়যন্ত্র। আমি ওসিকে বলেছি, আওয়ামী লীগ–সংশ্লিষ্ট হলে নওশেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, আর না হয় ছেড়ে দিতে। কিন্তু তাঁরা এখন দাবি করছেন, আমি তাঁকে ধরিয়ে দিয়েছি।’
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাহমুদা বেগম বলেন, এ ধরনের অভিযোগ সাধারণত সংশ্লিষ্ট থানায় কিংবা উপকমিশনার কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অথবা পুলিশ কমিশনার এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নেবেন।