
ফেনীর সোনাগাজীতে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় চালের বস্তায় এখনো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামসহ স্লোগান লেখা রয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার (২৯ জুন) সোনাগাজীর নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র ও দুস্থ নারীদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। বিতরণকৃত প্রতিটি বস্তায় কালো কালি দিয়ে বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’।
নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, আমরা যা পেয়েছি তাই বিতরণ করেছি। চালের বস্তাগুলোতেই ওই স্লোগান লেখা ছিল। বিতরণকালে উপস্থিত অনেকেই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কিন্তু আমরা কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারিনি।
ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইউনিয়নের ১১৬ জন উপকারভোগীকে জুন মাসের বরাদ্দ অনুযায়ী চাল বিতরণ করা হয়েছে এবং বস্তায় ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ লেখা ছিল। তবে কেন এমন বস্তা এসেছে তা আমাদের জানা নেই।
সোনাগাজী উপজেলা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা মঞ্জুর আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, চালের বস্তাগুলো শেখ হাসিনার শাসনামলের। তখন গুদামে অনেক চালের বস্তা সংরক্ষিত ছিল। সেগুলো এখন বিতরণ করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।
সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবদিন বাবলু এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক এবং অবাঞ্ছনীয় একটি ঘটনা। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। একটি নিরপেক্ষ সরকারি সহায়তা কার্যক্রমে রাজনৈতিক স্লোগান লেখা চালের বস্তা ব্যবহার করা জনসচেতনতা ও প্রশাসনিক দায়বদ্ধতার পরিপন্থি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সরকারের ব্যর্থতা এবং স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন বলেন, খাদ্য গুদামে গত বছরের মজুত থাকা চালের বস্তাগুলোতে ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ স্লোগানটি লেখা ছিল। পুরোনো চাল মজুত থাকায় তা বিতরণ করতে হয়েছে। তবে বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর আমি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের বস্তা বিতরণের আগে বস্তায় থাকা রাজনৈতিক স্লোগানগুলো যেন কালো কালি বা রঙ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।