Image description
 

জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান জানিয়েছেন, পূর্ব শত্রুতার কারণে ভাই ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে ওই নারী ও ফজর আলীকে নির্যাতন ও অশালীন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

 

কুমিল্লার মুরাদনগরের নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় শাহ পরান নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ফজর আলীর ছোট ভাই।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাতে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ এর আভিযানিক দল জেলার বুড়িচং থানার কাবিলা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। র‍্যাব জানিয়েছে, বড় ভাইয়ের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টি, নারীকে নির্যাতন ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে দেন শাহ পরাণ। 

গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগর থানার বাহেরচর গ্রামে বাবার বাড়িতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হন ভুক্তভোগী নারী। ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে একই গ্রামের শহিদের বড় ছেলে ফজর আলী কৌশলে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন। কিছুক্ষণ পর একই গ্রামের অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ অজ্ঞান ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি দরজা ভেঙ্গে ওই ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় ওই নারীর ওপর শারীরিক নির্যাতন ও তার আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে তারা। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।

 

র‍্যাব জানায়, গোয়েন্দা নজরদারি, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী শাহ পরানকে গ্রেফতার করা হয়।

 

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ঘটনার ১৫ দিন আগে ওই নারী তার স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বাহেরচর গ্রামের ফজর আলী ও ও তার ছোট ভাই শাহ পরান তাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিলেন। ঘটনার দুই মাস আগে তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধের জেরে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেই জেরে শালিসে জনসম্মুখে শাহ পরানকে চর-থাপ্পর মারেন ফজর আলী। এতে শাহ পরান ক্ষুব্ধ হন ও প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন।

শালিসের কিছু দিন পর ভুক্তভোগী নারীর মা সুদের বিনিময়ে ফজর আলী কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর মা-বাবা পাশের একটি মেলা দেখতে গেলে সুদের টাকা আদায়ের অজুহাতে ওই নারীর ঘরে ঢুকেন ফজর আলী।

এদিকে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক পৌনে ১২টার দিকে বাড়ির আশেপাশে অবস্থান করা শাহ পরান ও একই গ্রামের আবুল কালামসহ অনিক, আরিফ, সুমন, রমজান এবং অজ্ঞাত কয়েকজন দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় তারা ওই নারীকে শারীরিক নির্যাতন করে ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এরপরই শাহ পরানসহ অন্যরা আত্মগোপন করে।

জিজ্ঞাসাবাদে শাহ পরান জানিয়েছেন, পূর্ব শত্রুতার কারণে ভাই ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পিতভাবে ওই নারী ও ফজর আলীকে নির্যাতন ও অশালীন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

র‍্যাব জানিয়েছে, আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শাহ পরাণকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।