
নওগাঁয় চকউলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে প্রায় ১১ মাস ধরে অনুপস্থিত কলেজটির অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। উপস্থিত না থেকেও নিয়মিত পাচ্ছেন বেতন-ভাতা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন কলেজটির শিক্ষক ও কর্মচারীরা।
জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে চকউলী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজে আসেন না প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। তিনি ২০০২ সালের ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদানের পর থেকেই ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও ইচ্ছেমতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা, নিয়োগ বাণিজ্যসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন তিনি।
অধ্যক্ষের এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাই কেউ তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
এদিকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী। তবে শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত পরিপত্র অনুযায়ী কাউকে জোর করে পদত্যাগ করানো যাবে একটি নোটিশ জারি হলেও ‘চকউলী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের’ অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১১ মাস ধরে আসেন না।
কলেজে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত নিচ্ছেন বেতন-ভাতা। দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয় বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। কলেজটি পরিচালনায় সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চকউলী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীরা বলেন, ‘অধ্যক্ষ প্রায় ১১ মাস ধরে কলেজে আসেন না, তবে বেতন পাচ্ছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি পরিস্থিতির শিকার। গত ৫ আগস্ট ছাত্র অভ্যুত্থানের পর একটি কুচক্রী মহল অসৎ উদ্দেশ্যে আমাকে পদত্যাগের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। পরবর্তীতে আমি তাদের অনৈতিক দাবি মেনে না নিয়ে দ্বিমত পোষণ করায় তারা আমাকে প্রতিষ্ঠানে যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বেশকিছু দিন যাবৎ ছুটিতে আছি। বর্তমানে আমি রাজশাহীর বাসায় অবস্থান করছি। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পরিপত্র অনুযায়ী ইএফটির মাধ্যমে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছি।’
এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুল লতিফ জানান, সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় জারিকৃত পরিপত্র অনুযায়ী কাউকে জোর করে পদত্যাগ করানো যাবে না। তবে ৫ আগস্টের পর এত দীর্ঘ সময় ছুটিতে থাকার বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও ইএফটির মাধ্যমে নিয়মিত ভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলনের বিষয়ে কোনোকিছু করনীয় নেই বলে জানান তিনি।