
ধরাবাঁধা নিয়মের মধ্যে থাকছে না ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম। এ লক্ষ্যে ভোটার তালিকা আইন-২০০৯-এ সংশোধনী এনে এ সংক্রান্ত খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনীর নাম হবে ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ’-২০২৫।
খসড়াটি ভেটিংয়ের জন্য আজ বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পরবর্তী সময়ে উপদেষ্টা মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন সাপেক্ষে অধ্যাদেশ জারি হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ গঠনের পর সংসদে অধ্যাদেশটি বিল আকারে পাস হলে আইনে পরিণত হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এই বিধান অনুমোদিত হলে আগামী বছর থেকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের সুবিধামতো সময়ে ভোটার হালনাগাদ কর্মসূচি গ্রহণ এবং খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে পারবে। ইসির এই ইতিবাচক উদ্যোগের ফলে ৪৩ লাখ তরুণ আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, এই সংশোধনীর মাধ্যমে প্রতিবছর ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশে বর্তমানে যে নিয়ম রয়েছে সেটিও বহাল থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী বছরের এপ্রিলে সংসদ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সংশোধনী পাস হলে সংসদ নির্বাচনের আগে যাদের বয়স ১৮ বছর হবে তারা ভোট দিতে পারবেন। এমনকি তফসিল ঘোষণার আগের দিন পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর হবে তারা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আমার দেশকে বলেন, তরুণ প্রজন্মকে ভোট প্রয়োগের সুযোগ দিতে চাইলে এবং চলতি বছরে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশের জন্য আইন সংশোধন করা লাগত ইসির। কমিশনের ইচ্ছা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা আগামী সংসদে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাক। তাই ভোটার তালিকা আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে। আইন সংশোধনী প্রস্তাব কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে দ্রুতই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এটা কার্যকর হলে ভোটার হালনাগাদ ধরাবাঁধা নিয়মের মধ্যে থাকবে না। পরবর্তী কমিশন ও তরুণ ভোটার উভয়ের জন্য সুবিধা হবে।
ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন অগ্রিম ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু করে। চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে গত ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৫৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৬ জন নতুন ভোটার নিবন্ধন হয়েছে, যা বিদ্যমান ভোটারের প্রায় ৫ শতাংশ। নতুনদের সিংহভাগই তরুণ। তাদের মধ্যে ৪৩ লাখ ২৭ হাজারই বাদ পড়া ভোটার। তাদের জন্ম ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তারও আগে এবং তারা সবাই ১৮ বছরের বেশি বয়সি। অর্থাৎ ভোটার হওয়ার যোগ্য। বাকিদের বয়স আগামী বছরের ১ জানুয়ারি ১৮ বছর পূর্ণ হবে। তালিকায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভোটার যুক্ত হচ্ছেন। একইভাবে ২১ লাখ ৭ হাজার মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করেছে ইসি।
ইসির তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ১২ কোটি ৩৭ লাখ ভোটার রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ তরুণ ভোটার, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছর। ভোটার তালিকা হালনাগাদের পর তরুণ ভোটারের এই সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে।