
রাজধানীতে খুন, ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনা বেড়েই চলেছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের টানা সাঁড়াশি অভিযান সত্ত্বেও অপরাধ দমন করা যাচ্ছে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত রাজধানীতে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৯৫টি। একই সময়ে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ১৮৪টি।
যদিও পুলিশ বলছে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে, বাস্তবচিত্র ভিন্ন—রাস্তাঘাটে জনমনে শঙ্কা আর আতঙ্ক বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচেষ্টা থাকলেও তা এখনও দৃশ্যমান ও কার্যকর নয়।
১৮ মে মগবাজারে এক যুবককে কুপিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয় একদল দুর্বৃত্ত। একই কায়দায় ২৪ মে পল্লবী মেট্রো স্টেশনের নিচে ঘটে ছিনতাইয়ের ঘটনা। পল্লবী ও দক্ষিণখানে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে চারটি খুনের ঘটনা ঘটে।
২৫ মে মধ্যরাতে মধ্যবাড্ডায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান সাধনকে। তদন্তে উঠে এসেছে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত। সিসিটিভি ফুটেজে হামলাকারীদের চেহারা স্পষ্ট দেখা গেলেও এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও গ্রেফতার হয়নি কেউ।
এরপর ২৭ মে মিরপুরে দিনের আলোয় মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর সহকারীর কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। তারা প্রথমে ফাঁকা গুলি ছোড়ে, এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে টাকা লুট করে পালিয়ে যায়। এখনও অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
ডিএমপির মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, "মানুষের জীবন সংশ্লিষ্ট অপরাধগুলো মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।"
তবে সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক মনে করেন, “মাঠ পর্যায়ে বাহিনীগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি রয়েছে। অপরাধীরা সেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার মতো কোনো সংগঠিত পরিকল্পনা আছে কি না, সেই বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারির ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।”
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলছেন, এ ধারা অব্যাহত থাকলে ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকায় অপরাধের মাত্রা আরও বাড়তে পারে।
শীর্ষনিউজ