
বাংলাদেশের জাতীয় পরিসংখ্যান প্রণয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত একমাত্র সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের ভুল ও বিতর্কিত তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগে সমালোচিত হয়ে আসছে। আদমশুমারী, কৃষি উৎপাদন, কুরবানির পশুর সংখ্যা, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, এমনকি দারিদ্র্যের হার নির্ধারণ—প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ত্রুটি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ।
বিশ্লেষকদের মতে, পজিটিভ অর্থাৎ যেগুলো তাদের পক্ষে যায় সেগুলো তারা বাড়িয়ে দেখাচ্ছে। আর যেগুলো নেগেটিভ বা তাদের বিপক্ষে যায় সেগুলো তারা কমিয়ে দেখাচ্ছে। মাতৃমৃত্যু, বাল্য বিবাহের মতো বিষয়গুলো নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট ফেলে তাই কমিয়ে দেখানো অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়।
একটি দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ সূচক হলো জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার। সেখানেও ছিলো কারসাজির অভিযোগ। গত এক দশকে গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিলো ৬ দশমিক ৩ ভাগ। সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ১৫ দেখানো হয় ১৮-১৯ অর্থবছরে। ওই বছর ছিলো নির্বাচনী বছর। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সুপরিচিত নাম ড. জাহিদ হোসেন। দীর্ঘদিন তিনি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ। অর্থনীতির গতি প্রবৃদ্ধি, পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা ও জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে তার বিশ্লেষন বরাবরই আলোচিত। তার কাছে প্রশ্ন ছিলো গত এক দশকের জিডিপির বাস্তবতা নিয়ে।
ড. জাহিদ হোসেন বলেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে যে একটা হস্তক্ষেপ হচ্ছে এই ধারনাটা আমরা প্রথম পেয়েছিলাম ২০১৫ এর দিকে। অর্থবছর ১৬ এর যে প্রাথমিক হিসাব করেছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, সেটা যখন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলো তখন বিবিএসের ন্যাশনাল একাউন্টস এর লোকজনকে ডাকা হলো। এবং তাদের বকাঝকা করে বলা হলো হিসাবটা তো খুব কম মনে হচ্ছে এবং তারপর ওই হিসাবটা বদলিয়ে ৬ দশমিক ৫৫ করা হলো।