
নোয়াখালী সোনাইমুড়ীতে নিজ ঘরে বৃদ্ধা নারী সিতারা বেগমকে (৭০) জবাই করে হত্যার ঘটনার ২০ ঘণ্টার মধ্যে ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন করে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, এর মধ্যে নবী নামে এক আসামি ভিকটিমকে হত্যার পর তার জানাজায়ও অংশ নেয়।
শনিবার (২১ জুন) ভোর রাতের দিকে জেলার বেগমগঞ্জের দুর্গাপূর ও সোনাইমড়ুীর বজরা বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের ওসমান আলী হাজী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বেগমগঞ্জের দুর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামের কামলা বাড়ির রুহুল আমিনের ছেলে মোরশেদ আলম ওরফে মুন্সি (৩২) ও কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার বিনয়নগর গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির মৃত নুর নবী খোকনের ছেলে মো. মাহফুজুন নবী সুজন (৩৩)।
নিহত সিতারা বেগম (৭০) একই এলাকার মৃত মোফাজ্জল হকের স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তানের জননী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোন এক সময়ে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের ওসমান আলী হাজী বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে বিধবা নারী সিতারা বেগমকে জবাই করে হত্যা করে চোরেরা। পরে শনিবার ভোর রাতের দিকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপূর এলাকা থেকে ক্লুলেস হত্যার ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত আসামি মোরশেদ আলম ওরফে মুন্সিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সাভারে গয়নার কারিগরকে গাছে বেঁধে হত্যা
এরপর তার ভাষ্যমতে তার বসতঘরের শয়নকক্ষ থেকে ভিকটিম সিতারা বেগমের ব্যবহৃত একটি বাটন মোবাইল ফোন, কয়েকটি প্রিন্ট শাড়ী, জামাকাপড় ও ১টি সাউন্ড বক্স উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোর রাতের দিকে সোনাইমুড়ীর বজরা বাজার এলাকা থেকে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত প্রধান আসামি সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে ঘটনাস্থল ও ধৃত আসামির হেফাজত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় দা, একটি স্ক্রু ড্রাইভার, একটি এনড্রয়েড ফোন এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত সিতারা তার এক ছেলের সঙ্গে সোনাইমুড়ী পৌরসভা এলাকায় বসবাস করতেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে তিনি বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নিজ ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বাড়ির লোকজন তার কোনো সাড়া-শব্দ না পাওয়ায় তার ঘরে যান এবং ভেতরে সিতারার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ঘটনা শুনে লোকজন গিয়ে দেখে টিনশেড ঘরের সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে সিতারা বেগমকে হত্যা করা হয়।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, চোরকে চিনে ফেলায় ওই নারীকে জবাই করে হত্যা করা হয়। আসামিদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনার প্রধান আসামি সুজন ঘটনায় জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে। আসামিদের নোয়াখালী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।