Image description

দেশে সবচেয়ে বেশি প্রতিস্থাপন হয় কিডনি। এরপরেই আছে চোখ ও লিভার। কিন্তু এসব প্রতিস্থাপনের হার খুবই কম। এক্ষেত্রে বড় বাধা আইন। এবার সেটি সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

বিশেষ শর্তে নিকট আত্মীয় ছাড়াও দান করা যাবে দেহাঙ্গ। সোয়াপ ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা ভিন্ন দুই গ্রহীতা ও তাদের আত্মীয়দের মধ্যে ব্লাড গ্রুপ মিলে গেলেই অঙ্গ দেয়া-নেয়া যাবে। অস্ত্রোপচার হতে হবে একই হাসপাতালে একই সময়ে। নিকট আত্মীয়ের মধ্যে ব্লাড গ্রুপ ম্যাচিং না হওয়া রোগী এবং তাদের আত্মীয়দের তথ্য নিয়ে করা হচ্ছে জাতীয় তথ্যভাণ্ডার।

স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, অঙ্গ বদলাবদলির পরিধিও বাড়ানো হচ্ছে। নিকট আত্মীয় হিসেবে ভাতিজা-ভাতিজি, ভাগ্নে-ভাগ্নী এবং সৎ ভাই-বোনকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। সেবার মান নিশ্চিতে অঙ্গ প্রতিস্থাপনে সরকারি হাসপাতালকেও অনুমোদন নিতে হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেছেন, যার লাগবে তার আত্মীয়র সঙ্গে আমার এক আত্মীয়র মিলে গেলে মানে তার আত্মীয়র সঙ্গে আমার আর আমার আত্মীয়র সঙ্গে তার মিললে ক্রস করে ফেলতে পারবো এবং এটা একই সময়ে হবে। দেখা গেলো যে ৩ জন ডোনার, কিন্তু তিনটার একাটাও মিলে নাই জিনোটাইপ। তো তিনজন ডোনার ডেটাবেজে আছে। তিনজনের যেকোনও একজনের সঙ্গে মিলে সে এক্সচেঞ্জ করতে পারে, তার সঙ্গে যার মিলে যাচ্ছে। মানে এতে সম্ভাবনা গড়ে বলা যায়, প্রায় ৫ থেকে ১০ শতাংশ ম্যাচিং বেড়ে যাবে।

দেশে সবচেয়ে বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন করা চিকিৎসক ডা. কামরুল ইসলাম বলছেন, আইন সহজ হলে অনেকে নতুন জীবন পাবেন।

স্বাধীনতা পদক পাওয়া এই চিকিৎসক বলেন, সব দেশেই এটা আছে, আমাদের দেশে ছিল না। আমরা এটা করতে পারতাম না। এখন আমরা করতে পারবো, ইনশআল্লাহ। এটার ফলে ধরেন ব্লাড গ্রুপের জন্য যে গ্রুপটা করতে পারছে না, তারা এখন অটোমেটিক করতে পারবেন।

ক্যাডাভেরিক ও মরণোত্তর অঙ্গদানের সংখ্যা কমে গেছে। উৎসাহ বাড়াতে মরণোত্তর অঙ্গদানের ঘোষণা দেয়া ব্যক্তিকে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানাবে সরকার। বিষয়গুলো নতুন সংশোধনীতে রাখা হয়েছে।

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, সমাজের মধ্যে আসলে মরণোত্তর দান বিষয়টাকে উৎসাহিত করা হবে, মরণোত্তর চক্ষু, কিডনি। কেউ যখন দান করেন উনি মারা গেলে উনার পরিবারকে দান করলে তিনি সম্মানটা পাইলেন না। অতএব কেউ যদি বাইরে দান করার উদাহরণটা যদি দেখান, উনি জীবিত অবস্থায় সম্মানিত হবেন।

অধ্যাপক কামরুল ইসলাম বললেন, আমরা যদি মৃত ব্যক্তি থেকে কিডনি কিংবা অন্যান্য সলিড অর্গান নিতে পারি তাহলে ট্রান্সপ্ল্যান্ট সহজ হয়। জীবিত ব্যক্তি থেকে নেয়া দরকার পড়ে না। উন্নত বিশ্বে ৬০, ৭০ শতাংশ; কোনও কোনও জায়গায় আরও বেশি মৃত ব্যক্তি থেকে ট্রান্সপ্ল্যান্ট মানে অঙ্গগুলো নিয়ে ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়।

উল্লেখ্য, দেশে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন পাস হয় ১৯৯৯ সালে। ২০১৮ সালে আনা হয় বেশ কিছু সংশোধনী।