Image description

রাজধানীর উত্তরার একটি হাসপাতালে মারা যাওয়া বড় ভাই খোরশেদ আলমের লাশ দেখে দুই ভাগ্নেসহ বাসার দিকে ফিরছিলেন মোহাম্মদ জাভেদ আলম। যানবাহনের অপেক্ষায় তারা যখন আজমপুরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, পাথর বোঝাই একটি ট্রাক ইউ টার্ন নেওয়ার সময় তাদের উপর উঠে যায়।

তাতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয় বলে উত্তরা পূর্ব থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান।

নিহত তিনজনের মধ্যে জাভেদ আলম ব্যবসা করতেন। তার এক ভাগ্নে খাজা নাঈম একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতেন। আরেক ভাগ্নে ফাহিম উদ্দিন বিন আহমেদ রাজধানীর আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ছিলেন। নাঈম ও ফাহিম খালাতো ভাই, তারা জাভেদের দুই বোনের ছেলে।

নিহত নাঈমের প্রয়াত স্ত্রীর বাবা মুহম্মদ দেলোয়ার হোসেন এসব তথ্য জানান। নাঈমদের বাসা পুরান ঢাকায়।

ভোরবেলা পুলিশ তিনজনের লাশ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। নিহতদের স্বজন ও বন্ধুরাও সেখানে জড়ো হন। তাদের আহাজারিতে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

উত্তরা পূর্ব থানা এলাকায় ডোম হিসেবে কাজ করা মো. হানিফ ঘটনার পরপরই দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “রাত ৩টায় আমি গিয়া দেখি- দুইজন রাস্তার পাশে পইড়া রয়েছে। ওদের পেটের উপর দিয়ে ট্রাকের চাকা গেছে, ভিতরের অঙ্গ সব বাইর হয়ে গেছে। পাথর বোঝাই ট্রাকটা ইউ টার্ন নেওয়ার সময় এই তিনজনের উপরে তুইলা দেয়।

“ওইখানে রাস্তার পাশে রাখা একটা রিক্সা আর একটা সিএনজিরেও ভর্তা বানায়ে দিছে ট্রাক। এরপর গিয়ে ইলেকট্রিকের সুইচ বোর্ডে ধাক্কা মারছে। এদের আরেকজনের লাশ পাইছি কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে। ঘটনার পর লোকজন তারে হাসপাতালে আনছিল, কিন্তু সে বাঁচেনি।"

উত্তরা পূর্ব থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, ওই তিনজন যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদের উপর উঠে গেলে তিনজনই মারা যান।

নাঈমের শ্বশুর দেলোয়ার হোসেন বলেন, তার মেয়ে (নাঈমের স্ত্রী) তিন বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এই দম্পতির তিন বছর নয় মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। সন্তানটি নানা বাড়িতেই বড় হচ্ছে।