
Hafijur Rahman (হাফিজুর রহমান)
গতকাল পিনাকী ভট্টাচার্যের পিআর নিয়ে ভিডিওটা দেখলাম। উনার মূল যুক্তি হলো, বর্তমানে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী এবং মাস্তানীসহ নানাভাবে সমাজকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে উঠেছে, সেটাকে টিকিয়ে রাখতে হবে এবং এজন্য পিআর পদ্ধতিতে যাওয়া যাবে না। পিআরে গেলে এই বন্দোবস্ত ভেঙে যাবে এবং তাতে রাষ্ট্রও ভেঙে পড়বে।
তাই, বর্তমান সিস্টেমকেই ধরে রাখতে হবে যাতে হাসিনার মতোই যারা সামনে ক্ষমতায় আসবে তারা এই বন্দোবস্ত টিকিয়ে রাখতে পারে। অর্থাৎ মাস্তানী-চাঁদাবাজী-টেন্ডারবাজীর এই বন্দোবস্তে শুধু মানুষগুলোর পরিবর্তন হবে আগামী নির্বাচনে। তাতে দেশ টিকে থাকবে।
এটাই যদি হয় তবে জুলাইয়ের কী দরকার ছিল? আমরা এক হাসিনাকে বাদ দিয়ে আরেক হাসিনাকেই কী আনবো? খাওয়া-দাওয়া এবং তথাকথিত মাস্তানী নিয়ন্ত্রণ পুরোটা না পারলেও যদি কিছুটা হলেও ভাঙ্গতে না পারি তাহলে এই সংস্কারের দরকার কী?
পাশাপাশি, উনি যে বেলজিয়ামের উদাহরণ দিয়েছেন সেটাও বাংলাদেশের সঙ্গে কোনোভাবেই খাটে না। কারণ, সেখানে দুটি আলাদা জাতি রয়েছে এবং উনি নিজেই তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির কথা বলেছেন।
এটা আমাদের দেশের সিস্টেম হলে হয়তো এরকমই হতো। কারণ এরকম নজির নানা দেশে আছে। যদি জাতি কয়েকটা থাকে এবং জাতিসমূহের মাঝে বোঝাপড়া না থাকে তবে সিস্টেম এখানে খুব বেশী কাজ করতে পারে না।
তবে ইস্রায়েলের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আমি আগের পোস্টে বলেছি, পুরো দেশকে একটি আসন হিসেবে ধরে তিনশো তালিকার পিআর বাংলাদেশে তথা নিন্মকক্ষে কার্যকর হবে না। এজন্যই জেলাভিত্তিক পিআরের কথা বলছি।
জেলাভিত্তিক পিআর, যা অধিকাংশ দেশে রয়েছে, সেটা যদি বাস্তবায়িত হয় তবে উনিসহ অনেকেই এমপিদের স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব ও জনগণের কাছে না পাওয়ার যে আশঙ্কা করছেন তা আর থাকবে না।
সবমিলিয়ে কথা হলো, মাস্তানী-চাঁদাবাজীর যে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তার পরিবর্তনের জন্যই সংস্কারের এই বড় আয়োজন। নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কারের পাশাপাশি এখানে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান অবশ্যই জরুরি। এজন্য কাজ করতে হবে।