
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল) আমিনুল গণি টিটুকে সরিয়ে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তাকে স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল নিয়োগ দেওয়ার পর দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ‘শেখ হাসিনার ফাঁসি চাওয়া আইনজীবী এখন তার পক্ষে স্টেট ডিফেন্স’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যা পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সনেও ভিন্ন শিরোনামে প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পরবর্তী ধার্য তারিখে বুধবার (২৫ জুন) তার পরিবর্তে নতুন স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার নতুন স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল হয়েছেন আইনজীবী আমির হোসেন।
চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারকের বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত দেন।
দৈনিক খবরের কাগজে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়, “‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসকারী, খুনি, মিথ্যেবাদী শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই।’ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই স্ট্যাটাস দেন আইনজীবী আমিনুল গনি টিটু। অধস্তন আদালতের এই আইনজীবী সম্প্রতি শেখ হাসিনার পক্ষে স্টেট ডিফেন্স কাউন্সেল নিযুক্ত হয়েছেন।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আগামী ২৫ জুন এই মামলার শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য আছে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্যতম প্রসিকিউটর ও হাইকোর্টের আইনজীবী গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে আইনজীবী ওই স্ট্যাটাস দেওয়ার প্রায় সাড়ে ১০ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে অনেকে এতে কমেন্ট করছেন। গত বৃহস্পতিবার তাকে শেখ হাসিনার পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়ার পর Delwar Hossain নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে কমেন্টের ঘরে লেখা হয়, ‘স্যার আপনি নাকি শেখ হাসিনার পক্ষের আইনজীবী? এখন কী করবেন তাহলে?’ Nizam Uddin Khan Zahin নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে কমেন্ট করা হয়েছে, ‘ওরে, ইনি আবার হাসিনার আইনজীবী?’ মো. ইমরান মনির নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে কমেন্ট করা হয়েছে, ‘এই হচ্ছে পক্ষের আইনজীবীর অবস্থা’।
একই দিন আরেক স্ট্যাটাসে আমিনুল গনি টিটু লিখেছিলেন, ‘কথা বলছি স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে। দেশ আজ মুক্ত দেশ আজ স্বাধীন। সাইকোপ্যাথ ফ্যাসিস্ট হাসিনা গংকে পরাজিত করেছে অকুতোভয় তরুণ ছাত্র এবং ১৫ বছর ধরে নির্যাতিত কথা বলতে না পারা মানুষ । যারা ভুলে গিয়েছিল তারা দেশের নাগরিক না ক্রীতদাস। বিডিআর পিলখানার হত্যা থেকে আজ পর্যন্ত যত গুম এবং হত্যা করেছেন এই ঠাণ্ডা মাথার খুনি, যত সম্পদ পাচার করেছেন, যেভাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিচারাদালত অনুগত রেখে যা ইচ্ছা তাই করেছেন, সব স্বেচ্ছাচারী অপরাধের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আমরা এই খুনি গং-এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে চাই।’
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’- এমন একটি অডিওর বক্তব্য শেখ হাসিনার উল্লেখ করে তিনিসহ দুজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার এই অভিযোগ আনা হয় ট্রাইব্যুনালে।