
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সবচেয়ে পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ ছাত্রাবাস ‘লতিফ হল’-এ ছাদ খসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ছাত্রাবাসের চতুর্থ তলার ৪০৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ছাদের বড় একটি অংশ কক্ষটির এক শিক্ষার্থীর বিছানার ওপর ভেঙে পড়ে।
ঘটনার সময় সামিউল ইসলাম নামে ওই শিক্ষার্থী কক্ষে থাকলেও সৌভাগ্যক্রমে তিনি বিছানায় না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান। তবে ছাদের ধ্বংসাবশেষে তার পা ও ঘাড়ে আঘাত লাগে বলে জানা গেছে। আহত অবস্থায় তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ছাত্রাবাসটির অন্যান্য কক্ষেও ফাটল, স্যাঁতসেঁতে দেয়াল ও প্লাস্টার খসে পড়ার মতো নানা সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বারবার লিখিত ও মৌখিকভাবে হল প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
শিক্ষার্থীদের জানান, পুরো লতিফ ছাত্রাবাসেরই অবস্থা জীর্ণ। চতুর্থ তলার প্রতিটি কক্ষেই ছাদে ফাটল ও খসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। লতিফ ছাত্রাবাস দ্রুত সংস্কার না হলে এটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত। পাশাপাশি বুটেক্স ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকসের অধীনে থাকা শহীদ আজিজ হল ও কবি নজরুল ছাত্রাবাস ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছেন তারা।
ওই রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম বলেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে বিছানায় কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে পায়ে এবং ঘাড়ে আঘাত প্রাপ্ত হই।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও লতিফ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিয়াজ জানান, ‘শুধু ৪০৮ নম্বর রুম নয়, আমাদের পুরো তলায়ই ছাদের টুকরো খসে পড়ে। বৃষ্টির সময় ছাদ দিয়ে পানি ঢুকে রুম ভিজে যায়। এমনকি টয়লেটের পানিও রুমে ঢুকে পড়ে।’
হলটির প্রথম তলার এক শিক্ষার্থী তাসরিফ জানান, ‘পানির ব্যবস্থা এতটাই নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর যে বহু শিক্ষার্থী চর্মরোগে ভুগছেন। এই পানি দিয়ে স্নান বা খাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না।’
আরেক শিক্ষার্থী প্রতাব সাহা জানান, ‘মনিরুজ্জামান ছাত্রাবাস মূলত তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেখানে অবৈধভাবে শিক্ষকরা বসবাস করছেন। ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত হল যদি শিক্ষকদের দখলে চলে যায়, তাহলে আমরা কোথায় যাব?।’
ছাত্রাবাস সুপারদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা সংস্কারের বাজেটের অভাবে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। লতিফ হলের সহকারী হোস্টেল সুপার মো. সোহেল বলেন, ‘আমাদের হাতে কোনো বাজেট নেই। এমনকি ছাত্রদের দেওয়া টাকায় বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করাও সম্ভব হয় না।’